১৯ জুন ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৩৬

বাজারে কাঁচা শাক-সবজির সংকট, দামও বাড়তি

ঈদ পরবর্তী রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সংকটের অজুহাতে মাছ, মাংসসহ সব ধরনের কাঁচা শাক-সবজির দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ কম হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তাদের মতে, ঈদের ছুটির কারণে শ্রমিক ও ট্রাকের সংকট। পাইকারি ব্যবসায়ীরাও সবজি ঢাকায় আনতে পারছেন না। ফলে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। বাজারে পণ্যভেদে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের অভিযোগ, কিছু অসৎ ব্যবসায়ী সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজারে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, করলা ৬৫ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, পটোল ৫৫ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও শসা ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সবজির বাজারেও ১০ টাকা বাড়িয়ে শাকের আটি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। পালং, পুই, লালা ও পাট শাক রোজার মাসের দাম থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে ১৫-২০ টাকা আটি বিক্রি করছেন।
কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, ঈদের ছুটির কারণে ঢাকায় সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ কমে গেছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম হওয়ায় দামও বেড়েছে। এছাড়া পাইকারি বাজারে এখন কাঁচামালের ঘাটতি আছে। আমরা বেশি দামে কিনছি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

অন্যদিকে সবজির মতো মাছ ও মাংসের বাজারও চড়া। রোজা শেষে মাছ ও মাংসের দাম কমার কথা থাকলেও উল্টো বেড়েছে। বাজরে রুই মাছ ৩২০ টাকা কেজি, কাতল মাছ ২৮০ টাকা কেজি, পাঙ্গাশ ১৪০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া ১৪০ টাকা কেজি চিংড়ি মাছ ৫৫০-১২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রোজার সময় বিক্রি হওয়া দাম থেকে ১০-১৫ টাকায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব মাছ। ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ জোড়া বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকায়।
মাছ ব্যবসায়ী শাকিল বলেন, আমরা এখন যে মাছ বিক্রি করছি তা আগের ফ্রিজিং করা। নতুন চলানের মাছ এখনো আসেনি, তাই দাম বেশি। এ ছাড়া মাংসের বাজারও রোজার মতো বাড়তি রয়েছে। বাজারে ব্রয়লার ১৮০ টাকা, কক প্রতি পিস ২২০ টাকা, গরুর মাংস ৫২০ টাকা ও খাসির মাংস আগের মতো ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ ৪৫০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা ছিল। বেড়েছে ডিমেরও দাম। প্রতি হালিতে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকায়।
বাজার করতে আসা ক্রেতা কামেস মিয়া বলেন, ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সরবরাহ কম হওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এখনো ঘরমুখো মানুষ ঢাকায় আসেনি। তাহলে সরবরাহ কম হয় কীভাবে? তারা নিজেরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অধিক মুনাফার আশায় দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

বাজারে চাল পিয়াজ ও রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭০ টাকা, আমদানি করা পিয়াজ ৩৫ টাকা, দেশি পিয়াজ ৪৫ টাকা, আমদানি করা রসুন ৮০ টাকা ও দেশি রসুন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরেক ক্রেতা বলেন, ঈদের আগে-পরে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ানো এখন ব্যবসায়ীদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। বাজারে পণ্য থাকলেও দাম বাড়ে, না থাকলেও দাম বাড়ে। এ বাড়তি দাম এখন কয়েক সপ্তাহ তারা চালাবে। এদিকে প্যাকেটজাত পোলাওয়ের চালে না বাড়লেও খোলা চালের দাম বেড়েছে। চিনিগুড়া পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহ আগেও কেজিতে দুই-চার টাকা কম ছিল দামে।

 

http://mzamin.com/article.php?mzamin=121894