২৭ নভেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:০৩

ঋণ ও বিলখেলাপিদের ছাড় নেই

রিটার্নিং অফিসারদের সতর্ক থাকার তাগিদ

আশরাফুল ইসলাম

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঋণ ও বিলখেলাপিরা কোনো ক্রমে যাতে পার পেতে না পারেন সেজন্য রিটার্নিং অফিসারদের সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার। একই সাথে কোনো বিলখেলাপির নামে বকেয়া বিল পরিশোধের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে দাবি উত্থাপন করা হলে কেবল সেই ক্ষেত্রে বিলখেলাপিদের বিষয়ে আমলে নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে রিটার্নিং অফিসারদের এ নির্দেশনা সংবলিত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
এ দিকে, ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদেরও এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই নির্দেশনায় ঋণখেলাপ সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনকে দেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে ঋণখেলাপিদের অযোগ্য ঘোষণা করতে এমন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ।

জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আগামীকাল ২৮ নভেম্বর। ওই দিন প্রার্থীরা রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে তাদের মনোনয়পত্র দাখিল করবেন। রিটার্নিং অফিসাররা মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং ৩০ ডিসেম্বর ভোট হবে। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসাররা। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোনো ঋণখেলাপি বা বিলখেলাপি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এ কারণে কোনো প্রার্থী ঋণখেলাপি বা বিলখেলাপি হলে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
মনোনয়নপত্র বাছাইকালে কোনো ঋণখেলাপি বা করখেলাপি যাতে কোনোক্রমেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন সেজন্য রিটার্নিং অফিসারদের সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ জন্য কোনো প্রার্থী ঋণখেলাপি কি না সে বিষয়ে তথ্য দেবে তফসিলি ব্যাংকগুলো। আর বিলখেলাপি হলে সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলো।
ব্যাংক থেকে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির তথ্য দেয়া হলে সেটি সরাসরি আমলে নিতে বলা হয়েছে। আর সেবাসংস্থাগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে বকেয়া বিলের বিষয়ে নোটিশ না দেবে ততক্ষণ সেবাসংস্থার আপত্তি আমলে না নিতে বলা হয়েছে। কোনো প্রার্থীর বকেয়া বিলের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সেবাসংস্থাগুলো নোটিশ দিলেই কেবল সেটি আমলে নিতে রিটার্নিং অফিসারদের বলা হয়েছে। এ বিষয়ে গত ২৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন থেকে এক পরিপত্র জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এ দিকে, ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের উদ্দেশেও এক সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ। গত ২৫ নভেম্বর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে জারিকৃত সার্কুলারে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২ এর ১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে ঋণখেলাপিরা জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ার যোগ্য হবেন না। এ কারণে তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারেন না। এ পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ব্যক্তিদের ঋণখেলাপ সংক্রান্ত তথ্য রিটার্নিং অফিসারদের কাছে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রধান নির্বাহীদেরকে সরবরাহ করবেন। ২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলকারীদের নাম, পিতা-মাতা বা স্বামীর নাম এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য তথ্যসংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বউদ্যোগে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারকে ঋণখেলাপ সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারিকৃত সার্কুলার ওই দিনই সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডির কাছে পাঠানো হয়েছে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/367671