৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বুধবার, ১০:০০

কাদের আমরা নিরপেক্ষ বলব? সুশাসন

|| ইকতেদার আহমেদ ||

বাংলাদেশ সরকারসংক্রান্ত যেসব কর্ম চাকরি বা পদ রয়েছে তা অসামরিক ও সামরিক উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সরকারের কিছু কিছু পদ সাংবিধানিক আবার কিছু কিছু পদ মেয়াদি অপর দিকে পদগুলোর একটি বড় অংশ অসামরিক ও সামরিক। ওপরের সব পদধারীর বেতন, ভাতা ও সুযোগ-সুবিধাদি জনগণ প্রদত্ত কর হতে নির্বাহ করা হয়। ওপরের সব পদধারীর কাছ থেকে দেশের সাধারণ মানুষ সবসময় নিঃস্বার্থ সেবা প্রত্যাশা করে। এ বিষয়ে সংবিধানের নির্দেশনাও সুস্পষ্ট। ওপরের সব পদধারীর জন্য নিরপেক্ষ হওয়া অত্যাবশ্যক হলেও কিন্তু বাস্তবতা হলো পদধারীদের একটি বড় অংশই নিরপেক্ষ অবস্থান হতে বিচ্যুত।
সাংবিধানিক পদধারীদের কেউ কেউ নির্বাচিত আবার কেউ কেউ অনির্বাচিত। অ্যাটর্নি জেনারেল ছাড়া অপর সব সাংবিধানিক পদধারী শপথের অধীন। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার প্রভৃতি নির্বাচিত সাংবিধানিক পদধারী এবং প্রধান বিচারপতি বা বিচারক প্রভৃতি অনির্বাচিত সাংবিধানিক পদধারীকে শপথগ্রহণ করাকালে অপরাপর বিষয়ের পাশাপাশি বলতে হয় তারা ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সবার প্রতি আইনানুযায়ী যথাবিহিত আচরণ করবেন। সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ করাকালে অপরাপর বিষয়ের পাশাপাশি বলতে হয় সংসদ সদস্যরূপে তারা তাদের কর্তব্য পালনকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হতে দেবেন না। অনির্বাচিত সাংবিধানিক পদধারীদের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনার, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্যদের শপথগ্রহণকালে অপরাপর বিষয়ের পাশাপাশি বলতে হয় তারা তাদের সরকারি কার্য ও সরকারি সিদ্ধান্তকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হতে দেবেন না। উপরের সাংবিধানিক পদধারীদের পঠিত শপথবাক্যের এ বিশেষ অংশটুকু অবলোকনে প্রতীয়মান হয় নির্বাচিত অনির্বাচিত নির্বিভেদে কোনো সাংবিধানিক পদধারীর পক্ষে স্বজনপ্রীতির সুযোগ নেই।
স্বজনপ্রীতিতে সাংবিধানিক অসাংবিধানিক পদধারী ছাড়াও সরকারের অসামরিক বা সামরিক পদে নিয়োজিত ব্যক্তিদেরও লিপ্ত হতে দেখা যায়। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে একজন ব্যক্তিকে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তিনি আত্মীয় বা দলীয় মতাদর্শী বিধায় বা তার কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে বশীভূত হয়ে তাকে অন্যায়ভাবে সুবিধা দেয়া হয়। স্বজনপ্রীতি এক দিকে নিরপেক্ষতার বিপরীত অপর দিকে দুর্নীতির সমার্থক।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এর মূলে রয়েছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শোষণমুক্ত সমাজের প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হলে এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সর্বাগ্রে প্রয়োজন রাষ্ট্র ও সরকারব্যবস্থার সব পর্যায় হতে দুর্নীতি নির্মূল। আমাদের রাষ্ট্র ও সরকারব্যবস্থায় বর্তমানে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী। আর এ কারণে আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে সফলতা হতে অনেক দূরে।
নব্বই-পরবর্তী আমাদের এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত হলেও আমাদের বড় দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে পারস্পরিক আস্থাহীনতার কারণে সে গণতন্ত্র এখনো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। একদা এ দেশে জনদাবির প্রেক্ষিতে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছিল। এ ব্যবস্থা গণতন্ত্রকে সুসংহত করার ক্ষেত্রে কতটুকু সফল ছিল তা নিরূপণের আগেই দেখা গেল যে দলটি এ ব্যবস্থাটি প্রবর্তনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রেখেছিল সে দলটিই জন-আকাক্সক্ষার বিপরীতে অকস্মাৎ একতরফাভাবে এ ব্যবস্থাটি হতে সরে দাঁড়ায়।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের যোগ্যতার বিষয়টি সংবিধানে উল্লিখিত হলেও কোনো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারই নির্বাচনে পরাভূত দলের কাছে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়নি। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প হিসেবে যে দলীয় সরকারের আবির্ভাব তার আচরণ অতীতের দলীয় সরকারগুলোর সমরূপ হওয়ার কারণে বাংলাদেশ অভ্যুদ্বয়-পরবর্তী দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে দলীয় সরকার পরাভূত হয়নি।
নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীন গঠিত এর আগের কোনো নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সমর্থ হয়েছে দেশবাসীর মধ্যে এমন আশাবাদ সৃষ্টিতে তারা বিফল। নির্বাচন কমিশনের এ বিফলতাই নিরপেক্ষ ব্যক্তি সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এখন প্রশ্ন কাদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে আশাবাদ ব্যক্ত হওয়ার উপক্রম ঘটবে যে প্রকৃত অর্থেই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ?
এ যাবৎকাল পর্যন্ত গঠিত ১১টি নির্বাচন কমিশনের গঠনপ্রক্রিয়া অবলোকন করলে দেখা যায় প্রথম ছয়টি নির্বাচন কমিশন উচ্চ আদালতের বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল। এ নির্বাচন কমিশনগুলোতে কমিশনার হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন তারা সবাই সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ছিলেন। সপ্তম, অষ্টম, দশম ও একাদশÑ এ চারটি নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সচিব। এসব নির্বাচন কমিশনে কমিশনার হিসেবে যারা স্থান পেয়েছিলেন তারা প্রশাসনের সচিব পদধারী, অধস্তন বিচার বিভাগের জেলা জজ পদধারী এবং সামরিক বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার পদধারী। নবম নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন কর্মরত বিচারক যদিও সংবিধান একজন কর্মরত বিচারকের এরূপ পদায়ন অনুমোদন করে না। এ কমিশনে কমিশনার হিসেবে যারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন তারা প্রশাসন ও অধস্তন বিচার বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। দলীয় সরকারের অধীন গঠিত পঞ্চম ও নবম নির্বাচন কমিশন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আগমন-পরবর্তী পদত্যাগে বাধ্য হলে এ দু’টি নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন সম্ভব হয়নি। এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে কর্মরত প্রধান বিচারপতির অধীন অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে তৃতীয় নির্বাচন কমিশন মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই পদত্যাগে বাধ্য হয়।
দলীয় সরকারের অধীন যেসব নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে এর প্রতিটিতে দেখা গেছে সরকার দলীয় সুবিধাভোগী ও দলীয় মতাদর্শী ব্যক্তি সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনে সচেষ্ট ছিল। অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে দলীয় সুবিধাভোগী অথবা দলীয় মতাদর্শী কাদের বলা হয়? সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে দলীয় সুবিধাভোগী হিসেবে তারা অভিহিত যাদের অবসর-পরবর্তী বিশেষ বিবেচনায় সমমর্যাদাসম্পন্ন পদে অথবা কোনো মেয়াদি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর দলীয় মতাদর্শী হলো তারা যারা জ্যেষ্ঠ না হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক বিবেচনায় উচ্চ ও গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছেন। তা ছাড়া দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি সত্ত্বেও যেসব কর্মকর্তা শুধু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে অবাধে দুর্নীতি করা সত্ত্বেও পদপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হননি এরাও দলীয় মতাদর্শীর অন্তর্ভুক্ত।
এ কথাটি অনস্বীকার্য যে, দলীয় সুবিধাভোগী বা দলীয় মতাদর্শী সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে সে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে যে সরকার কর্তৃক আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন, সে সরকারের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবেন। আর তাই দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন যদি দলীয় সুবিধাভোগী ও দলীয় মতাদর্শী সমন্বয়ে গঠিত হয় সে ক্ষেত্রে সে নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা দেশবাসী আগাম অনুধাবনে সক্ষম।
আমাদের দশম সংসদ নির্বাচন ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের মতো একতরফা, অনিয়ম, কারচুপি ও কলুষতায় ভরপুর ছিল। উভয় নির্বাচন দেশ ও বিদেশে নানা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন ষষ্ঠ ও দশম সংসদ নির্বাচনের মতো কলুষতাপূর্ণ হোক এটি এ দেশের গণতন্ত্রমনা মানুষের কাছে প্রত্যাশিত নয়। এ নির্বাচনটিকে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি সমন্বয়ে এমন নির্বাচন কমিশন গঠন যেখানে সম্মিলন ঘটবে এমন ব্যক্তি যারা সৎ, দক্ষ, যোগ্য ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন।
আমাদের নির্বাচন কমিশন যাদের সমন্বয়ে গঠিত তারা সবাই সাংবিধানিক পদধারী। এদের নিয়োগ বিষয়ে সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে আইনের বিধানাবলিসাপেক্ষে তারা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। আমাদের সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কারণে তাকে দু’টি ক্ষেত্র যথা প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ ছাড়া অপর সব ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য সমাধা করতে হয়।
একাদশ নির্বাচন কমিশন গঠনকালীন এটি নিরপেক্ষ ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে দেশবাসীর মধ্যে এমন ধারণা সৃষ্টির জন্য রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি সার্চ কমিটি গঠনপূর্বক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা-পরবর্তী প্রতিটি পদের বিপরীতে দু’টি নাম সুপারিশের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। ওই নির্বাচন কমিশন কতটুকু সফল বা কতটুকু বিফল সে বিষয়ে দেশবাসী সম্যক অবহিত। এ নির্বাচন কমিশনটির মেয়াদ অবসানের অব্যবহিত আগে দ্বাদশ নির্বাচন কমিশন গঠনের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাতে দেখা যায় আগের মতো অনুরূপ সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যদিও এটির কলেবর আগেরটির চেয়ে স্বল্পবৃহৎ।
বর্তমান সার্চ কমিটি আগের সার্চ কমিটির মতো প্রতিটি পদের বিপরীতে যে দু’জনের নাম সুপারিশ করবেন রাষ্ট্রপতি তাদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রীর আকাক্সক্ষা অনুযায়ী একজনকে নিয়োগদান করবেন। এরূপ সার্চ কমিটির বিষয় সংবিধান বা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো আইনে উল্লিখিত না হলেও নিরপেক্ষ, সৎ, দক্ষ, যোগ্য ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তি সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে এ মানসে জনগণকে আশ্বস্ত করার প্রয়াসে আগের মতো এ সার্চ কমিটিটির গঠন। আগের সার্চ কমিটির কাছে জনগণের যেমন প্রত্যাশা ছিল, এটির কাছেও প্রত্যাশা ভিন্নতর নয়। আগের কমিশনের কার্যকলাপের কারণে জনপ্রত্যাশা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আর তাই এ সার্চ কমিটি নামের সুপারিশ প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রকৃত অর্থে যারা নিরপেক্ষ, সৎ, দক্ষ, যোগ্য ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন তাদের বাছাইপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নে যদি ব্যর্থ হয় সে ক্ষেত্রে তা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় হিসেবে দেখা দেবে। এ অবস্থায় নিরপেক্ষতার বাতাবরণে কোনোভাবেই সুপারিশের মধ্যে এমন ব্যক্তির অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশিত নয় যাদের সততা, দক্ষতা, যোগ্যতা নানাবিধ প্রশ্নের কারণে মলিন।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান ও
রাজনীতি বিশ্লেষক।
E-mail : iktederahmed@yahoo.com
http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/194004