২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১১:০৬

সবজি বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে

রাজধানীর সবজি বাজারে অস্থিরতা বাড়ছেই। চলমান তাপদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেন বেড়েই চলছে সবজির দাম। তাপদাহে এমনিতেই বিপর্যস্ত জনজীবন, তার ওপর চড়া সবজির বাজার এখন সাধারণ মানুষকে আরও নাজেহাল করে তুলছে। সবজির পাশাপাশি বৃদ্ধি পাওয়া অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বেশি।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে সবজি সরবরাহের ক্ষেত্রে। চাষিদের ক্ষেতে সবজি নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া বারবার সেচ দেওয়ার কারণে সবজি উৎপাদনের খরচও বেড়েছে। যে কারণে গ্রামের মোকামে সবজির দাম বেশি। অন্যদিকে, বাজারে আদা-রসুনের দামও বাড়তি। এছাড়া চাল, ডাল, আটা, ময়দার মতো পণ্যের সঙ্গে মাছ ও গোশতের দামও স্থিতিশীল হয়ে আছে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, নতুন দামের সয়াবিন বাজারে আসা শুরু হয়েছে। এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি নতুন দাম ধরা হয়েছে ১৬৭ টাকা, যা আগের চেয়ে ৪ টাকা বেশি।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, সব সময় নাগালের মধ্যে থাকা পেঁপেও এখন ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা বছরের অধিকাংশ সময় ৪০ টাকার মধ্যে থাকে। এছাড়া ঈদের পরে কেজিপ্রতি আলুর দাম ১৫ টাকা বেড়ে মানভেদে ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা ঈদের আগে ৪০-৫০ টাকার মধ্যে ছিল। অন্যান্য সবজির মধ্যে টমেটো ৬০ টাকা, টক টমেটো ৭০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, মূলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৮০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা, সজনে ১০০-১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০-৮০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে।

এক্ষেত্রে গত সপ্তাহের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। আর উচ্ছে, শসা, লেবু, ঢেঁড়স, পটল, চালকুমড়ার মতো সবজির চাহিদা গরমে থাকে বেশি। তাই এগুলোর দামও বেড়েছে বেশি। প্রতি কেজিতে উচ্ছে ২০ টাকা, শসা ২০, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, পটল ৪০ টাকা বেড়েছে। আর প্রতি হালিতে লেবুর দাম ১০ টাকা এবং প্রতি পিস চালকুমড়ার দাম ২০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া প্রতি কেজিতে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে ২০ টাকা এবং ধনেপাতার দাম বেড়েছে ৪০ টাকা।

এদিকে বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকা, লাল ও সাদা আলু ৫০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, নতুন দেশি রসুন ১৬০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় আলুর দাম কমেছে ৫ টাকা। আর চায়না আদার দাম বেড়েছে ২০ টাকা।

মাছের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১৪০০- ১৬০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০-৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩৮০-৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৭০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৮০০-১২০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ৩০০-৫০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, টেংরা মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০-১১০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০- ১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম এখনও দুইশো টাকার নিচে নামেনি। আর প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে কক মুরগির দাম। ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ২০০-২০৫ টাকা, কক মুরগি ৩৫০-৩৭০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩১৫-৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা, গরুর গোশত ৭৮০ টাকা, খাসির গোশত ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মুরগির লাল ডিম ১১৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১০৫-১১০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।

সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলেও মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। প্যাকেট পোলাউয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাউয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৪০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৯০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://www.dailysangram.info/post/554616