১২ মার্চ ২০১৮, সোমবার, ১০:৩৯

পাউবোর দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের দুঃসাহস

প্রকল্প শুরুর আগেই এ যেন ডাকাতি

প্রয়োজনের তুলনায় কাজের পরিধি ৪৫০ গুণ বেশি দেখানো হয়েছে * টাস্কফোর্স কমিটির রিপোর্ট দেখে হতবাক সবাই, ১০ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত * দুর্নীতি টিকিয়ে রাখতে এবার টাস্কফোর্স প্রধানকে সরাতে একাট্টা প্রভাবশালীরা

পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) এতদিন দুর্নীতি হতো প্রকল্প শুরু হওয়ার পর। সেই দুর্নীতি ঠেকাতেই হর্তাকর্তারা ছিলেন একরকম কাহিল। কিন্তু এখন তো রীতিমতো প্রকল্প শুরুর আগেই দুর্নীতির মহাফাঁদ বসিয়েছেন পাউবোর বেশিরভাগ প্রকৌশলী। তারা প্রকল্প প্রাক্কলনের সময়ই প্রয়োজনের তুলনায় ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫০ পার্সেন্ট বেশি খরচ দেখিয়ে দরপত্র দিচ্ছেন। অর্থাৎ ১ টাকার কাজ করা হচ্ছে সর্বনিম্ন থেকে সাড়ে চারশ’ টাকায়। ফলে যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে।

ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তারা প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগেই বড় দাও মারছেন। যত বড় প্রকল্প, তত বড় ভাগাভাগি। এভাবে জনগণের ট্যাক্সের টাকা হরিলুট হচ্ছে। প্রকল্প যাচাইয়ের সময়ই টাস্কফোর্সের হাতে ভয়াবহ এ চিত্র ধরা পড়ে। এ ঘটনায় সম্প্রতি ১০ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। শোকজ করা হয় দুই প্রধান প্রকৌশলীসহ আরও তিনজনকে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, এ তো রীতিমতো ডাকাতি। এভাবে দুর্নীতি হতে পারে, ভাবাই যায় না। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডে এ তো রীতিমতো ডাকাতির আয়োজন। সরকারের উচিত হবে শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া। না-হলে এটি সংক্রামক ব্যাধির মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, ‘দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা শুধু ক্ষমতার অপব্যবহারই করেনি, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিশ্বাসও ভঙ্গ করেছেন।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, পাউবোর টাস্কফোর্সের শক্তিশালী অবস্থানের কথা শুনে ভালো লাগল। সরকারের উচিত হবে টাস্কফোর্সকে আরও শক্তিশালী করা এবং গুরুত্ব বিবেচনা করা। কিছুতেই যেন সরকার দুর্নীতিবাজদের কোনো প্রশ্রয় না দেয়। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা আরও কঠোরভাবে কার্যকর করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, না-হলে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। যাদের এখনও শাস্তির বাইরে রাখা হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডে যখন হইচই অবস্থা, তখন দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটরাও বসে নেই। তারা টাস্কফোর্সকে কব্জায় নিতে একরকম আদা জল খেয়ে মাঠে নেমেছে। এরই মধ্যে এ চক্রের পালের গোদারা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে দেখা-সাক্ষাৎ করে টাস্কফোর্স প্রধান কাজী তোফায়েল হোসেনকে অকার্যকর করার সব ব্যবস্থাই পাকাপোক্ত করে ফেলেছে। অথচ মন্ত্রণালয়ের অনেকেই মনে করেন, পাউবোর প্রকল্পগুলোর দুর্নীতির রাহুগ্রাস ঠেকাতে হলে কাজী তোফায়েলের বিকল্প নেই। তার সততা, দক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন তাকে আহ্বায়ক করে টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাই শক্তভাবে এ দুর্নীতি দমন করতে হলে কাজী তোফায়েল যাতে নির্বিঘ্নে আরও সাহসের সঙ্গে কাজ করতে পারেন, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রকল্পের শুরুতেই যেভাবে ডাকাতি : পাউবোর প্রকৌশলীদের নতুন সিস্টেমে দুর্নীতি ও লুটপাটের চিত্র ফুটে ওঠে দুর্নীতিবিরোধী টাস্কফোর্সের সরেজমিন জরিপে। টাস্কফোর্স প্রধান কাজী তোফায়েল হোসেন চাঞ্চল্যকর এ দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে পাউবোর মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন দেন। যুগান্তরের তথ্যানুসন্ধানে এসব প্রতিবেদনের কয়েকটি কপি পাওয়া যায়।
এতে দেখা যায়, চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড় মিঠানালা ও গুইট্যাখালী খাল খনন এবং একটি অংশে বাঁধ নির্মাণ কাজের প্রি-ওয়ার্ক জরিপে বড় ধরনের অনিয়ম তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ‘যৌথ জরিপের তুলনায় এ এলাকার একটি প্রকল্পের খাল খননের তিনটি স্থানে ১৭৩ পার্সেন্ট, ২৮ পার্সেন্ট ও ৩৬ পার্সেন্ট বেশি প্রাক্কলন তৈরি করা হয়। যা সরকারের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি। এর আগেও মাটির কাজের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অনিয়ম লক্ষ করা গেছে।
এবারের জরিপেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এ ধরনের ব্যাপক অনিয়ম বারবার দৃশ্যমান হচ্ছে, যা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। উদ্দেশ্যপ্রণেদিতভাবে আগের মতো বর্তমান প্রি-ওয়ার্ক সার্ভেতেও ভেরিয়েশন করা হয়েছে, যা চাকরিবিধির পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’ ২১ জানুয়ারি দেয়া টাস্কফোর্স প্রধান কাজী তোফায়েল হোসেনের আরেকটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ‘চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ইনটেরিয়র ডাইক (বন্যার পানি ঠেকাতে চতুর্মুখী বাঁধ) নির্মাণে বড় ধরনের অনিয়ম পাওয়া যায়।

এ বাঁধ নির্মাণের প্রি-ওয়ার্ক যাচাই করতে গিয়ে টাস্কফোর্স দেখতে পায় যৌথ জরিপের তুলনায় ৫০ দশমিক ৮ পার্সেন্ট মাটি বেশি বেশি ধরা হয়েছে।’ গত বছরের ২০ ডিসেম্বর দেয়া চট্টগ্রামের মহামায়া খাল পুনঃখনন কাজের প্রি-ওয়ার্ক প্রতিবেদনে টাস্কফোর্স প্রধান উল্লেখ করেন, ‘যৌথ জরিপের তুলনায় ৪৪৬ দশমিক ৮৯ পার্সেন্ট বেশি মাটি খননের সংস্থান রাখা হয়, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভয়াবহ দুর্নীতির ঘটনা।’ ঝালকাঠির বাঁধ নির্মাণের ৬টি প্যাকেজেও অবিশ্বাস্য রকম দুর্নীতির তথ্য পায় টাস্কফোর্স। দেখা যায়, কাজের দরপত্র মূল্যায়নেও অনিয়ম করেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।
পরে প্রথম দরপত্র বাতিল করে পুনঃদরপত্র আহ্বান করে কার্যাদেশ চূড়ান্ত করা হয়।’ এর আগে একই প্রকল্পের ক্ষেত্রে ১৮ জানুয়ারি দেয়া টাস্কফোর্স প্রধানের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রয়োজনের তুলনায় ৫০ দশমিক ৮ পার্সেন্ট মাটি বেশি ধরে প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীর দশমিনা এলাকায় একটি বাঁধ নির্মাণের তিনটি স্থানে ৩৪ পার্সেন্ট, ১০৬ পার্সেন্ট ও ১৯৪ পার্সেন্ট অতিরিক্ত মাটির সংস্থান রাখা হয়।’ প্রতিবেদনে প্রি-ওয়ার্ক জরিপ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টদের সাময়িক বরখাস্ত ও প্রধান প্রকৌশলীসহ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে কৈফিয়ত তলব করতে মহাপরিচালককে তিনি পত্র দেন।

এ বিষয়ে টাস্কফোর্সের জরিপ রিপোর্টের পর একজন নির্বাহী প্রকৗশলীসহ ১০ জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া দু’জন প্রধান প্রকৌশলী, দু’জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ এনে শোকজ করা হয়। সাময়িকভাবে বরাখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কর্মরত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ উল্ল্যাহ, উপসহকারী প্রকৌশলী সতেজ দেওয়ান, উপসহকারী প্রকৌশলী শৈ মং সিং, পটুয়াখালীর বাউফলে কর্মরত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল, উপসহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন আকন্দ ও গলাচিপার উপসহকারী প্রকৌশলী নুরুল হুদা। পরে রাজনৈতিক তদবিরে জাবেদ ইকবালের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করেন পাউবোর মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান। এছাড়া একই ঘটনায় বরিশালের প্রধান প্রকৌশলী সাজিদুর রহমান সরদার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মজিবর রহমান, পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান এবং চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী একেএম সামছুল করিম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ছিদ্দিকুর রহমান চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী খ ম জুলফিকার তারেককে দায়িত্বে অবহেলার জন্য শোকজ করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এখন একাট্টা হয়ে টাস্কফোর্সের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পরও একই ধরনের অপচেষ্টা করে দুর্নীতিবাজ চক্র। কিন্তু তিনি দুর্নীতিবাজদের কৌশল বুঝতে পেরে টাস্কফোর্সকে আরও শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হন। এরপর কাজের প্রাক্কলন তৈরিতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কাজ দেখানোর প্রবণতা কিছুটা কমে আসে। অপরদিকে বিল আটকে যাওয়ার ভয়ে ঠিকাদাররাও কাজের মান ভালো করার চেষ্টা করেন।

দুর্নীতিবাজদের যত অপচেষ্টা : পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন পদস্থ কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ‘পাউবোর গুরুত্বপূর্ণ এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে চিফ ইঞ্জিনিয়াররা ব্যক্তিস্বার্থে টাস্কফোর্স প্রধান কাজী তোফায়েল হোসেনের বিরুদ্ধে এখন একাট্টা।’ তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী প্রতিটি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগে টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। এ রকম পর্যালোচনা করতে গিয়ে বরিশাল ও চট্টগ্রাম জোনের বেশ কিছু প্রকল্পের শুরুতেই বড় ধরনের ঘাপলা ধরা পড়ে। দেখা যায়, নদীতীর সংরক্ষণ, নদী খনন ও বিভিন্ন স্থানে মাটি ফেলে বাঁধ সংস্কারের কাজে যেভাবে কাজের প্রাক্কলন করা হয়েছে, বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে তার প্রয়োজনই নেই। অর্থাৎ প্রয়োজন না থাকলেও অতিরিক্ত খরচ ধরে প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে এভাবে লুটপাটের বড় আয়োজন করেছে। এসব বিষয়ে সবিস্তারে রিপোর্ট তুলে ধরে টাস্কফোর্স।’ সম্প্রতি এ রিপোর্টের ভিত্তিতে বিভিন্ন পর্যায়ের সংশ্লিষ্টদের সাময়িক বরখাস্ত ও শোকজ করা হলে তারা টাস্কফোর্স থেকে কাজী তোফায়েলকে সরিয়ে দিতে অপচেষ্টা শুরু করে।

পিরোজপুরের একজন জনপ্রতিনিধিসহ কয়েকজন ঠিকাদার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে দেখা করেন। সেখানে আলোচনার পর পাউবো থেকে টাস্কফোর্স বিকেন্দ্রীকরণের প্রস্তাব আসে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘পাউবোর এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক। সরকারের শেষ সময়ে এসে পাউবোর এমন প্রস্তাবকে গভীর ষড়যন্ত্র মনে করছেন তিনি। টাস্কফোর্সের ক্ষমতা খর্ব করার প্রস্তাবটি নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক রোববার যুগান্তরকে বলেন, ‘প্রস্তাব পেয়েছি। সোমবার এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে। তবে আমি সুস্পষ্ট করে বলতে চাই, দুর্নীতি প্রশ্রয় পাবে- এমন কোনো পদক্ষেপে আমি মত দেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পের কাজের মান উন্নীত করতে এ পর্যন্ত অনেক বেগ পেতে হয়েছে।’

পাউবোর মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘টাস্কফোর্স বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায় থেকে চাওয়া হয়।’ আপনাদের প্রস্তাবটি কী- জানতে চাইলে ডিজি বলেন, ‘চিফ ইঞ্জিনিয়ারের আন্ডারে দু’জন করে সহকারী প্রকৌশলী দিয়ে দেব। তারা টাস্কফোর্স সদস্য হিসেবে থাকবে। তারা চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও চিফ মনিটরিংয়ের কাছে রিপোর্ট করবে। এরপর চিফ মনিটরিং কো-অর্ডিনেট করবে।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি পাউবোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত টাস্কফোর্স বিকেন্দ্রীকরণের প্রস্তাবটি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পে মানসম্মত কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে টাস্কফোর্স কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এরপর ওই বছরের ২৪ অক্টোবর তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী তোফায়েল হোসেনকে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যের প্রথম কমিটি ঘোষণা করে পাউবো। বর্তমানে এই টাস্কফোর্সের সদস্য সংখ্যা ৪১ জন। ওই সময়ে দফতরাদেশে টাস্কফোর্সের কার্যপরিধিও ঠিক করে দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘টাস্কফোর্স কমিটি নদীতীর সংরক্ষণ কাজ নিয়মিতভাবে পরিদর্শনপূর্বক প্রতিবেদন অনুযায়ী সিসি ব্লক, বোল্ডার, হার্ডরক, জিওব্যাগের সংখ্যা ও পরিমাণ যাচাইপূর্বক নির্ধারণ করবে। টাস্কফোর্সের দ্বারা পরীক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত মালামাল ডাম্পিং করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী কর্তৃক ব্লকসহ যাবতীয় মালামাল ও জিও ব্যাগ সরবরাহের প্রতিবেদন যথাযথভাবে টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক এবং চিফ মনিটরিংকে নিয়মিত প্রদান করতে হবে। বিভিন্ন জোনের কাজ পরিদর্শনের জন্য টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক সুবিধা অনুযায়ী টিম গঠন করে মাঠপর্যায়ে পাঠাবেন।’

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/26522