২৫ ডিসেম্বর ২০১৭, সোমবার, ৯:১৫

রোহিঙ্গাদের সহায়তার ৩৩৩২ টন খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হতে চলেছে

বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তিন হাজার তিনশ’ ৩২ টন খাদ্যশস্য নষ্ট হতে চলেছে। এক মাসের মধ্যে এসব খাদ্যশস্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। তাই আগামী ২০ দিনের মধ্যে বিতরণ করতে চায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। এ অল্প সময়ের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে শ্রমিক মজুরি, পরিবহন ও হ্যান্ডেলিং খাতে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। গত ১২ই ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠিয়েছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আলী হোসেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য ৩৩৩২ টন সহায়তা বিভিন্ন ব্যক্তি/সংগঠন/সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন দেশ থেকে সময়ে সময়ে পাওয়া গেছে।

এরপর এসব পণ্য কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা খাদ্যগুদামে মজুত করা হয়। মজুত করা ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে শুধু খাদ্যসামগ্রী রয়েছে ৩৩৩২ টন। দুর্যোগ সচিবের কাছে পাঠানো কক্সবাজারের ডিসি’র চিঠিতে বলা হয়েছে, ৩৩৩২ টন খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে কিছু কিছু খাদ্যসামগ্রীর মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য জরুরিভাবে খাদ্যসামগ্রীগুলো বিতরণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এজন্য ২০ দিনের মধ্যে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি খাদ্যসামগ্রী বিতরণে শ্রমিক মজুরি, পরিবহন ও হ্যান্ডেলিং খাতে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। একই চিঠিতে ৭৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৫২ টাকা ব্যয়ের অনুমতি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে কক্সবাজারের ডিসি’র চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্নভাবে খাতওয়ারি বিভাজন করে ৭৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৫২ টাকার ব্যয় বিবরণী পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে বরাদ্দ বা স্থানীয় পর্যায়ে গঠিত ব্যাংক তহবিল থেকে ব্যয়ের অনুমতি পাওয়া যায়নি। তাই জেলা প্রশাসন তাদের পাঠানো চিঠিতে এক কোটি ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৫২ টাকা পরিশোধের বিষয়ে সদয় নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করেছে। এদিকে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা শিশুদের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা দিতে চায় আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ। এজন্য তারা গত অক্টোবরে সরকারের অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়। এর ভিত্তিতে বিষয়টি সম্পর্কে মতামত দিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠায়। এর ভিত্তিতে গত ২৮শে নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে কক্সবাজার ডিসি বলেছেন, ইউনিসেফ কর্তৃক কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ০৪-১৪ বছর বয়সের ১৫ হাজার শিশুকে বাংলা ও বার্মিজ ভাষায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকরা যেহেতু বাংলাদেশি নয় তাই বাংলা ভাষা ছাড়া তাদের বার্মিজ ভাষায় শিক্ষা দেয়া যেতে পারে। তাই ইউনিসেফের প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিসি’র সুপারিশ সংবলিত চিঠি’র ভিত্তিতে তারা প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিচ্ছেন। সহসাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউনিসেফ স্থাপন করবে উপানুষ্ঠানিক বার্মিজ স্কুল।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=97665