২৬ মার্চ ২০১৮, সোমবার, ৮:৫৩

উন্নয়ন ও গণতন্ত্র হাত ধরাধরি করে চলে

দেখা অদেখা

সালাহউদ্দিন বাবর
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় ওঠার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এই অর্জনের কারণে আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা যেতে পারে, তবে একই সাথে এটি যে বিরাট চ্যালেঞ্জের বার্তা নিয়ে এসেছে, তা বুঝতে হবে। কোনো কিছু অর্জন করা যেমন সহজ নয়, তেমনি এই অর্জনকে ধরে রাখা এবং তাকে আরো এগিয়ে নেয়া তার চেয়েও কঠিন। জাতি হিসেবে আমরা সামান্যতেই উৎফুল্ল হয়ে উঠি। কোনো কিছু পাওয়ার সাথে যে অনেক দায়দায়িত্ব চলে আসে, সেটা আমরা বহু ক্ষেত্রেই উপলব্ধি করি না। এই অমনোযোগিতার কারণে আমরা পেয়েও অনেক কিছু হারাই। আর সে কারণে অনেক আগে যাদের সাথে ভাগ্য বদলের যাত্রা শুরু করেছিলাম, একাগ্রতা ও যথেষ্ট কর্মপ্রয়াসের অভাবে সহযাত্রীরা আমাদের অনেক দূর ফেলে এগিয়ে গেছে। সে যাই হোক, কখনো না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়াটাও মন্দ নয়। একটি দেশের আর্থিক উন্নয়নই কেবল সামগ্রিক সমৃদ্ধি নয়। উন্নয়নের সহযাত্রী হবে গণতন্ত্র, সুশাসন তথা আইনের শাসন, মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ আরো উপাত্ত এর সাথে যোগ হবে। আর তাতে পূর্ণাঙ্গ হবে একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র ও সমাজ।
জাতিসঙ্ঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের (ইকোসক) মানদণ্ড অনুসারে স্বল্পোন্নত দেশের সারি থেকে ওপরে ওঠার ক্ষেত্রে একটি দেশের মাথাপিছু আয় কমপক্ষে ১২৩০ ডলার হতে হয়। সে হিসাবে বাংলাদেশের মানুষের এখন মাথাপিছু আয় ১৬১০ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ নির্ধারিত থাকলেও বাংলাদেশ অর্জন করেছে ৭২.৯ শতাংশ। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার সূচকে ৩২ ভাগের কম হতে হয়, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রয়েছে ২৪.৮ শতাংশ। এর আগে বাংলাদেশ তিনবার ব্যর্থ হলেও এবার উন্নয়ন সূচকের সব যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের এই অর্জন ২০২১ সালে দ্বিতীয় দফা এবং ১৯২৪ সালে তৃতীয় দফা পর্যালোচনা করা হবে। সে সময় উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এই অর্জনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। তাই এখন শেষ হাসি হাসার জন্য আরো তিন বছরের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে। অর্জনের পর যদি তৃপ্তি বোধ করে ঘুমিয়ে যাই, তবে আবারো উন্নয়নশীল থেকে স্বল্পোন্নত দেশে পতন ঘটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ইতোমধ্যে আরো কয়েকটি আন্তর্জাতিক সূচকে কিন্তু আমরা পিছিয়ে আছি। পৃথিবীর অসুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ বিরাজ করছে। রাজধানী ঢাকার অধিবাসী হতাশায় নিমজ্জিত, এমন তকমাও কিন্তু এই মহানগরীর ললাটে সেঁটে আছে। দুর্নীতি, অনিয়ম নিয়ে বেসুমার অভিযোগ রয়েছে। নারী ও মেয়েশিশু নির্যাতন অসহনীয়, বেকারত্ব নিয়ত বাড়ছে। এসব গ্লানি নিয়ে এ দেশের মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় স্থানগুলো চিহ্নিত করে উন্নয়নশীল দেশের আলোকে শোধরানো হবে তা সবাই আশা করে। এই কাজ না করে নিছক আবেগ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা ঠিক হবে না। কারণ, এ দিকে আমরা বাংলাদেশকে ঠাঁই করে দিয়েছি স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায়।

উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় ওঠার যোগ্যতা অর্জনের সাথে সাথে দেশকে বড় ধরনের কতকগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষমতা বাংলাদেশ এ সময়ের মধ্যে অর্জন করেছে কি না, তা বড় একটা বিষয়। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভের পর আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমাদের বেশ কিছু সুবিধা স্বাভাবিকভাবেই রহিত হয়ে যাবে। সূচকের উন্নয়ন ধরে রাখতে না পারলে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। এলডিসি থেকে বেরুলে অনেক বাণিজ্যিক সুবিধা হারাতে হবে। এসব সুবিধা হারানোর পর বাংলাদেশের পণ্য ও সেবা আন্তর্জাতিক বাজারে অসম প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে দেশ কতটা প্রস্তুত তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এই পরিবর্তনের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সম্ভাব্য ২০৭ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতির সম্ভাবনা রয়েছে। এখন বাংলাদেশ আরো ৪৭টি স্বল্পোন্নত দেশের মতোই তুলনামূলক স্বল্প সুদে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাচ্ছিল, এখন এই সুযোগ আর থাকবে না। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশকে বিপাকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, বাংলাদেশ এতকাল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৬টি দেশসহ কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, চীন এমনকি ভারতের কাছ থেকেও সুবিধা পাচ্ছিল। এতে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সুবিধা হচ্ছিল। বর্তমানে ১৩০০টি পণ্য রফতানি হয়। কিন্তু একমাত্র তৈরী পোশাক, শিল্পজাত পণ্য রফতানি থেকে আসে মোট রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশ। পোশাক শিল্পে সমস্যা হলে গোটা রফতানি আয়ে বিপর্যয় নেমে আসবে। এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।

উন্নয়নের সাথেই রাজনীতির একটা স্বাভাবিক সম্পর্ক রয়েছে। উন্নয়নের জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ অত্যন্ত জরুরি। দেশে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করলেই উন্নয়নে গতিশীলতা আসে। তাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকাটা অপরিহার্য। এটা নির্ভর করে ক্ষমতাসীনদের কর্মকাণ্ডের ওপর। তাদের ভূমিকা হতে হবে জনগণনির্ভর। সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হবে জনকল্যাণমুখী। রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সমঝোতার পথ ধরে। সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সাথে আচরণ করার ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার অনুসরণ করা প্রয়োজন। সরকারকে এটা মনে রাখতে হবে, তারা দেশ পরিচালনা করছে বটে, কিন্তু তাদের সহযোগী হিসেবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষেরও দায়িত্ব রয়েছে। তারা সরকারের ভুলত্রুটি ধরবে ও জবাবদিহি করবে। সেই সুযোগ না পেলে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবে অবনতি ঘটবে, যা উন্নয়নের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। একটি দেশ স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে যেতে পারে ভারসাম্যতার মধ্য দিয়ে, পরিচালনা ও তার জবাবদিহিতার পথ ধরে। আজকে দেশের অবস্থা কিন্তু সেই পর্যায়ে নেই। পৃথিবীর উন্নত দেশের দিকে তাকালে দেখা যাবে, সেখানে সরকার ও তার প্রতিপক্ষের মধ্যে সম্পর্ক হয়ে থাকে সহযোগিতামূলক আর এখানে প্রতিহিংসামূলক।

বেগম খালেদা জিয়া বিরোধী দলের নেত্রী হয়ে এখন মজলুম হয়ে পড়েছেন। তিনি কোথাও সহানুভূতি সদাচরণ পাচ্ছেন না। দুয়ারে দুয়ারে তিনি যে আচরণ পাচ্ছেন, তাতে দুঃখ হতাশ প্রকাশ করা ছাড়া ভিন্ন কিছু করার নেই। তিনি বহু মামলার জালে আটকা পড়েছেন। তিনি প্রতিহিংসার কবলে পড়ে এসব মামলার জালে আটকে রয়েছেন। মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের হীন উদ্দেশ্যের শিকার হয়ে তিনি এসব মামলায় পড়েছেন। তার মতো ক্ষমতাসীন দলে অনেক নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধেও এমন মামলা ছিল। সরকার বেগম জিয়ার মামলাগুলো রেখে দিয়ে তাদের সব মামলা রহিত করে। তা ছাড়া বহু মামুলি বিষয়েও বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার অনেক মামলা রুজু করে। এমন বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে এ বছরের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে অংশ নেয়া সম্ভব হবে কি না, তাতে সংশয় রয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। আর আগামী নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক না হয় তবে মারাত্মক রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা দেবে দেশে। ২০১৪ সালে যেমন প্রহসনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই নির্বাচনে বিনা ভোটেই একটি বেসামরিক প্রশাসন ক্ষমতাসীন হয়। পরিস্থিতির যদি উন্নতি না ঘটে তবে এবারো তেমনি একটি বেসামরিক প্রশাসন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া আবারো ক্ষমতায় বসবে। এমন একটি দুঃস্বপ্ন যদি বাস্তব রূপ নেয়, তবে দেশে গণতন্ত্র, তথা মানুষের ভোটাধিকার শেষ হয়ে যাবে। দেশে একটি নিবর্তনমূলক শাসনব্যবস্থা আসতে পারে।

যেকোনো দেশেই উন্নতির গতিধারা হয় দুই দিক থেকে। সরকারি উদ্যোগে বটে, তবে সরকারের উদ্যোগ আয়োজনের একটা পরিসীমা রয়েছে। কোথাও সরকারের একার পক্ষে উন্নতি করা সম্ভব নয়। এর সাথে বেসরকারি পর্যায়ের উদ্যোগ আয়োজনের বিশেষ প্রয়োজন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। কিন্তু এখানে বেসরকারি খাতের উন্নয়নে অবদান রাখা সহজ নয়। অবকাঠামোগত সঙ্কট ও সমস্যা, সরকারি বিধিবিধান তথা শিল্পবান্ধব নীতির মারপ্যাঁচ, উপযুক্ত পরিবেশের অভাবÑ সব মিলিয়ে বাংলাদেশে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের পক্ষে কাজ করা সহজ নয়। একই সাথে বেসরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ হালও এখানে সন্তোষজনক নয়। এসব সমস্যার কোনো কূলকিনারা নেই, তবে এটাই শেষ নয়। ঘুষ দুর্নীতির জাল এতটা বিস্তৃত এবং শক্তিশালী যে, তা ছিন্ন করা অসম্ভব। সমাজের সব স্তরে এই সমস্যা বিরাজ করছে। ব্যাংক বীমাসহ দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থকড়ি লোপাট হচ্ছে। দোষীরা থেকে যাচ্ছে অধরা। দোষীদের বিচারের দোরগোড়ায় নেয়া হচ্ছে না। সর্বত্র এরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। দেশে নীতি-নৈতিকতার অবস্থাও নাজুক। নৈতিক মানসম্পন্ন মানুষ তৈরির ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন ব্যর্থ হয়েছে। সমাজের নীতি-নৈতিকতার আলোচনাকে সেকেলে বিষয় বলে উপেক্ষা করা হচ্ছে। সমাজে যারা সদাচরণ করেন, নীতিবোধের কথা বলেন তারা মূল্যহীন হয়ে পড়েছেন। এই দুর্যোগ থেকে জাতি কিভাবে পরিত্রাণ লাভ করবে, তা এখন ভাবার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে বুদ্ধিজীবী শ্রেণী সুশীলসমাজকে বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভেবে দেখা উচিত। অবশ্য সমাজের অন্যান্য মানুষের মতো সুশীলসমাজও মুক্ত কথা বলতে পারছে না।
উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উঠে আসাটা একটা বড় অর্জন বটে। সেই সাথে রয়েছে অনেক দায়িত্ব। এর সাথে আরো একটি বিষয় গুরুত্বের দাবি রাখে। উন্নয়ন একা নয়, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে পরস্পর হাত ধরাধরি করে চলতে হয়। কিন্তু এখন যে কেবল উন্নয়নের বাদ্যই কানে আসছে। গণতন্ত্র নিয়ে কোনো আলাপচারিতা নেই অথচ বাংলাদেশে গণতন্ত্রের হালহকিকত ভালো নয়।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিয়ে দেশের ভেতরে যেমন হতাশা রয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক বলয়ে রয়েছে উদ্বেগ। গণতন্ত্রের যে মূল বিষয় নির্বাচন তা নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে প্রায় এক দশক, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। এর আগে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তা ছিল প্রহসনমূলক নির্বাচন। দেশের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি দল তা বর্জন করে। নামসর্বস্ব কয়টি দল তাতে অংশ নেয়। সংসদের অর্ধেক আসনে প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষিত হন। সে সংসদই এখন অনেকটা গায়ের জোরে বহাল রয়েছে। আগামীতে জাতীয় নির্বাচনের স্বরূপ খুব একটা ভালো হবে তেমন আশা এখনো করা যায় না। পাখি যেমন এক ডানা নিয়ে উড়তে পারে না, তেমনি দেশও উন্নয়ন ও গণতন্ত্র ব্যতিরেকে এগিয়ে যেতে পারে না। ক্ষমতাসীন মহল থেকে উন্নয়নের ব্যাপারে বহু কথা শোনা যায়, কিন্তু গণতন্ত্রের ব্যাপারে কোনো অঙ্গীকার শোনা যায় না। আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের যে মন্তব্য শোনা যায় তা উদ্বেগজনক। আওয়ামী লীগের জনৈক শীর্ষ নেতা এমন ইঙ্গিত করেছেন যে, আসন্ন নির্বাচনে তারা যে বিজয়ী হবেন সেটা শুধু সময়ের ব্যাপার। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা সবাই ব্যক্ত করতে পারেন বটে, তবে সেটা বলতে হবে জনগণের সমর্থন সাপেক্ষে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা জনগণের সমর্থনের বিষয়টি উল্লেখ করেন না বলে আগামী নির্বাচনের স্বরূপ নিয়ে শঙ্কা হয়। দেশ যদি সত্যিকারভাবে গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে যেতে না পারে তবে একটি জবাবদিহিমূলক প্রশাসন কার্যকর হতে পারবে না। আর সমাজে জবাবদিহিতা না এলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা লাভ করবে না।

উন্নয়ন ও গণতন্ত্র যেমন এক সাথে চলে তেমনি গণতন্ত্রের সাথে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পথ অভিন্ন নয়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা না থাকলে গণতন্ত্র যেমন বিকশিত হতে পারবে না, তেমনি জবাবদিহিতার একটি পদ্ধতি বজায় থাকে না। কিন্তু এখন প্রকাশ্যে মত প্রকাশের বাধাবিঘœ দেখা যায় না বটে, কিন্তু অদৃশ্য চাপ ও বিধিবিধান রয়েছে, যা সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীদের ভীতির মধ্যে কাজ করতে হয়। মত প্রকাশের অবাধ অধিকার মৌলিক মানবাধিকারের সাথে সম্পৃক্ত। দেশের সংবিধান এই স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করেছে। এর বাধা সৃষ্টিকারীরা সংবিধান অমান্য করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হবেন। রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা সংবিধান সংরক্ষণের অঙ্গীকার করে থাকেন। এ কথা সংশ্লিষ্ট সবায় স্মরণ রাখতে হবে। তাই উন্নয়ন শব্দটিকে সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় না নিয়ে খণ্ডিতভাবে নিছক কিছু অবকাঠামোকে বোঝালে চলবে না।


 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/304915