১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ৯:৪২

মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার প্রতিবেদন

‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৪৯ জনের মৃত্যু

২০১৭ সালে বন্দুকযুদ্ধে ১৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১০৭ জন, র্যা ব কর্তৃক ৩৯ জন ও অন্যান্য বাহিনী কর্তৃক ৯ জন। পুলিশ ও জেল হেফাজতে মৃত্যু হয় ৪৬ জনের। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও অন্যান্য সহিংসতার ঘটনায় ছয় হাজার ৬০২ জন নিহত এবং ২৪ হাজার ৬১৬ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার (বিএমবিএস) ২০১৭ সালের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

রাজধানীর শাহবাগে গতকাল বিএমবিএসের নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা জানান, বন্দুকযুদ্ধে টার্গেট করা ব্যক্তিই নিহত হচ্ছেন। এটি বন্দুকযুদ্ধ নয়। এটি হত্যা। এ দিকে, শিশু হত্যা ও নারী নির্যাতন ছিল পুরো বছরজুড়েই। পারিবারিক কোন্দলে নিহত ও আহত এবং ধর্ষণ ও শিশু হত্যা বাড়ছে। বাড়ছে নারী নির্যাতন, আত্মহত্যা, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সহিংসতা, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।

বিএমবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গেল বছর ৩৫২ শিশুকে হত্যা এবং ২১ শিশু নির্যাতনের শিকার হয়। এর মধ্যে বাবা-মার হাতে নিহত হয় ৪২ জন শিশু। ৭৯৫ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। যৌতুকে প্রাণ গেছে ৬০ নারীর। আহত হয়েছেন ৬২ জন নারী। পারিবারিক কলহে ৪০৭ জন নিহত ও আহত হন ১২০ জন। সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত ৮৯৭ জন ও আহত হন ৫৯২ জন। ৬৫৩ জন করেছেন আত্মহত্যা। সামাজিক অসন্তোষের শিকার হয়ে নিহত ১৭১ জন ও আহত পাঁচ হাজার ৭৮১ জন।
রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ৩৩ জন ও আহত দুই হাজার ১৭৭ জন। এর পেছনে ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দল, আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডার বাণিজ্য, এলাকা দখল, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ ও মতার দাপট। বেশির ভাগ ঘটনাই মতাসীন দলের মধ্যে। ভুল চিকিৎসায় ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ হন ১১৭ জন। গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ৫১ জন ও আহত ৬৬ জন। বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক অজুহাতে গণগ্রেফতার হয়েছেন পাঁচ হাজার ৬৩১ জনের বেশি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ৩২ ধারার মাধ্যমে গণমাধ্যম ও মানুষের বাকস্বাধীনতাকে হয়রানির মুখে ফেলা হয়েছে। এ ধারায় হয়রানির শিকার হতে পারেন সাংবাদিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা। তথ্যপ্রযুক্তি ও নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারার পরিবর্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়ায় এর ৩২ ধারা বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা। তিনি বলেন, আইনটি পাসের আগে বিভিন্ন স্তরে আরো আলোচনার দাবি রাখে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/295174