মাহমুদুর রহমান; সালমা আক্তার; শাহ এহসান হাবীব; আবুল কালাম আজাদ
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, শনিবার, ৯:৪০

সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে

বাড়ছেবিশেষজ্ঞদের মতে পৈশাচিক ঘটনাবলি সামাজিক অধঃপতনের চিত্র

মাত্র পৌনে এক ভরি স্বর্ণের জন্য হত্যা করা হলো পাঁচ ও ছয় বছর বয়সী দু’টি শিশুকে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই শিশুহত্যার রহস্য উদঘাটনের মধ্যেই নরসিংদীতে ছয়, আট ও দশ বছর বয়সী তিন ভাই-বোনকে হত্যা করল আপন ভাই। অশান্তির জ্বালা মেটাতে মা অবুঝ শিশুকে শাড়ির সাথে বেঁধে ঝাঁপ দিচ্ছেন নদীতে। একের পর এক মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটেই চলেছে। বিশেষ করে অসহায় শিশুদের ওপর দীর্ঘ দিন ধরে চলছে ভয়ঙ্কর নির্মমতার স্রোত। চলতি বছরের প্রথম দেড় মাসেই ৪৩টি শিশুহত্যার খবর প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন শিশু নিহত হয়েছে মা-বাবার হাতে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা প্রতিনিয়ত যেসব পৈশাচিক আর হৃদয়বিদারক ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছি তা আসলে সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। আমাদের অধঃপতন আর সামাজিক সঙ্কটের চিত্র। অনেক ক্ষেত্রেই সবার অজান্তে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অসাম্য বিস্তার লাভ করেছে ভয়াবহ আকারে। দীর্ঘকাল ধরে আমাদের সব চেষ্টা ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির মধ্যেই নিবদ্ধ রয়েছে। বস্তুগত উন্নতির দিকে দ্রুত ধাবমান একটি শ্রেণী। গণমাধ্যমের বদৌলতে সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র ভোগাকাক্সা। দ্রুত অধিক পাওয়ার জন্য মরিয়া সবাই। বাড়ছে বৈষম্য। নীতি-নৈতিকতা পদদলিত হচ্ছে পদে পদে। এর শিকার হচ্ছে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী। সমাজে চলতে গিয়ে নানা অনিয়ম, হয়রানি, বঞ্চনা আর শোষণের শিকার সাধারণ জনগোষ্ঠী। অনেকের মনে দানা বাঁধছে তীব্র ক্ষোভ, হতাশা। ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রিকসহ বহুমাত্রিক জটিল সম্পর্ক ও চাপে পিষ্ট হয়ে মানুষ বেপরোয়া হয়ে নির্মমতার পথ বেছে নিচ্ছে।

নগর থেকে শুরু করে নিবিড় পাড়াগাঁয়েও ছড়িয়ে পড়ছে মাদকের ছোবল। প্রযুক্তির হাত ধরে নিমেষে পাল্টে যাচ্ছে সমাজ। অস্থির যুবসমাজ। সমাজে বাড়ছে নানামুখী অস্থিরতা। দ্রুত উধাও হয়ে যাচ্ছে নীতি আদর্শ এবং লালিত মূল্যবোধ। উচ্চশিক্ষা ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে কিন্তু প্রকৃত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ছাত্রদের বুকের ওপর দিয়ে হাঁটা; উত্তরায় তরুণ কিশোরদের ডিসকো বয়েজ, বিগবস গ্যাং স্টার গ্রুপের দ্বন্দ্বে ১৪ বছরের স্কুলছাত্র আদনান কবির নিহতের ঘটনায় দুশ্চিন্তায় অনেক মা-বাবা; ইন্টার্ন ডাক্তারকে সিস্টার বলে সম্বোধন করায় রোগীর আত্মীয়কে দল বেঁধে পেটানো, প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা থেকে শুরু করে সামান্য ঝগড়ার রেশ ধরে অহরহ স্বামী-স্ত্রী হত্যাসহ একের পর এক নারকীয় ঘটনার অবতারণা ঘটছে সমাজে।

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, আমরা প্রচণ্ড চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। এ চাপ জীবন সংগ্রামের চাপ। বাঁচার লড়াইয়ের চাপ। জীবন সংগ্রামের এই চাপ থেকে মুক্তির জন্য মানুষ অনেক সময় ভয়াবহ পথ বেছে নেয়।

গত কয়েক বছর ধরে পারিবারিক সামাজিক অবক্ষয়জনিত একের পর বীভৎস ঘটনার সাক্ষী হয়েছে দেশ। হত্যা, ধর্ষণ, ইভটিজিং ও আত্মহননের মিছিলে বেরিয়ে পড়ছে সমাজের এবং নৈতিকতার বিপর্যয় এবং অধঃপতনের ভয়ানক চিত্র।
সন্তান পুড়িয়ে মারছে বাবাকে। ৫০০ টাকার জন্য মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে খুন হচ্ছেন বাবা।

একের পর এক দেখা মিলছে মা-বাবার ঘাতক ঐশী আর মুগ্ধদের। আতঙ্কিত মা-বাবা। আবার অনেক সময় মা-বাবা তাদের গোপন পাপ ঢাকতে, সংসারের অশান্তির জের ধরে গলাটিপে হত্যা করছে অবুঝ শিশুসন্তান। আপন মা-বাবাই কখনো শিশুর মুখে বিষ ঢেলে দিচ্ছে, কখনো গলা টিপে হত্যা করছে, সন্তানসহ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিচ্ছে, কখনো বা বহুতল ভবন থেকে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। ডাস্টবিনে মিলছে নবজাতকের লাশ।

নিষ্ঠুরতার যেন শেষ নেই। ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং ধর্ষণ শেষে হত্যা ছড়িয়ে পড়ছে উদ্বেগজনক হারে। পাঁচ বছরের শিশুর দেহ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে সমাজে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া যৌন সন্ত্রাসের প্রভাবে। প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় রাস্তায় জনসম্মুখে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয় হত্যার জন্য। সমাজ, রাষ্ট্র এবং মানবিকতার পচনের চিত্র নিত্য নতুন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে হাজির হচ্ছে আমাদের সামনে।

একের পর এক জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে পিষ্ট সাধারণ আয়ের মানুষ। তাদের মধ্যে বিরাজ করছে নানামুখী ক্ষোভ আর অস্থিরতা। প্রায়ই এসব যন্ত্রণা ভয়াবহ রূপে প্রকাশ পাচ্ছে। প্রযুক্তি, মাদকের পাশাপাশি এখন শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান নানাবিধ নৈরাজ্যে সন্তান নিয়ে দিশেহারা মা-বাবারা। ঘনঘন পাবলিক পরীক্ষা, স্কুলের চাপ, কোচিং প্রাইভেটের দৌরাত্ম্য আর একের পর এক প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তীব্র হতাশা আর ক্ষোভ বিরাজ করছে কোটি কোটি শিক্ষার্থী আর তাদের অভিভাবকদের মধ্যে।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোশংকরবাটীর ভবানীপুর-ফতেপুর মহল্লার ছোট্ট দুই শিশু সুমাইয়া খাতুন (৭) ও মেহজাবিন আক্তার (৬) স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে বাইরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। তিন দিনের মাথায় ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইব্রাহীমের স্ত্রী লাকি আক্তারের (২৪) শোবার ঘরের খাটের নিচ থেকে সুমাইয়া ও মেহজাবিনের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে লাকি আক্তার জানান, স্বর্ণালঙ্কারের লোভে শিশু দু’টিকে খুন করেছেন তিনি। শিশু দু’টির কানে সোনার দুল এবং একজনের গলায় সোনার চেইন ছিল। তাদের হত্যার পর তিনি সেগুলো ২১ হাজার টাকায় এলাকার এক স্বর্ণকারের দোকানে বিক্রি করেছেন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে লাকি আক্তার জানান, বিভিন্নজনের কাছ থেকে চড়া সুদে নেয়া ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য শিশু সুমাইয়া ও মেহজাবিনের কানের দুল ও চেইন আত্মসাৎ করার জন্য তাদের শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবাড়ি গ্রামের পূর্ব পাড়ায় রুবেল মিয়া নামে ২৩ বছরের এক যুবক ঘরের মধ্যে শ্বাসরোধে খুন করেছে তার ছোট তিন ভাই-বোনকে। তারা হলো ইয়াসিন (১০), মরিয়ম (৮) ও মার্জিয়া (৬)। রাতে রুবেল তার বড় ভাই আতিকুর রহমানকেও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। তবে আতিকুর রহমানের চিৎকারে আশপাশের লোক ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। রুবেল বিবাহিত এবং সংসারের কাজকর্ম নিয়ে তার স্ত্রী ও মায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু এ কারণে রুবেল তার ছোট ভাই-বোনকে হত্যা করবে তা বিশ্বাস করতে পারছেন না রুবেলের মা-ও। হত্যার অন্য কোনো কারণও তারা অনুমান করতে পারছেন না। মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা শিশুহত্যা বিষয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, দিন দিন ক্রমবর্ধমান শিশুহত্যার ঘটনা প্রমাণ করে যে আমরা কতটা অমানবিক সমাজব্যবস্থায় বসবাস করছি। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর নানা অত্যাচার হচ্ছে, তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। অতি দ্রুত যদি আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন না করতে পারি তাহলে জাতিকে চরম মূল্য দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা যেভাবে এগোচ্ছি তাতে সহসা এ থেকে মুক্তির সম্ভাবনা নেই। দীর্ঘ দিন ধরে তারা আশঙ্কা করে আসছেন এ জাতীয় ঘটনা একের পর এক ঘটতে পারে এবং বাস্তবে সেটাই দেখা যাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালমা আক্তার বলেন, সমাজে ভোগবাদিতা ভয়াবহ আকারে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ভোগবাদিতা আর মানবিকতা একসাথে চলতে পারে না। আমরা ভীষণভাবে বস্তুবাদী হয়ে যাচ্ছি। মানুষের প্রতি মানুষের দায়বদ্ধতা ক্রমে বিলুপ্ত হচ্ছে। অনেক ভিডিওতে দেখা যায় সবার সামনে শিশুদের নির্যাতন করছে কিছু লোক। অন্যরা তাকিয়ে দেখছে। সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। এখন সবাই খুব রাতারাতি সব কিছু পেতে চায়। ফলে বাড়ছে প্রতিযোগিতা। তা ছাড়া আমাদের ওপর নানামুখী চাপ বাড়ছে। এ কারণে বাড়ছে অস্থিরতা এবং একের পর এক অমানবিক ঘটনা ঘটছে। অনেক ঘটনারই দ্রুত বিচার হচ্ছে না। দ্রুত বিচার করে অপরাধীকে শাস্তি দেয়া গেলে অপরাধ অনেক কমতো।

এ থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে অধ্যাপক সালমা আক্তার বলেন, পারিবারিক মূল্যবোধ চর্চা বাড়াতে হবে। ভালো শিক্ষা দিতে হবে সন্তানদের। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো আগে শিক্ষার যে মান ছিল তা এখন নেই। আমাদের ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ে নীতিনৈতিকতার যে শিক্ষা ছিল এখন তা নেই। অধিক পড়া চাপিয়ে দেয়া হয়েছে শিশুদের ওপর কিন্তু তাতে মানবিক মূল্যবোধ শেখার তেমন কিছু নেই। মা-বাবার একমাত্র চিন্তা সন্তান পরীক্ষায় কত নম্বর পেল কিন্তু তারা কতটা মানুষ হলো তা নিয়ে তাদের তেমন চিন্তা নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ এহ্সান হাবীব বলেন, যেসব ঘটনা দেখছি আর শুনছি তা সহ্য করার মতো নয়। কেন এ ধরনের ঘটনা একের পর এক ঘটে চলেছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অসম্ভব একটি চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সমাজ ও রাষ্ট্র এ চাপ দিচ্ছে। এ চাপ জীবনসংগ্রামের, বাঁচার লড়াইয়ের। রাষ্ট্র ক্রমাগতভাবে বলছে, আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু অন্তরালে রয়ে গেছে বড় ধরনের সমস্যা। বস্তুগত, প্রযুক্তিগত উন্নতির প্রতি যেভাবে জোর দেয়া হচ্ছে সেভাবে আমাদের নৈতিক ও মানবিক উন্নতির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে না। অন্যায়ের মাত্রা এমন পর্যায়ে গেছে যে, তা এখন আমাদের সমাজে খুবই সহনীয় হয়ে গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান নরসিংদীর ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের অনেকের মধ্যে মানসিক সমস্যা থাকে কিন্তু তা আগে থেকে চিহ্নিত করা হয় না। ফলে এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনার মধ্য দিয়ে তা প্রকাশ পায়। সমাজে একের পর এক অমানবিক ঘটনা বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের সুস্থ বিকাশের সুযোগ কমে গেছে। সামাজিক, রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে আমরা অনিরাপদ হয়ে গেছি। সর্বত্র অনিয়মের রাজত্ব চলছে। সবার প্রবণতা অন্যকে ঠকিয়ে লাভবান হওয়া। সর্বত্র যে লুটপাট, নৈরাজ্য চলছে তার প্রভাব পড়ছে বিভিন্নভাবে।

একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের নিয়ম শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। এক দিকে এক শ্রেণীর মানুষ লুটপাট করে রাতারাতি সবকিছুর মালিক হয়ে যাচ্ছে। অপর দিকে অনেক মানুষ নানা ক্ষেত্রে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত এবং শোষণ ও বৈষম্যের শিকার। তা ছাড়া যেভাবে বৈষয়কি উন্নতি ঘটছে সে তুলনায় আমাদের নৈতিক উন্নতি ঘটেনি। তা ছাড়া দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি করতে গিয়ে আমাদের সমাজে অনেক সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

সমাজ বিশ্লেষকদের মতে, মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া লুটপাট, ক্ষমতার অপব্যবহারের পাশাপাশি আমাদের সমাজে দ্রুত কিছু পরিবর্তন ঘটে গেছে যা আমাদের ধারণক্ষমতার সাথে মানানসই ছিল না। এক দিকে এক শ্রেণীর মানুষের রাতারাতি অর্থনৈতিক উন্নতি, দ্রুত প্রযুক্তির বিকাশ, আকাশ সংস্কৃতির জোয়ার, নগরায়ন; আবার এর বিপরীতে সমান তালে বাড়ছে শোষণ-বৈষম্য। যেভাবে বস্তুগত উন্নতির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে সে তুলনায় নৈতিক উন্নতির প্রতি গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে না। এসবের প্রতিক্রিয়া হিসেবে সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের নৈরাজ্য আর বিশৃঙ্খলা। মানুষ জড়িয়ে পড়ছে নানামুখী জটিল সম্পর্কে। অপর দিকে মানুষ নানা ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের ন্যায্য পাওনা ও অধিকার থেকে। ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রিক বহুমাত্রিক জটিল সম্পর্ক এবং চাপে পিষ্ট হয়ে মানুষ বেপরোয়া হয়ে নির্মমতার পথ বেছে নিচ্ছে রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন তথা অশ্লীলতা ও অবাধ যৌনতার বিস্তারসহ বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য, প্রতিহিংসা এবং নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা চলছেÑ তারই ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ আমরা দেখতে পাচ্ছি এখন।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/198592