১২ মার্চ ২০১৮, সোমবার, ১০:২৩

২৬ হাজার প্রাথমিক স্কুল পাঁচ বছরেও জাতীয়করণ হয়নি

নানা শর্ত জুড়ে জটিলতা সৃষ্টি

পাঁচ বছরেও প্রাথমিক স্কুলের জাতীয়করণের কাজ সম্পন্ন হয়নি। এক সাথে সারা দেশে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয় সরকার। এসব প্রতিষ্ঠানে এক লাখ তিন হাজার ৮৪৫ জন শিক কর্মরত আছেন। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় প্রাথমিকের শিকেরা তাদের বেতনভাতা পাচ্ছেন না। শিকেরা জানান, বেতন ছাড়া মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন তারা। বিষয়টি একাধিকবার প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিা অধিদফতরে জানিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না। শিকেরা বলছেন, পাঁচ বছর পার হলেও নানা শর্তজুড়ে দিয়ে বিষয়টি নিরসনে জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আগামী জুন মাসের আগে তৃতীয় ধাপের জাতীয়করণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। শেষ ধাপের কাজ শেষ হতে কিছুটা সময় বেশি লাগছে। তিনি জানান, প্রথম ধাপে জাতীয়করণকৃত শিকেরা ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে বকেয়াসহ বেতনভাতা পাচ্ছেন। দ্বিতীয় ধাপের শিকেরা ২০১৩ সালের জুলাই থেকে বকেয়াসহ বেতনভাতা পাবেন। আর তৃতীয় ধাপের শিকেরা ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, নিবন্ধিত, পাঠদানের অনুমতিপ্রাপ্ত, কমিউনিটি এবং সরকারি অর্থায়নে বা এনজিও পরিচালিত স্কুলগুলোকে তিন ধাপে সরকারীকরণ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে এমপিওভুক্ত ২২ হাজার ৯৮১টি বেসরকরি প্রাথমিক স্কুলের জাতীয়করণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে সরকারি আদেশও জারি করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে দুই হাজার ২৫২টি স্কুলের জাতীয়করণ করা হয়েছে। তৃতীয় ধাপের ৯৬০টি স্কুল জাতীয়করণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

শেষ ধাপের মাঠ জরিপ কাজ ২০১৪ সালে শেষ হয়। তবে এ নিয়ে ধীরে চলো নীতিতে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃতীয় ধাপের স্কুলের গেজেট প্রকাশ করা হলেও শিকদের গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। গত ছয় মাস আগে মন্ত্রণালয় থেকে মাঠপর্যায়ে এক চিঠি দেয়া হয়। এতে থানা-জেলা এবং কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স স্কুল ও শিক যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিবেদন ফের পাঠাতে বলেছে। এ জন্য তৃতীয় ধাপের শিকদের জাতীয়করণ প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ শিকদের গেজেট প্রকাশ আটকে গেছে।

এ প্রসঙ্গে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক শিকদের চাকরি জাতীয়করণের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পাঁচ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। নানান জটিলতায় দীর্ঘ সময় পরে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের কাজ শেষ হয়েছে। এখন তৃতীয় ধাপের স্কুলগুলোর গেজেট প্রকাশ করা হলেও শিকদের গেজেট প্রকাশ নিয়ে গড়িমসি করা হচ্ছে। শিকেরা বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে সারা দেশের ২৬ হাজার নিবন্ধিত, পাঠদানের অনুমতিপ্রাপ্ত, কমিউনিটি এবং সরকারি অর্থায়নে বা এনজিও পরিচালিত স্কুল জাতীয়করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/301015