২৭ নভেম্বর ২০১৭, সোমবার, ১০:০৯

খেলাপি ঋণ স্পষ্ট না হওয়ায় ‘উদ্বেগজনক পর্যায়ে’ গেছে

খেলাপি ঋণ বাড়ার প্রকৃত কারণ স্পষ্ট না করে অধিকাংশ ব্যাংক এই ঋণের তথ্য গোপন করছে। এ ছাড়া দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দুই অঙ্কের কোঠা অতিক্রম করায় তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যাংকাররা। গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটরিয়ামে দু’দিনব্যাপী ‘বার্ষিক ব্যাংকিং’ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
গভর্নর ফজলে কবীরের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে বিআইবিএম মহাপরিচালক অধ্যাপক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ২০১৫ সালে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ৯ শতাংশের (মোট বিতরণ করা ঋণের) নিচে ছিল।
কিন্তু ২০১৬ সালে তা ১০ শতাংশ অতিক্রম করেছে। এটা দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। তৌফিক চৌধুরী বলেন, শুধু যে বড় বড় ঋণের ক্ষেত্রে খেলাপি বাড়ছে, তা নয়; বরং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) ঋণেও খেলাপির হার বাড়ছে। এজন্য ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ সুশাসন, দক্ষতা ও ঋণ ব্যবস্থায় দুর্বলতাকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি। তৌফিক চৌধুরী বলেন, ২০১৬ সালে খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশ অতিক্রম করার পরও ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ হওয়ায় ব্যাংকগুলো সহ্য করতে পারছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, শীর্ষ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্ব ও মূলধন সংরক্ষণে বিভিন্ন ধরনের নীতিমালা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি বলেন, এই সম্মেলনে যেসব পেপার উপস্থাপন করা হবে, তার মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন বিষয় উঠে আসবে; যা আমাদের নীতিমালা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। প্যানেল আলোচনায় ট্রাস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, অধিকাংশ ব্যাংকে খেলাপি ঋণের তথ্য গোপন করে। জিডিপিতে খেলাপি ঋণ ১২ শতাংশ দেখানো হয়। যদিও জিডিপিতে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ২০ শতাংশ। সিপিডি গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, খেলাপি ঋণের কোনো কারণ স্পষ্ট নয়। কী কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, তা তুলে আনতে হবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, নাকি ব্যবস্থাপনা কমিটির কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, তা দেখতে হবে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=93798