১৩ মার্চ ২০১৮, মঙ্গলবার, ৮:১১

ভারতের পানি আগ্রাসনে কবি-শিল্পী-সাহিত্যিকদের স্বপ্নময় নদ-নদী দুঃস্বপ্নের হাহাকারে বিদীর্ণ

বাংলাদেশের এমন কোন জনপদ নেই যেখানে কোন নদীর অস্তিত্ব নেই। এমন এক ভৌগলিক অবস্থার কারনে পরিচিত লাভ করেছে নদী মাতৃক বাংলাদেশ হিসাবে। পৃথীবির মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডটি শত শত নদ নদীর পলল দিয়ে সমৃদ্ধ। এমন বৈশিষ্ট্যপূর্র্ণ ভূ-ভাগের সৃষ্টি পৃথীবিতে বিরল। ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে একুশ কোটি বছর আগে বর্তমান বাংলাদেশ সমুদ্রের পেটে ছিল। হিমালয়, গাড়ো পাহাড়, নাগাল্যান্ডের পাহাড়, লুসাই পাহাড়, খাশিয়া জৈন্তা পাহাড় থেকে নদ নদীগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করে মাকড়াসার জালের মত ছড়িয়ে গেছে। এগুলোর পলি স্তরে স্তরে জমে গড়ে উঠেছে সবুজ শ্যামল বাংলা। আবহমানকাল থেকেই নদীগুলো বাংলাদেশের জনজীবনের সুখ দুঃখ হাসি কান্না আনন্দ বেদনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এসব নদীর সাথে আমাদের গভীর হৃদতা ছিল। এমন চমৎকার ভৌগলিক অবস্থানে বসবাস করার পরও এখনকার বাস্তবতা পাল্টে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। জালের মত ছড়িয়ে থাকা হাজারো প্রবাহমান নদ নদী মরতে মরতে আড়াইশোতো এসে ঠেকেছে। অনেক নদীর নাম মানচিত্র থেকেও মুছে গেছে। বাকীগুলো মরণ যন্ত্রনায় ধুঁকছে।

অথচ একদিন এই নদ নদীগুলো নিয়ে আমাদের কবি সাহিত্যিক শিল্পীরা কত গান কবিতা গল্প লিখেছেন, গেয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বজরা ভাসিয়ে কিংবা স্টীমার নিয়ে কলকাতা থেকে পদ্মা নদী বেয়ে আসতেন তাদের জমিদারী দেখভাল করতে। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর আর নওগার কাচারী বাড়ি আজো তার সাক্ষ্য বহন করছে। তার সময়ে এই পদ্মা নদীর রুপ রস সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ছিন্নপত্রাবলিতে বর্ণনা দিয়েছেন ‘‘স্টীমার যখন ইচ্ছামতি থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যা বেলায় পদ্মার মধ্যে এসে পড়ল। তখন সে কি সুন্দর শোভা দেখেছিলাম। সে আর কি বলব। কোথাও কোথাও কুল কিনারা দেখা যাচ্ছেনা। ঢেউ নেই সমস্ত প্রশান্ত গভীর পরিপূর্ণ। ইচ্ছা করলে যে এখনই প্রলয় করে দিতে পারে সে যখন সুন্দর প্রসন্ন মূর্তি ধারন করে সে যখন প্রশান্ত প্রবল ক্ষমতাকে সৌম্য মাধুর্যে প্রচ্ছন্ন করে রেখে দেয়। এখন তার সৌন্দর্য এবং মহিমা একত্রে মিশে একটা চমৎকার উদার সম্পন্নতা ধারন করে। ক্রমে যখন গোধুলী ঘনীভুত হয়ে উঠল তখন আমার মুগ্ধ হৃদয়ের মধ্যে সমস্ত তার গুলো যেন বেজে উঠতে লাগল’’। পদ্মার রুপ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বর্ণনায় পদ্মা তীরবর্তী মানুষ নিজের অজান্তে বলে উঠেন তিনি আজ বেঁচে থাকলে বর্তমান পদ্মার এ বেহাল দশা দেখে তার কি বর্ণনা দিতেন। আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে। বৈশাখ মাসে তার হাটু জল থাকে। অনবদ্য কবিতাটি লিখেছিলেন নাগর নদের তীরে বসে। এখন সেই নদে বৈশাখে হাটু জল নয় ফাল্গুনেই শুকিয়ে হয় খটখটে।
পদ্মাসহ বৃহত্তর নদীগুলো নিয়ে বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অনেক লোক সঙ্গীত। যার মধ্যে রয়েছে আব্দুল আলীমের দরাজ কন্ঠের বল আমারে তোর কিরে আর কুল কিনারা নাই.........। কিংবা পদ্মার ঢেউরে মোর শূন্য হৃদয় নিয়ে যারে........। পদ্মা এখন আর শূন্য হৃদয় নিয়ে যায়না। খরশ্রোতা পদ্মার ঘোলা জলের মায়াবী ডাক আর মানুষের ঘুম ভাঙ্গায় না। এখন যেদিকে চোখ যাবে সেদিকে শুধু বালিচর। যেন মরু সাহারার আরেক রুপ। যা দেখে শূন্য হৃদয়টা আরো শূন্য হয়ে যায়। এই পদ্মা এই মেঘনা যমুনা সুরমা নদী তটে। আমার রাখাল মন গান গেয়ে যায়...........। এসব নদী তটে এখন আর শোনা যায়না রাখালীয়া বাঁশির সুর। ধানসিড়ি মধুমতি ও আর বয়ে যায়না নিরবধি। ওকি গাড়িয়াল ভাই .........হাঁকাও গাড়ি চিলমারির বন্দরে। সেই বন্দর অস্তিত্ব হারিয়েছে। ভূপেন হাজারিকার ভরাট কন্ঠের গঙ্গা আমার মা পদ্মা আমার মা। ভারতের হিন্দুরা গঙ্গাকে পবিত্র নদী মনে করে, পুজা অর্চনা করে। সেই মা গঙ্গার উপরও ভারতের পানি জল্লাদরা খড়গ চালাতেও দ্বিধা করেনি। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝিরা আজ নিস্পলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে পানি শূন্য ধু ধু বালিচরের দিকে। সেই কাব্যের প্রাণের পদ্মা বিশাল বালিচরের তপ্ত কড়াইয়ে ভাজা ভাজা হয়ে গেছে। যে পদ্মা যমুনা মেঘনা তিস্তার বিশাল স্রোতধারা আমাদের করত সিক্ত সঞ্জীবিত, তা আজ কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। কৃষি মৎস্য যোগাযোগ জীব বৈচিত্র আর সবুজতা সব চাপা পড়েছে বিশাল বালিচরের নীচে। কবি শিল্পী সাহিত্যিকদের স্বপ্নময় নদীগুলো আজ দুঃস্বপ্নের হাহাকারে বিদীর্ণ। বাংলাদেশের নদ নদী গুলোর মরণ দশার কারন খুঁজতে গেলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে ভারতীয় পানি আগ্রাসন। কেননা বাংলাদেশে প্রবাহিত অধিকাঙ্ক নদীর উৎস্য স্থল থেকে ভারত হয়ে এদেশে এসেছে। প্রবাহমান অভিন্ন ৫৪ নদীর উপর শত সহ¯্র ড্যাম ব্যারেজ আর হাজার হাজার মাইল ক্যানেল করে পানির উপর আগ্রাসন চালিয়েছে। মানা হয়নি আর্ন্তজাতিক আইন রীতিনীতি। পানি আগ্রাসনের ফলে ভাটির দেশে যে ভয়াবহ জীবন মরণ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তাকে কখনোই সমস্যা হিসাবে দেখেনি। বরং বিভিন্ন ভাবে প্রতারণা আর দাদাগিরি করে তাদের পানি আগ্রাসন কার্যক্রম আরো জোরদার করেছে। এরসাথে মরার উপর খাঁড়ার ঘা এর মতো আমাদের অপরিনামদর্শী কর্মকাÐ অবস্থাকে আরো জটিল করে তুলেছে। যে নদী শত বছর নাব্য থেকে আমাদের সমৃদ্ধ করেছে তার উপর খড়গ চালিয়েছে। আমাদের নীতি নির্ধারক পরিকল্পনাবিদ সর্বোপরি আন্তঃমন্ত্রনালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে বিভিন্ন ব্রীজ বাঁধ সড়ক করায় নদীগুলো আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক ফারাক্কায় দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠিকে জীবন মৃত্যুর কাছাকাছি নিয়ে গেছে। ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের হিসাবে প্রতি বছর ক্ষতির পরিমান পাঁচশো কোটি টাকা। ফারাক্কা ব্যারেজের ভয়াবহতা নিয়ে দেশের প্রথিতযশা সাহিত্যিক গবেষক মরহুম আহম্মদ সফা তার এক নিবন্ধে বলেছেন। ফারাক্কা বাংলাদেশের উপর নামিয়েছে নাগাসাকি হিরোসিমার চেয়েও ভয়ঙ্কর বিভিষিকা। ফারাক্কা ব্যারেজের উপর দাড়িয়ে বন্ধুবর কবি আব্দুল হাই শিকদারের অনুভুতি ছিল “এতো ফারাক্কা বাঁধ নয় এ হলো মানব সভ্যতার বদ্ধভূমি। দক্ষিন এশিয়ার কশাইখানা। হিটলারের নাজিক্যাম্প। এ হলো সীমারের ছুরিকা ক্লাইভের খঞ্জর। এ এক নতুন কারবালা। ফারাক্কা ব্যারেজের এপার ওপার দেখে কবির কাতর ক্রন্দন ধ্বনি ফারাক্কা সৃষ্ট বিপন্ন মানবতার ক্রন্দন ধ্বনি। দেশের এক বৃহৎ জনগোষ্টির এ কান্না। ভারতের আগ্রাসী পানি নীতি ও কর্মকাÐের কারনে সেখানেও প্রতিবাদ উঠেছে। ফারাক্কার কারনে মারাত্মক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ মালদহ ও বিহার রাজ্যে। বন্যা নদী ভাঙ্গন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। নদী ভাঙ্গনে হাজার হাজার মানুষ ভিটে মাটি ছাড়া হয়েছে। বন্যায় ডুবছে বিহার। বিহারের মূখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার ফারাক্কা ব্যারেজ ভেঙে ফেলার দাবি জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছেন ফারাক্কা ব্যারেজের কোন সুফল নেই। ফারাক্কা ব্যারেজের কারনে ভয়াবহ ক্ষতির কথা তুলে ধরেছেন। অথচ এই নীতিশ কুমার ২০১১ সালে এক সভায় ফারাক্কা ব্যারেজের পক্ষে কথা বলেছিলেন। আজ যখন তার রাজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তখন তার হুঁস ফিরেছে। বাস্তবতার নিরিখে সোচ্চার হয়েছেন ব্যারেজ ভেঙে দেবার জন্য। এর আগে ২০১৪ সালে ভারতের নয়জন পরিবেশ কর্মী মৎস্যজীবী তাদের ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইবুনালে ফারাক্কা ব্যারেজের কারনে ভয়াবহ ক্ষতির হিসাব তুলে ধরে ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করেন। নব্বই দশকে পশ্চিম বঙ্গের নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র তার গঙ্গা ভাঙ্গনের ইতিকথা বইতে এর বিরুপ প্রতিক্রিয়া সর্ম্পকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন এবং ব্যারাজ এক সময় অকেজো হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন। ফারাক্কা বাঁধ তৈরীর পরিকল্পনার সময় বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছিলেন। ১৯৪১ হতে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত চালানো সমীক্ষায় নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়টা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের অভিমত উপেক্ষা করে ১৯৫৭ সালে ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মাণ শুরু করে। পশ্চিমবঙ্গের সে সময়কার প্রধান প্রকৌশলী কপিল ভট্রাচার্য এ পরিকল্পনার বিরোধীতা করেছিলেন বলে এখন তাকে পাকিস্তানের এজেন্ট বলে বিদ্রæপ করেছিল। পরে আমেরিকান বিশেষজ্ঞ উইপেনকে সমীক্ষার দায়িত্ব দেয়া হলে তিনিও ফারাক্কা ব্যারেজের বিরুপ প্রতিক্রিয়ার শঙ্কা ব্যক্ত করেন। এখন সেসব অভিমত ভয়াবহ ভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশতো বটে ভারতের জন্য বিপর্যয় ডেকে এনেছে। দাবি উঠেছে বাঁধ ভেঙ্গে দাও। গঙ্গার পানি অনৈতিকভাবে প্রত্যাহার করে নেবার প্রতিবাদ উঠেছে নেপালেও। নেপাল থেকে ‘‘ওয়াটার কমান্স ফোরাম’’ নামে একটি সংগঠন ভারতের গঙ্গা আর বাংলাদেশের পদ্মার তীর পরিদর্শন ও সমাবেশ করে ফারাক্কা ব্যারেজের নির্মাণের ফলে কি ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে তার বিবরণ তুলে ধরেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন নেপালের কল্পনা বিন্দু, নদী রক্ষা কমিটির সহ-সভাপতি পবিতা নিউপালে। তারা ঢাকায় গিয়ে সেমিনার করে। ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন। গত ফেব্রæয়ারীর প্রথম সপ্তাহে আসামের গোহাটিতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার এর উদ্যোগে তিনদিন ব্যাপি নদী বিষয়ক সম্মেলন হয়। যাতে ভারত নেপাল চীন বাংলাদেশ ও ভুটানের নদী বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অঙ্ক নেয়। যেখানে উঠে আসে উজানের দেশ কর্তৃক পানি আগ্রাসনের বিষয়টা। অভিন্ন নদীর পানিতে শুধু উজানের নয় ভাটির দেশের নায্য অধিকার। এ অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টা উঠে আসে। যদিও সেখানে ব্র²পুত্র পানি নিয়ে বেশী আলোচনা হয়। পানি আগ্রাসনের বিষয় সব দেশের সুশিল সমাজকে নদী রক্ষার জন্য সর্ব্বোচ্য ভূমিকা রাখার আহবান জানানো হয়। সম্মেলনে ভারত বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের নিস্ক্রিয়তা নিয়ে কঠোর সমালোচনা হয়। উজানের দেশ ভারত কর্তৃক এক তরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার মোটেই আইন সম্মত নয় বলে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়। এব্যাপারে নাগরিক সমাজকে আরো সোচ্চার হবার আহবান জানানো হয়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জানুয়ারী পদ্মা ও যমুনার তীর স্থির করন এবং ভূমি পুনঃরুদ্ধারে প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পের রুপরেখা উপস্থাপন সংক্রান্ত এক সভায় বলেন আমাদের নদীগুলো খরশ্রোত ছিল। ফারাক্কাসহ ভারতের দেয়া বিভিন্ন বাঁধের কারনে আমাদের নদীর প্রবাহ কমে গেছে। আগে পানির যে ভাবে প্রবাহ ছিল এখন সবস্থানে তা নেই। পলি আসে সিল আসে এই সিল জমে পলি জমে। আমাদের নদীগুলো নাব্য হারিয়ে যাচ্ছে। নদীগুলোর স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বজায় রাখার জন্য প্রতি বছর যথা সময়ে ড্রেজিং কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তাতে সারা দেশের নদীগুলোর বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটেছে। বাংলাদেশ ভারত নেপাল সর্বত্রই ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও বাংলাদেশের এক শ্রেণীর কথিত বুদ্ধিজীবী এ ব্যাপারে একবারে নীরব। এসব দলকানা পোষমানা উচ্ছিষ্টভোগী বুদ্ধিজীবী পরিবেশবিদ পান থেকে চুন খসলেই বিভিন্ন বিষয়ে সরব হোন। লেখায় বিবৃতিতে আর টকশোতে কথার তুবড়ি ছোটান। কিন্তু ভারতের পানি আগ্রাসনের ভয়াবহতা নিয়ে তেমন কিছু বলেন না। পাছে যদি দাদারা নাখোশ হন। তারা বিষয়টাকে বিশ্ব জলবায়ুর পরিবর্তন বলে কখনো কখনো উল্লেখ করে দায় সারেন। ভাসুরের নাম মুখে নিতে মানা বলে ভারতের পানি আগ্রাসনের কথা ভুল করেও বলেন না। কারো কারো ভূমিকা জ্ঞান পাপির মত। অন্যদিকে যারা সচেতন নাগরিক তারা সব দেখে শুনে না পারেন বলতে না পারেন সইতে। তাদের বলার ও লেখার পরিসরও ছোট। তারপরেও প্রতিবাদ জানান।

বাংলাদেশ আজ ভারতের পানি আগ্রাসনের কবলে পড়ে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। সামনে আরো কঠিন সময় আসছে। ভারত সমস্যা সমাধানের চেয়ে আরো আটো সাঁটো পানি শোষন নীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ওরা বুঝতে পারছেনা পানির অভাবে ভাটির দেশে বড় ধরনের সামাজিক সমস্যার উদ্ভব হবে তা ভারতকেও আক্রান্ত করবে। যার আলামত ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সংশ্লিষ্ট দেশগুলো নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে তাদের আগ্রাসী পানি নীতি থেকে বিরত রাখতে হবে। পানির নায্য অধিকার আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে আর্ন্তজাতিক আদালতে যেতে হবে। আজ সবাইকে উপলদ্ধি করতে হবে নদী তাদের জীবন। নদী বাঁচলে মানুষ বাচবে। নদী না থাকলে মানুষের জীবন হয়ে উঠবে দুর্বিসহ সমাজ ও সভ্যতা তছনছ হয়ে পৌছে যাবে ধ্বংসের দিকে। আমাদের জীবনে নেমে আসছে অজানা এক ভয়ঙ্কর ভবিষ্যত।

https://www.dailyinqilab.com/article/121259