৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বুধবার, ১০:০০

সেদিন মেয়রের ভাই মিন্টুও শটগান দিয়ে গুলি করেছিল

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গত বৃহস্পতিবার মেয়রের বাড়ির সামনে দু’পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা হালিমুল হক মিরুর পাশাপাশি তার ভাই হাবিবুল হক মিন্টুও শটগান থেকে গুলি করেছে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ এ প্রতিবেদকের সংগ্রহে রয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় ছাত্রলীগ নেতা বিজয় মাহমুদের সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে যখন মেয়রের বাড়ির সামনে আসে, তখন উভয় গ্রুপের মাঝখানে থেকে পুলিশ তাদের পিছু হটানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে বিজয়ের সমর্থকরা পিছু হটে যাবার সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মেয়রের সমর্থক বেশ কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়াকারীদের সর্ব পিছনের দিকে সাদা ফুল শার্ট ও নেভি ব্লু কালারের প্যান্ট পরে শটগান হাতে গুলি করতে করতে প্রতিপক্ষের দিকে এগিয়ে যায় মেয়রের ছোট ভাই মিন্টু। এরপরই মিন্টুকে উচ্চ স্বরে ডাকতে ডাকতে বাম হাতে শটগান নিয়ে পিছন পিছন ছুটে যান মেয়র। এর কিছুক্ষণ পরই কয়েকজনকে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক শিমুলকে ধরাধরি করে নিয়ে আসতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরই নিজের পরনের শার্টের ভিতরে শটগান রেখে বাম হাত দিয়ে সেটি ধরে বাড়ির সামনে ফিরে আসে মিন্টু। এর পরই একই রাস্তার বিপরীত দিকে থাকা প্রতিপক্ষ লোকজনকে ধাওয়া করার জন্য বেশ কয়েকজনকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। তাদের মাঝে মেয়রকেও বাম হাতে শটগান নিয়ে এগিয়ে যেতে দেখা যায়।
এ ঘটনার পরের দিনই মিন্টুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করলেও তার ব্যবহৃত শটগানটি এখনও উদ্ধার হয়নি। তবে মেয়রের ব্যবহৃত শটগান ও বেশ কিছু গুলি জব্দ করেছে পুলিশ। মিন্টুকে গ্রেপ্তারের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালত ১৩ই ফেব্রুয়ার রিমান্ড শুনানি দিন ধার্য করেছেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
এ মামলার প্রধান আসামি মেয়র হালিমুল হক মিরুকেও রোববার রাতে পুলিশ ঢাকার শ্যামলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে জেলহাজতে থাকা মেয়রের বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে গতকাল মঙ্গলবার আবেদনটি আমলে নিয়ে শাহজাদপুর উপজেলা আমলী আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হক ১৩ই ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেছেন বলে জানান মনিরুল।
ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, মেয়রের বাড়িতে হামলা ও উভয় গ্রুপের সংঘর্ষের সময় একাধিক ভিডিও চিত্র ও স্টিল ছবি আমরাও সংগ্রহ করেছি। সেখানে আরো কি কি ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সেগুলো উদ্ধারে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। তবে, এখনও মেয়রের শটগান ছাড়া অন্য কোনো অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, শুক্রবার সকালে আহত সাংবাদিক শিমুল নিহত হওয়ার পর রাতেই তার স্ত্রী নূরুন্নাহার একটি হত্যা মামলা করেন। শুরুতে থানার উপ-পরিদর্শক কমল দেবনাথকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হলেও পরের দিন তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে ওই মামলাটি থানার ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। উপ-পরিদর্শক কমল দেবনাথ জানান, মামলা দায়েরের পরে দিন শনিবার সকালে মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ঘটনার পরই মেয়র দাবি করেছিলেন, বাড়ি ঘেরাও করে ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় তিনি বাসার ভিতর থেকে তার নিজের ব্যবহৃত শটগান থেকে একটি গুলি ছুড়েছেন।
http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=52632&cat=3/%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0--%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%87-%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%93--%E0%A6%B6%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87--%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A6%BF