২৩ ডিসেম্বর ২০১৭, শনিবার, ২:৪০

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে আবারও সেই ২০১৪ এর মত একতরফা নির্বাচন হবে

দেশে ন্যূনতম আইনের শাসন বলতে কিছু নেই অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে কোন গণতন্ত্র নেই, কারো কথা বলার অধিকার নেই, চারদিকে লুটপাট চলছে, আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই। তিনি বলেন, প্রকাশ্যে দিনের বেলায় লোক তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। কোন বিচার নেই। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হকিকুল ইসলামের নির্বাচনী পথ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বোদা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মনসুর আলীর সভাপতিত্বে পথ সভায় বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ, পঞ্চগড়ের সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য রীনা পারভীন, পঞ্চগড় বোদা পৌরসভার ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী হকিকুল ইসলাম , বোদা উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক লাইলী বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পথ সভা শেষে বোদা বাসস্টান্ড চত্বরে ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, যদি সত্যিকার অর্থে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হয়, তাহলে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে। আপনাদের হাতে ধানের শীষ মার্কা তুলে দিয়ে গেলাম। আপনারা এর সম্মান রাখবেন। সারা বিশ্বে খালেদা জিয়াকে সম্মান দিয়েছে। আপনারাও ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করে দেশ নেত্রী খালেদা জিয়ার সম্মান রাখবেন।

তিনি বলেন, আজকে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম দিনদিন বেড়ে চলেছে। ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াতে চেয়েছিল, এখন ৬০ টাকা কেজিতেও চাল পাওয়া যায় না, সারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে আনতে হলে এবং সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হলে ধানের শীষের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে।

এদিকে গতকাল দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের কালিবাড়ির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ নির্বাচনে নিয়ম ভঙ্গ করেছেন অভিযোগ করে বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের ওপর এখনো আস্থা আনার মত তেমন কিছু হয়েছে বলে বিএনপি মনে করে না। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রণালীই ভুল। যাদের প্রতি সকলের আস্থা আছে তাদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছিলাম। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংগঠন। কাউকে তুষ্ট করার প্রয়োজন তাদের নেই। তারা যখন যে দলের সঙ্গে কথা বলেছেন তখন তাকেই সন্তুষ্ট করেছেন। দেশের রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলায় নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের বিকল্প নেই।

জোট সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জোটের উদ্যোগ আমরা সবসময় নিচ্ছি। আমরা সকলকে জোট করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং নতুন একটি জোট তৈরি হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে আমাদের জোট ভেঙে যায়নি। নির্বাচনের জন্য নয় আন্দোলনের জন্য জামায়াতের সঙ্গে আমাদের জোট ভাঙেনি।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেইং ফিল্ড না হলে আবারও সেই ২০১৪ এর মত জোর করে নির্বাচন হবে। জোর করে নির্বাচন চাপিয়ে দিলে জনগণ সে নির্বাচন মেনে নেবে না। রাজনৈতিক সংকট নিরসনও হবে না। এ সময় রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আবুল কালাম আজাদসহ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

http://www.dailysangram.com/post/312167