২৪ মে ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:৩১

৮ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরো ৯ জন নিহত

দেশের আট জেলায় গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত র্যালব-পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ৯ মাদক কারবারি নিহত হয়েছে। জেলাগুলো হলোÑ কুষ্টিয়া, গাইবান্ধা, রংপুর, কুমিল্লা, ফেনী, জামালপুর, লালমনিরহাট ও ঠাকুরগাঁও। এ ছাড়া বগুড়ায় এক মাদক কারবারি বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এসব ঘটনার সময় পুলিশ ও র্যারবের টহলদল ঘটনাস্থল থেকে বিপুল মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও মাদককারবারের টাকা-পয়সা উদ্ধার করে। এসব ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, কুষ্টিয়ায় বন্দুকযুদ্ধে ফটিক ওরফে গাফফার (৩৭) নামে এক মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত ১টায় কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়ায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় তারা নিহত হয়। নিহত ফটিক কুমারখালী উপজলার এলেঙ্গীপাড়ার মৃত ওসমান গণির ছেলে। কুমারখালী থানার ওসি আবদুল খালেক জানান, মাদকদ্রব্য কেনাবেচার উদ্দেশ্যে একদল মাদক ব্যবসায়ী লাহিনীপাড়ার গড়াই নদীর পাড়সংলগ্ন ব্রিজর নিচে অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। এ সময় মাদক কারবারিরা পুলিশকে ল্য কর গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে একজন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি জানান ফটিক ওরফে গাফফার পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি। বন্দুকযুদ্ধে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, ৭০০ পিস ইয়াবা ও ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।
ফেনী সংবাদদাতা জানান, ফেনী শহরের দাউদপুল এলাকায় গত মঙ্গলবার রাতে র্যাতবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মো: ফারুক (৩৫) নামে আরেকজন নিহত হয়েছে। তার বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার জাফরাবাদ গ্রামে।

সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইয়াবা পাচারের খবর পেয়ে ওইদিন রাত ১১টায় র্যা ব-৭-এর একটি দল দাউদপুল খাজা আহম্মদ কাঁচাবাজারের মহিবুল্লাহ ট্রেডার্সের সামনে চেক পোস্ট বসিয়ে গাড়ি তল্লাশি করে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি প্রাইভেটকারের গতিবিধি সন্দেহজনক হলে থামানোর সঙ্কেত দেয়। প্রাইভটকারটি না থামিয়ে দ্রুতগতিতে চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় র্যা বকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র্যা বও পাল্টাগুলি ছোড়লে মাদক কাবারিরা পিছু হটে। ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ একজনকে উদ্ধার করে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ২২ হাজার পিস ইয়াবা, একটি ওয়ানশুটার গান, ৫ রাউন্ড গুলি, ৫ রাউন্ড খালি খোসা, একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।

র্যা ব সূত্র জানায়, নিহতের পকেটে থাকা ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে তার পরিচয় মো: ফারুক (৩৫) বলে জানা যায়। সে চন্দনাইশ থানার জাফরাবাদ গ্রামের মো: অলি আহমেদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় মাদকসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় দুই র্যািব সদস্য আহত হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
ফেনীর র্যািব-৭-এর স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়াত জামিল ফাহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত ব্যক্তি, উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও মাদকসংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ভোরে ফেনী শহরের অদূরে ঢাকা-চট্টগ্রাাম মহাসড়কের লেমুয়া ব্রিজ-সংলগ্ন নিয়াজপুর জেনিথ ফিলিংস্টেশন-সংলগ্ন স্থানে র্যা্বের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মঞ্জুরুল আলম ওরফে কানা মঞ্জু (৪৯) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। তার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার রূপকানিয়ায়। সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদল্লরের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি বলে র্যাাব জানায়।
রংপুর অফিস জানান, রংপুর মহানগরীর হাজিরহাটে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শাহীন (৪০) নামের এক মাদককারবারি নিহত হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে রিভলবার ও বস্তাভর্তি ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৩৬ জন মাদকসংশ্লিষ্টকে গ্রেফতার করেছে।

রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফ জানান, রাত আড়াইটায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের হাজিরহাটের ব্রিজের কাছে মাদক বেচাকেনার খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালানায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদককারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিতে নিহত হয় শাহীন। বাকিরা পালিয়ে যায়। নিহত শাহীন নগরীর ২ নং ওয়ার্ডের মনোহরপুর অভিরাম শুকান চৌকি গ্রামের শহিদার ওরফে সিরাজুল ইসলামের ছেলে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পিস্তল ও ১২৯ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। ঘটনার সময় কয়েকজন এসআই জাবেদ, এএসআই সেলিম ও সাঈদ এবং কনস্টেবল আতাউর আহন হন। আহতদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অন্য দিকে লাশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
গাইবান্ধা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় র্যা বের সাথে বন্দুকযুদ্ধে রাজু মিয়া (৪২) নামের এক শীর্ষ মাদককারবারি নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন দুই র্যা ব সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার করেছে র্যা ব। গতকাল বুধবার ভোরে উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছি গ্রামে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত রাজু মিয়া পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের রাইগ্রামের হেরোইনসম্রাট মৃত আব্দুল জোব্বারের ছেলে।

র্যা ব জানায়, জেলার শীর্ষ মাদককারবারি ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজু মিয়াকে আটকের চেষ্টাকালে সে র্যামবের ওপর গুলি চালায়। পরে বন্দুকযুদ্ধে রাজু নিহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ বিদেশী অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পলাশবাড়ী থানায় একাধিক মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে রাজুর লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরো একজন নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে নুরুল ইসলাম ইছা (৩৫) নামের এক তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কারচর ব্রিজসংলগ্ন গোমতী বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইছা আদর্শ সদর উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে। নিহত ইছার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ১১টি মামলা রয়েছে।

এর আগে গত সোমবার রাতে জেলা সদরের বিবিরবাজার অরণ্যপুর এলাকায় গোয়েন্দা (ডিবি) ও থানা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শরীফ ও পিয়ার নামে তালিকাভুক্ত দুই মাদকব্যবসায়ী নিহত হন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নুরুল ইসলাম একজন চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত মাদককারবারি। পুলিশের বিশেষ অভিযানে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য অনুসারে পুলিশ অভিযান শুরু করে। গভীর রাতে কুমিল্লা পুলিশের একটি টিম শহরতলীর টিক্কারচর ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদককারবারিরা পুলিশকে ল্য করে গুলি চালায়। এ সময় আত্মরায় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, উভয় পরে গুলিবিনিময়ে মাদকব্যবসায়ী ইছা গুরুতর আহত হন।

জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদককারবারি মোশারফ হোসেন বিদ্যুৎ (৩৯) নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সদর থানার ওসি নাছিমুল ইসলামসহ চার পুলিশ সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, ম্যাগাজিনসহ তিন রাউন্ড তাজা গুলি, ১০০ গ্রাম হেরোইন এবং এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ৩টার দিকে শহরের ব্রহ্মপুত্র নদের পাশে ছনকান্দা মাদ্রাসা ঘাটে পুলিশ ও মাদকব্যবসায়ীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত মাদককারবারি বিদ্যুৎ শহরের বগাবাইদ বোর্ডঘর বাজার এলাকার মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে এবং তালিকাভুক্ত চিহ্নিত মাদককারবারি। তার বিরুদ্ধে জামালপুর সদর থানায় ১৫টি মাদক মামলা এবং একটি ডাকাতি মামলা রয়েছে।
এ দিকে নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম সাংবাদিকদের বলেন, গত সোমবার রাতে সদর থানার এসআই মেহেদী, সিরাজ ও জহির আমার স্বামীকে শহরে মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর জন্য মাদকব্যবসায়ীদের বাড়ি দেখিয়ে দেয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে এসআই মেহেদীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বাড়ির সামনে আমার স্বামীকে নামিয়ে দিয়ে এসেছেন। সকালে মৃত্যুর সংবাদ পাই। আমার স্বামীকে দিয়ে এসআই মেহেদি থানায় উদ্ধার করা ইয়াবা-হেরোইন বিক্রি করাতো।

লালমনিরহাট সংবাদদাতা জানান, লালমনিরহাটে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে গতকাল বুধবার ভোরে নুরে আলম এশার (৩৫) নামে এক মাদককারবারির সাথে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে ওই মাদককারবারি নিহত হয়।
পুলিশ জানায়, বুধবার ভোরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের চর কুলাঘাট এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচারের জন্য কয়েকজন মাদকব্যবসায়ী ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় টহলরত পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পুলিশকে আঘাত করে পালানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ গুলি করলে ঘটনাস্থলেই মাদকব্যবসায়ী নুরে আলম এশার নিহত হয়। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফেনসিডিল,গাঁজা, হেরোইন ও একটি রামদা উদ্ধার করে।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক জানান, পুলিশ সকালে এশার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহত নুরে আলম এশার কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার যগুরতল গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাদকারবারি আক্তাফুল (৩০) নামে এক নিহত হয়েছে। এ সময় থানার ওসি ও এসআই আহত হয়েছে। গতকাল ভোরে উপজেলার ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের বনবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আক্তাফুল (৩৮) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের পারুয়া গ্রামের ভেলসা মোহাম্মদের ছেলে। আহত বালিয়াডাঙ্গীর থানার ওসি এ বি এম সাজেদুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক মো: খায়রুজ্জামান ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ জানান, গত মঙ্গলবার রাত ১২টায় বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ি ইউনিয়নের পারুয়া গ্রামে নিজের বাড়ি থেকে মাদকব্যবসায়ী আক্তাফুলকে আটক করে। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আক্তাফুলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে ১০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার হয়। মাদকব্যবসায়ী আক্তাফুল ওই ফেনসিডিলগুলো ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার এক মাদকব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিনেছিলেন বলে পুলিশকে জানান।
এই তথ্যের সূত্র ধরে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের একটি দল রাত ৩টায় আক্তাফুলকে সঙ্গে নিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলায় রওনা হয়। পথে ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের বনবাড়ি এলাকায় পৌঁছলে মাদককারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ চলে। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে মাদকব্যবসায়ী আক্তাফুল নিহত হয়।

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে র্যা বের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ইয়াবা ডন বাচ্চু খানের (৩৫) লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ মর্গ থেকে নিহতের পিতা আশরাফ পুলিশের কাছ থেকে তার লাশ গ্রহণ করে ওই রাতে জামালপুর গ্রামের বাড়িতে রওনা হন।
মঙ্গলবার ভোর ৫টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আড়াইহাজার সাতগ্রাম ইউনিয়নের শিমুলতলী দেয়াবৈ মেইন রোড এলাকায় র্যা বের সাথে বন্দুকযুদ্ধের ইয়াবাসম্্রাট বাচ্চু খান নিহত হয়। আহত হন র্যাাব সদস্য আক্কাস (৩৫)। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বাচ্চু খানের একটি পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা মূল্যের নিশান জিপ গাড়ি, একটি বিদেশী পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি গুলির খোসা, সামসাং ও ওয়ানটাইম নামে দু’টি মোবাইল সেট, ৬৫২০ টাকা এবং ২৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা মূল্যের ৯৮৩০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

৩১ মাদককারবারি আটক
দিনাজপুর সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৩১ জন মাদককারবারিকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় আটককৃতদের কাছ থেকে ১৭১ বোতল ফেনসিডিল, ৪৪৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, এক কেজি ৩০ গ্রাম গাঁজা ও ৩৫ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। গতকাল মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। দিনাজপুর পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে কর্মকর্তা সুলতানা ইয়াসমিন নাদিয়া জানান, আটক মাদককারবারিদের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে ২৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ২৩ মে দুপুরে পর্যায়ক্রমে তাদের আদালতে হাজিরার পর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বন্দুকযুদ্ধে মাদককারবারি গুলিবিদ্ধ
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় ইয়াবা বিক্রিকালে পুলিশের অভিযানের সময় শাহীন মিয়া ওরফে হাজী শাহিন (৪২) নামের এক মাদককারবারি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়। গত মঙ্গলবার রাত ১টায় বগুড়া শহরের ছিলিমপুর নতুন রাস্তায় আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ১০ ইঞ্চি লম্বা বার্মিজ চাকু এবং আটটি গুলির খোসা উদ্ধার করে পুলিশ।

বগুড়ার সদর থানা পুলিশ জানায়, বগুড়া সদরের ছিলিমপুর এলাকায় একদল মাদককারবারি মিলিত হয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট বিলি-বণ্টন করছিল। এমন খবর পেয়ে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মাদককারবারি পুলিশকে ল্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় আত্মরার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে মাদককারবারিরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ রাস্তার পাশে মাটিতে পড়ে থাকা হাজী শাহিনকে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয় পুলিশ।
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা জানান, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শীর্ষ মাদক কারবারি লিটন শেখ (৪৫) নিহত হয়েছে। পুলিশের দাবি এ ঘটনায় তাদের এক সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি এলজি অস্ত্র, তিন রাউন্ড গুলি ও মাদকদ্রব্য ৫০০ পিচ ইয়াবা, ২ গ্রাম হিরোইন উদ্ধার করেছে। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার হাওয়াখালী মাঠের মধ্যে ইটভাটার কাছে এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম জানান, মাদকদ্রব্য ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে একদল মাদক কারবারি রাত ২টার দিকে উপজেলার হাওয়াখালী মাঠের মধ্যে যায়। এমন গোপন সংবাদ পেয়ে এসআই আশরাফুল ইসলাম ভেড়ামারা থানা পুলিশের একটি টহল দল নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশ ও পাল্টা গুলি চালালে ‘বন্দুকযুদ্ধে একজন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থকমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানতে পারে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি শীর্ষ মাদক করবারি। তার বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানার চারটি মাদক মামলার রয়েছে। নিহত লিটন (৪৫) ভেড়ামারা উপজেলার নওদাপাড়া এলাকার মৃত গোলবার শেখে ছেলে।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/11539