৫ মে ২০২৪, রবিবার, ৬:৩৭

দুধের উৎপাদন ৫১ লাখ টন বেশি দেখাচ্ছে ডিএলএস

গত বছরে প্রায় ৯৭ শতাংশ দুধের চাহিদা উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছে

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) তথ্য মতে, ২০২৩ সালে দেশে দুধের উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৫২ লাখ ৫২ হাজার টন। এই হিসাব বাড়তি দেখানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দেশে গত বছরে দুধের উৎপাদন হয়েছে এক কোটি এক লাখ ৮২ হাজার টন। দেশে দুধের উৎপাদন বেশি দেখানো হয়েছে ৫০ লাখ ৭০ হাজার টন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টিগ্রেটেড ডেইরি রিসার্চ নেটওয়ার্কের (আইডিআরএন) গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কশপ অন ডেইরি ইন্ডাস্ট্রি অব বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় কর্মশালার চেয়ার ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা। প্যানেল আলোচক ছিলেন আরলা ফুড বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লরেন্ট পন্টি।

বাংলাদেশের ডেইরিশিল্প বিষয়ে তথ্যভিত্তিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশু পুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ও আইডিআরএনের প্রধান সমন্বয়ক ড. মোহাম্মদ মহি উদ্দিন।

গবেষণার তথ্য উপস্থাপন করে তিনি বলেন, গত বছরে দেশে তরল দুধের চাহিদা ছিল এক কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার টন। এই চাহিদার মাত্র ৬৫ শতাংশ উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। যদিও ডিএলএসের তথ্য বলছে, গত বছরে প্রায় ৯৭ শতাংশ দুধের চাহিদা উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছে।

ফলে স্বয়ম্ভরতার তথ্য নিয়ে বেশ গরমিল দেখা যাচ্ছে।
আবার তরল দুধসহ চিজ, বাটার, দধি ও অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের চাহিদা বিবেচনায় নিলে গত বছরে মাত্র ৫৬ শতাংশ চাহিদা দেশের উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছে। যদিও এ ক্ষেত্রে ডিএলএসের তথ্য বলছে, দেশে উৎপাদনের মাধ্যমে চাহিদা পূরণ করা হয়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ।

আইডিআরএনের তথ্য কতটুকু গ্রহণযোগ্য—কালের কণ্ঠ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে ড. মহি উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্বের উন্নত দেশের পাঁচটি গ্রহণযোগ্য মডেল নিয়ে আমাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। উৎপাদন ও চাহিদার তথ্য সঠিকভাবে নির্ণয় করার জন্য সর্বোচ্চ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়েছে।

আমাদের তথ্য নিয়ে ভুল বোঝার কোনো অবকাশ নেই। এ ছাড়া আমাদের তথ্যগুলো প্রতিনিয়তই আমরা ডিএলএসকে সরবরাহ করছি। তাদের পক্ষ থেকে কখনো নেতিবাচক বা ইতিবাচক পরামর্শ আসেনি।’ ডিএলএসের দুধ উৎপাদনের তথ্যের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, কোনো একটি বছরে ৪০ শতাংশের বেশি দুধ উৎপাদন দেখিয়েছে ডিএলএস। এটি কোনোভাবেই হতে পারে না। গত কয়েক বছর ডিএলএসে বিশেষজ্ঞ প্যানেল যুক্ত হওয়ার পর উৎপাদন ১০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে না।

কর্মশালায় জানানো হয়, আইডিআরএনের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে প্রতিদিন জনপ্রতি তরল দুধের চাহিদা ছিল ২৫০ মিলিলিটার। সেই হিসাবে প্রতিদিন দেশের চাহিদা ৪২ হাজার ৯৩২ টন। আর বছরে চাহিদা এক কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার টন। যদিও ডিএলএস বলছে, বছরে তরল দুধের চাহিদা এক কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টন।

https://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2024/05/05/1384921