১৯ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৩৫

‘মরছে নদী ধুকছে দেশ : নিঃশেষ হচ্ছে পরিবেশ’

আখতার হামিদ খান : ভূমিকা: নদীমাতৃক বাংলাদেশের জন্ম নদীর পানিতে বয়ে আনা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পলিকণা দিয়ে। লাখো বছরের প্রক্রিয়ায় পলি সঞ্চয় করে নদীই গড়ে তুলেছে ‘ব’ আকৃতির পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের প্রধান নদীগুলো তার যৌবন হারাচ্ছে, শাখা নদী, উপনদীগুলো মরে বিলীন হয়েছে। সরকারি তথ্যেই নদ-নদীর সংখ্যা ৭০০ থেকে ৪০৫-এ নেমেছে। বেসরকারি তথ্যে এ সংখ্যা আরো কম-২৩০। নদীর উজানে অন্য দেশের বাঁধ নির্মাণ, অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকান্ড আর দখল রাজত্ব নদীকে অঙ্গহানি করে তিলে তিলে মারছে। নদীর সঙ্গে মরছে নদীর ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশেও। কৃষিপ্রধান উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ দেখা দিয়েছে, সেচ চাহিদা মেটাতে হচ্ছে মাটির নিচের পানি তুলে। তাতে বিপদ আরো বাড়ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে, মাটির গুনাগুণ নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটছে। নদীভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা হারিয়ে যাচ্ছে, সস্তায় পণ্য পরিবহনের পথ রুদ্ধ হচ্ছে। নদীর মাছ হয়ে উঠছে অমূল্য পণ্য। নদীতে মাছ ধরা, নৌকায় নদী পারাপার করা জেলে-মাঝিদের জীবনধারা বাস্তব থেকে চিত্রশিল্প হয়ে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে।

প্রকৃতির আশীর্বাদ হিসেবে পাওয়া যে নদীর এত দান, সেই নদীর প্রাণ কেড়ে নিতে চলছে যেন প্রতিযোগিতা। স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশে নদ নদীর সংখ্যা ছিল সাত শরও বেশি, এখন তা ৪০৫টিতে নেমেছে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর তথ্যে নদীর সংখ্যা আরো কমে ২৩০ টিতে নেমেছে। ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত ‘মিজানুর রহমানের ত্রৈমাসক প্রত্রিকা’র নদীসংখ্যায় বাংলাদেশ নদীর সংখ্যা ২৬০ থেকে ২৭০ টি বলে উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ সাড়ে চার দশকে প্রায় পাঁচ শ’ নদী মরে গেছে, নদীপথের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ উভয়ই কমেছে। নদীর সঙ্গে কমছে নৌপথও।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রের এক হিসাবে দেখা গেছে, দেশে লঞ্চ, স্টিমার, কার্গো, ট্রলার, ফেরি, নৌকা এবং বার্জের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন মালামাল পরিবহন হয়। নৌপথে পরিবহন ব্যয় সড়কপথের চেয়ে অন্তত ২০ গুণ কম হয়। নদীর নাব্যত না থাকায় শীতকালে সড়কপথে পণ্য পরিবহন করতে হয়। এতে পরিবহন ব্যয় বাড়ছে, যা দেশে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে, শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়াচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সব নদ-নদীতে বছরে প্রায় এক হাজার ৪০০ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে আসা নদীগুলো বয়ে আনে প্রায় এক হাজার ৪০ বিলিয়ন ঘনমিটার। বাকি ৩৫০ বিলিয়ন ঘনমিটার পনি দেশের অভ্যন্তরে বৃষ্টিপাত থেকে আসে। বাংলাদেশে জন্য আশীর্বাদ এই বিপুল জলরাশির দক্ষ ও উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। ফলে নদীর পানির বড় অংশই ঢালে বয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ছে, কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ। তবে ২০০৯ সালের পর বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে নদী খননে অনেক প্রকল্প ও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের নদী মরে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ নদীকেন্দ্রিক অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন। পদ্মা ও যমুনার সংযোগকারী বড়াল নদের মুখে ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত স্লুইস গেট, ক্রস ড্যাম, বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল বড়ালের পানি ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন ও পানিপ্রবাহ বাড়ানো হবে, নৌপথ সম্প্রসারণ হবে।

পৃথিবী সৃষ্টির দুরূহ রহস্য : মহান ¯্রষ্টার সৃষ্টি জগতের দুরূহ রহস্য সম্পর্কে মানবজাতি তার সূচনালগ্ন থেকেই ধীরে ধীরে ভাবতে আরম্ভ করে এবং প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে লক্ষ লক্ষ বছর কাটিয়ে দেয়। তারপর জীবন ও জগতের অপরাপর রহস্যের আবরণ উন্মোচন করতে শুরু করে। জগৎ সৃষ্টির মূল উৎস পরমসত্তার সন্ধানে, অজানাকে জানা, না পাওয়াকে পাওয়া, না দেখাকে দেখার এক দুর্নিবার স্পৃহা মানবকুলের সকল সত্তাকে চঞ্চল করে তোলে। তাই তারা অনুমান ও আবিষ্কার মরতে শুরু করে যে, কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে এই মহাবিশ্বের আকাশ-বাতাস, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, তারকারাজি ইত্যাদি। কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে জগতের সু-উচ্চ পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর, বিস্তীর্ণ বৃক্ষরাজি এবং এর জীববৈচিত্র্য, সীমাহীন ধূসর মরুভূমি, সমুদ্রগামী তটিনীর বিচিত্র তরঙ্গ। এসব রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান চালিয়ে ‘পৃথিবী’ নামক সবুজ গ্রহটির সৃষ্টিরহস্য সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেন। যখন আমরা পরিচ্ছন্ন রাতে মুক্ত আকাশের দিকে তাকাই, তখন যে মহাবিশ্বকে দেখতে পাই, সেটির অধিকাংশই মূলত বিশাল মহাশূন্যের সাগর। সে সাগরের দ্বীপসমূহকে বলা হয় গ্যালাক্সি বা নক্ষত্রজগৎ। মহাকাশে অসংখ্য গ্যালাক্সি বা নক্ষত্রপুঞ্জ বিদ্যমান। গ্যালাক্সিগুলো পরস্পর থেকে ব্যাপক ব্যবধানে অবস্থিত। একটি গ্যালাক্সির বিপুলসংখ্যক তারকারাজি লক্ষ লক্ষ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। প্রতিটা নক্ষত্র একেকটি বিশাল গোলাকার তপ্ত গ্যাসপি-, অবিকল সূর্যের মত। যেসব তারকা বা নক্ষত্র আমরা পৃথিবী থেকে দেখতে পাচ্ছি সেগুলো আমাদের গ্যালাক্সির ভেতরে, যাকে আমরা ছায়াপথ বলে থাকি। কোন একটি গ্যালাক্সির ক্ষুদ্র অংশ হচ্ছে ছায়াপথ। একটি ছায়াপথে কোটি কোটি নক্ষত্রের অবস্থান। এই নক্ষত্রের মাঝে সূর্যেরও অবস্থান। কিন্তু কোত্থেকে এসবের আগমন সেটিই হচ্ছে আশ্চর্যের বিষয়। অধিকাংশ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যুক্তি দিয়ে এসবের প্রমাণ করেছেন যে, এসবের সূচনা হয়েছে প্রায় ১৫শ কোটি বছর আগে, অতি ক্ষুদ্র তপ্ত গোলাকার পি-াকারে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, এই গোলাকার পিন্ডে এক প্রকার মহাবিস্ফোরণ ঘটে, যাকে বলা হয় ইরম ইধহম, এতে গোলাকার পি- বেলুনের মত দ্রুত প্রসারিত হয়। এরকম বিস্ফোরিত একটি গ্যাসপি- থেকেই আমাদের এই পৃথিবী নামক সবুজ গ্রহটির সৃষ্টি। আর এই গ্রহের উপরিভাগ বা ভূ-পৃষ্ঠকে যেভাবে অনড় অবস্থায় অনুভব করি পৃথিবীর উপরিভাগ আসলে অত্যন্ত সুগঠিত ও সংগতিপূর্ণ।

পৃথিবীর জন্ম যখন যেভাবেই হোক না কেন, জন্মের সময় সূর্যের ন্যায় পৃথিবীও ছিল একটি জ্বলন্ত গ্যাসপি-। তারপর কোটি কোটি বছন যাবৎ বহু আবর্তন-বিবর্তনের মধ্য দিয়ে সে বাষ্পময় দেহ হতে পৃথিবী বর্তমান কঠিন অবস্থায় উপনীত হয়েছে। কালক্রমে সাধারণ নিয়মে তাপ বিকিরণের ফলে প্রথমে বাষ্পময় দেহের কিছু অংশ শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন উপাদানের তাপ বিকিরণের মাত্রা তথা হিমাঙ্ক ও ঘনাঙ্ক বিভিন্ন। সেজন্য এই তরল অবস্থায় পৃথিবীর উপাদানগুলোর মধ্যে স্থান বিনিময় হয়।
বৃহৎ মহাদেশের উৎপত্তি: বৃহৎ মহাদেশের উৎপত্তি সম্পর্কে ভূ-তত্ত্ববিদগণ একমত যে, পৃথিবীর সুপ্রাচীন যুগে এসব মহাদেশে একত্রে আবদ্ধ ছিল। ভূ-তাত্ত্বিক পরিবর্তন প্রাচীন মহাদেশসমূহকে যেমন ধ্বংস করেনি, তেমনি নতুন কোনো মহাদেশ সৃষ্টিও করেনি। শুধুমাত্র সুবিশাল স্থলভাগসমূহের মধ্যে গঠনগত পরিবর্তন সাধন করেছে।
মেসোযোইক মহাযুগ: এই যুগের শুরু হয়েছিল ২২ কোটি ৫০ লক্ষ বছর আগে যখন পৃথিবীর সমস্ত ভূখ- বিশাল সুপরিসর মহাদেশ হিসেবে একত্রে আবদ্ধ ছিল। তখন একে একত্রে বলা হত প্যাঙ্গিয়া। অতঃপর ভূ-খ-টি ক্রমশ ভেঙে সাগর পাখার সাহায্যে কোটি কোটি বছর ধরে ¯্রােতে ভাসতে ভাসতে দূরে সরে যায় এবং বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়।

জুরাসিক যুক: এ যুগের কার্যকাল ছিল ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ বছর থেকে ১৯ কোটি বছর আগে পর্যন্ত। এই সময়কার স্থলভাগের কিছুটা বিবর্তন ঘটে। এ সময় ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকা আলাদা হয়ে উত্তরে কিছুদূর সরে যায় এবং সাগর সৃষ্টি করে, তবে মাঝখানের দিকে সামান্য স্থল সংযোগ রয়েই যায়। এই উত্তর অংশকে বলা হত লাউরাশিয়া এবং এর অংশবিশেষকে বলা হত এ্যাঙ্গরাল্যান্ড যা উত্তর গোলার্ধের ভূখ-। অন্যদিকে অর্থাৎ, দক্ষিণের ভূ-খ- ছিল আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা নিয়ে গঠিত এদেরকে একত্রে বলা হত গন্ডোয়ানাল্যান্ড যা ছিল দক্ষিণ গোলার্ধের ভূ-খ-। অতি প্রাচীন ভূমি এই গন্ডোয়ানাল্যান্ডে ফাটল ধরে নতুন এক সাগরের সৃষ্টি হয় । এ সাগর এ্যান্টার্কটিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতবর্ষকে আলাদা করে। এদেরকে বলা হয় দক্ষিণ গন্ডোয়ানাল্যান্ড। উক্ত দক্ষিণ গন্ডোয়ানাল্যান্ডের মাঝখানে আর একটি সাগর প্রণালী ভারতবর্ষকে উত্তর দিকে ঠেলে আলাদা করে।
হিমালয় উত্থানের আগে তিব্বত সাগর এর অস্তিত্বকালীন সময় পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র ও সিন্ধু নদ উপমহাদেশে প্রবহমান ছিল। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল এই যে, আজকের যে সিন্ধু নদ দক্ষিণ-পশ্চিমে মুখ করে আরব সাগরে পতিত হচ্ছে, তা একদিন উত্তর-পূর্বে মুখ করে তিব্বত সাগরে পতিত হত। তেমনিভাবে যে ব্রহ্মপুত্র নদ প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়, সেটিও একদিন উত্তরমুখী হয়ে তিব্বত সাগরে পতিত হত। একই সময় মায়ানমারের ইরাবতী নদীও উত্তর-পশ্চিমমুখী হয়ে একই সাগরে পতিত হত।

বর্তমানে হিমবাহ কেবলমাত্র মেরু প্রদেশে এবং হিমালয় এর সু-উচ্চ পর্বতগাত্রে স্বল্পপরিসর স্থানে অবস্থান করছে। কিন্তু ৫০ লক্ষ বছর পূর্বে কোয়াটারনারী যুগের প্লেইস্টোসিন উপযুগে পৃথিবীর জলবায়ু অতি শীতল ও আর্দ্র থাকায় এই হিমবাহ উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও এ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের এক বিশাল অংশ আবৃত করে থাকত। পরে উত্তপ্ত হয়ে গলতে গলতে আকারে ক্ষুদ্র হয়ে বর্তমান সু-উচ্চ পর্বতগাত্রে ও উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থান করছে। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও সাইবেরিয়ার এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল অতীত হিমবাহের কার্যকালের স্বাক্ষর আজও বহন করছে।
রূপসী বাংলার পটভূমি : অবিরাম সৌন্দর্যে আঁকা নদীমাতৃক আমাদের এই বাংলাদেশ। ষড়ঋতুর দেশ। এক কালের হাজার নদীর দেশ। জোয়ার-ভাটার দেশ। সমভূমি আর সবুজ বন-বনানী ও পাহাড়-পর্বত ঘেরা রূপ-মাধুর্যে সমৃদ্ধ আমাদের প্রাণপ্রিয় এই মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
শত শত বছর ধরে বিভিন্ন সময় ব্রিটিশ বেনিয়াদের সীমাহীন অত্যাচার এবং বিভিন্ন শাসকদের অমানবিক আইন, শোষণ ও পরাধীনতার শৃংখল ছিন্ন করে সর্বশেষ এদেশের বীর সাহসী সন্তানেরা দীর্ঘ ন’মাস যুদ্ধ করে এক সাগর তাজা রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয়ের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে, আসন করে নেয় ‘বাংলাদেশ’ নামক ভূ-খ-টি। আর পৃথিবী পৃষ্ঠে ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদীবিধৌত স্বাধীন ও সার্বভৌম আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জন্ম।
বাংলাদেশে রয়েছে প্রায় ২০০ প্রজাতির জীবজন্তু। এদের মধ্যে সুন্দরবনের রাজকীয় বাঘ রয়েল বেঙ্গল টাইগার এবং পার্বত্য অঞ্চলের হাতি অন্যতম। এছাড়া সুন্দরবন ও পার্বত্য অঞ্চলে ছয় প্রজাতির হরিণসহ রয়েছে ১৫০ প্রজাতির সরীসৃপ। এদের মধ্যে সাগর ও নদীসহ বিভিন্ন স্থানে কচ্ছপ, কুমির, অজগর, গুইসাপ, গোখরা সাপ অন্যতম। এদেশে রয়েছে শত শত প্রজাতির পাখি ও মাছ। কেবল ৫২৫ প্রজাতিরই পাখি রয়েছে। এদের মধ্যে ৩৫০ প্রজাতির দেশীয় এবং বাকী ১৭৫ প্রজাতির অতিথি বা যাযাবর পাখি। সামুদ্রিক ও মিঠাপানির তথা স্বচ্ছ পানির মাছ রয়েছে প্রায় ২০০ প্রজাতির।
এ দেশটির ভৌগোলিক অবস্থান ২০০-৩র্৪ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৬০-৩র্৮ উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে এবং ৮৮০-০র্১ পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৯২০-৪র্১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এ দেশের মধ্যভাগ দিয়ে কর্ককক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে ফলে এদেশ ক্রান্তীয় অঞ্চলের অন্তর্গত।
বর্তমানে বাংলাদেশে ছোট-বড় সব মিলিয়ে ২৩০ থেকে ২৪০ টির মত নদ-নদী (সরকারি হিসেবে)। কিন্তু লেখকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে এখনো সারাদেশে প্রায় ৫শ’টির অধিক নদ-নদী রয়েছে। যা সপ্তম অধ্যায় অঞ্চলভিত্তিক পর্যায় ক্রমে তালিকা উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু ছড়া ও নালানদীও রয়েছে। আলোচ্য নদ-নদীর ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। এসব নদীর মূল উৎপত্তিস্থল প্রতিবেশী ভারত, নেপাল, চীন, ভুটান ও মায়ানমার (বার্মা) এর পার্বত্য অঞ্চল থেকে।

http://www.dailysangram.com/post/349936