২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ৭:২১

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত, চোরাচালান ও ভারতীয় পণ্য বর্জন

-ড. মো. নূরুল আমিন

॥ চতুর্থ ও শেষ কিস্তি ॥
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স-বিএসএফ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি-এর তুলনামূলক শক্তি ও অবস্থা সম্পর্কে গত কিস্তিতে আমরা কিছুটা আলোচনা করেছিলাম। এতে আমরা দেখিয়েছিলাম যে, বাংলাদেশ বরাবর মোতায়েন করা বিএসএফ এর ইউনিটগুলোকে ভারত সরকার সংখ্যা এবং অস্ত্রশস্ত্র উভয় দিক দিয়েই শক্তিশালী ও আধুনিকীকরণ করছেন। পাশাপাশি তারা ইউনিট সদস্যদের বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত করে বিশেষ প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন। বিএসএফের জন্য ভারত ইসরাইলের কাছ থেকে যেসব অস্ত্রশস্ত্র ক্রয় করেছেন তার মধ্যে রয়েছে:

ক) স্নিপার রাইফেল-গ্যালিন
খ) এসল্ট রাইফেল-ট্যাবর-২১
গ) এম-১৬ এসল্ট রাইফেল
ঘ) এমপিজি-১ স্নিপার রাইফেল
ঙ) এমপি-৫ সাব মেশিনগান।

উপরোক্ত অস্ত্রশস্ত্র ছাড়াও ভারত তার সীমান্তরক্ষীদের জন্য লেজার কাউডি নাইট ভিশন নামক লক্ষ্য ভিত্তিক অস্ত্রও সংগ্রহ করেছে।
ভারতীয় ভূখণ্ডে বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতা : বাংলাদেশ এবং ভারত দুটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন সার্বভৌম, দেশ। দুটি দেশের মধ্যে সৎ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক এবং জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্য থাকাটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতানেত্রী এবং সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে রাখা এবং তার উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা এবং কেউ কেউ এই দেশটিকে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার চেষ্টায় রত রয়েছেন। ভারতের পত্রপত্রিকা এবং গণমাধ্যমসমূহ অবিরত বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।

দেশটির সেনা গোয়েন্দা সংস্থা বিশেষ করে RAW, Research and Analysis wing যেমন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রতিটি স্তরে সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে তেমনি Trans Frontier Intelligent Agency (TIA) নামক একটি নতুন সংস্থাও সীমান্ত এলাকা নিয়ে গঠিত ভূখণ্ডে কর্মরত রয়েছে। টিআইএ যাদের নিয়ে গঠিত তাদের মধ্যে রয়েছে প্রধানত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমিশন ও নন কমিশন অফিসার। তাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশ ভূখ-ে ঢুকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সীমান্ত রক্ষীদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সরবরাহ করা।

আগেই বলেছি ভারতের সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক নেতাদের একটা গ্রুপ বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করা ও তার রাষ্ট্রীয় অখ-তা বিনষ্ট করার অশুভ তৎপরতার সাথে জড়িত রয়েছে। তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের একাংশ ও হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান সমিতির নেতাদের এ কাজে ব্যবহার করছে। তাদের তৎপরতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বাধীন বঙ্গভূমি আন্দোলন। এই আন্দোলনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী সশস্ত্র তৎপরতার একটি অংশ।

১৯৭৭ সালের দিকে এর উৎপত্তি এবং কয়েকটি সশস্ত্র গ্রুপের ব্যানারে এই সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। এগুলো হচ্ছে : (১) বঙ্গসেনা, (২) বাংলাদেশ লিবারেশন অর্গানাইজেশন, (৩) বাংলাদেশ ফ্রিডম অর্গানাইজেশন, (৪) লিবারেশন টাইগার অব বাংলাদেশ প্রভৃতি বাংলাদেশের ছয়টি বৃহত্তর জেলা তথা খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, যশোর ও কুষ্টিয়াকে নিয়ে একটি নতুন হিন্দু রাষ্ট্র গঠন এই আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য। এই সংস্থাটিকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের মধ্যে প্রধান হচ্ছেন ডা. কালিদাস বৈদ্য। যাদবপুরের রামপাল বাজারের ১৬৯ নং গর্পা মেইন রোড ও কোলকাতায় তার সদর দফতর রয়েছে। তার দু’জন বিকল্প নেতা আছেন এবং তারা হচ্ছেন নিবলত পাল ম-ল এবং ডা. মুকু- মজুমদার।

পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী পশ্চিম বাংলার চব্বিশ পরগনায় সদর দফতর করে জনৈক রামেশ্বর পার্শ্বেয়ানের সামগ্রিক তদারকিতে লিবারেশন টাইগার্স অব বাংলাদেশ অন্তত ৯টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলে অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা এখানে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে : ১) উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুরিয়া, ২) যশাইকাটির ক্ষত্রিয়পাড়া, ৩) যশাইকাটির জেলেপাড়া, ৪) একই জেলার পশ্চিম ক্ষত্রিয় পাড়া, ৫) কাপালি পাড়া, ৬) মাগুরখালি ফ্রি প্রাইমারী স্কুল, ৭) বশিরহাটের কাতিয়া, ৮) বশিরহাটের বিজিতপুর এবং ৯) গন্ধবপুর।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান স্বাধীন হবার পর থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে আলাদা করে একটি স্বাধীন হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কালীদাস বৈদ্যের নেতৃত্বে এক দল উগ্রবাদী যুবক সক্রিয় হয়ে উঠে। কালিদাশ বৈদ্যের সাথে আরো দু’জন উগ্রবাদী যুবনেতা চিত্তরঞ্জন সুতার ও নিরোদ পাল যোগ দেন এবং ১৯৫২ সালে সশস্ত্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। কালিদাশ বৈদ্য তার লেখা ‘বঙ্গভূমি’ পুস্তকে একথা অকপটে স্বীকার করেছেন। ঢাকা ক্যুরিয়ার পত্রিকা কালিদাশ বৈদ্যের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছিল। সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে পত্রিকাটি শ্রীবৈদ্যকে বাংলাদেশ বিরোধীতার আন্দোলনের বিকল্প সমাধান কি হতে পারে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন। বৈদ্যের জবাব ছিল খুবই স্পষ্ট। তিনি বলেছিলেন, Alternative is only one. Bangladesh has to yield to India silently with being a province of it. অর্থাৎ বিকল্প সমাধান একটাই এবং সেটা হচ্ছে বিনা বাক্য ব্যয়ে বাংলাদেশকে ভারতের একটি প্রদেশে পরিণত হতে রাজি হওয়া।

প্রতিবেশী একটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধীতার এই বক্তব্য ও অবস্থানের জন্য ভারত সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি এবং ভারতীয় টিভি চ্যানেলসমূহ বঙ্গভূমি আন্দোলনের পক্ষে প্রচার চালিয়ে আগুনে ঘৃতাহুতি দেয়ার কাজ করছে। সরকার নীরব। ভারতীয় ভূখ-ে কর্মরত বাংলাদেশ বিরোধী অন্যান্য গ্রুপগুলোর মধ্যে রয়েছে নিখিল বঙ্গ নাগরিক সংঘ, বাংলাদেশ উদ্বাস্তু উন্নয়ন সংসদ, সংযুক্ত উদ্বাস্তু সংগ্রাম পরিষদ প্রভৃতি। স্থানাভাবে ক্ষুদ্র পরিসরের একটি নিবন্ধে তাদের বিস্তারিত তৎপরতার বিবরণ দেয়া সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক দিনসমূহে পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি চীনের উৎপাত ব্যাংক লুট, থানা আক্রমণ ও অস্ত্র লুট এবং অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি তৎপরতাকে অনেকে বিদেশী মদদপুষ্ট বাংলাদেশ বিরোধী আরেকটি ফ্রন্ট বলে মনে করছেন। সীমান্তে মিয়ানমারের উৎপাত তো আছেই।
সীমান্তে উৎপাত, ভূখ-ে উৎপাত, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সংস্কৃতির উপরে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি আমাদের স্বাধীন সত্তা ও জীবন যাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ভারতের অভ্যন্তরে তাদেরই নাগরিক মুসলমানদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। শালীন পোশাক ও ইসলামী রীতি অনুযায়ী হিজাব পরিধানকে কেন্দ্র করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম মেয়েদের উপর অত্যাচার চলছে, প্রকাশ্যে তাদের শ্লীলতাহানি এবং ধর্ষণের শিকার বানানো হচ্ছে। ঘরে প্রত্যাবর্তন কর্মসূচী তৈরি করে মুসলমানদের নতুন করে হিন্দু ধর্মে দীক্ষা দেয়া হচ্ছে। গরু কুরবানি ও গরুর গোস্ত খাওয়া এমন কি ঘরে রাখা নিয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটিয়ে মুসলমানদের হত্যা ও বাড়িঘর লুটপাট করা হচ্ছে।

মুসলমানরা এখন খুবই অসহায়, শুধু বাংলাদেশ নয় সর্বত্র। এই অসহায় অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একটি উপায় হিসাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক এসেছে এবং যদি এতে সাড়া পাওয়া যায় তা হলে শত্রুতার মাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।
ভাতর বেনিয়ার জাতি, বাংলাদেশ ভারতীয় পণ্যের একটি বৃহৎ বাজার। শুধু বাংলাদেশ কেন, মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোও তাদের পণ্য দখল করে আছে। মুসলমানরা ভারতে তাদের মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা লাথি খাচ্ছে তথাপিও অন্যান্য দেশের তাদের মুসলিম ভাইয়েরা ব্যথা অনুভব করছেন না।

আমি আলোচনার প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে হিজরতকারী এক সহপাঠীর পরিবারের আক্ষেপের কথা বলেছিলাম, সে দেশের অভাব অনটন, দুঃখ দুর্দশা তুলে ধরেছিলাম, ষাটের দশকে বাংলাদেশের এই ভূখন্ডে যখন প্রতি কেজি চাল আট আনা/দশ আনায় পাওয়া যেতো ভারতে বিশেষ করে আগরতলা কোলকাতা প্রভৃতি স্থানে ভাতের মাড় বিক্রি হতো প্রতি কেজি তিন টাকায়। আমাদের এই প্রাচুর্য এখন কোথায় গেল? ভারতের পেঁয়াজ মসল্লাসহ আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর জন্য আমরা এখন ভারত নির্ভর কেন? আমাদের দেশে কি গরু পাওয়া যায়না? গরু, গরুর গোস্ত, আমূলের দুধের পাউডার, হাঁস, মুরগীর ডিম, ব্রয়লারে বাচ্চা ভারত থেকে কেন আমদানি করি? বাংলাদেশী ক্রেতা না থাকলে কোলকাতার ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটা সুন্দর কথা বলেছেন। ভারতীয় পণ্য বর্জনের আগে নিজের বউ এর কটা ভারতীয় শাড়ি আছে হিসাব করুন। ভারতীয় শাড়ি আপনি কেন কেনেন? সুন্দর ডিজাইনের জন্য। যদি তাই হয় এই ডিজাইনের উপর আপনার তাঁতীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের মতো এবং আরো উন্নত ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করুন। কেউ তাদের দিকে তাকাবেনা। বাংলাদেশের মাটিতে পেঁয়াজ রসুন অন্যান্য মসল্লা এবং পর্যাপ্ত দানাদার খাদ্য শস্য উৎপাদন করুন। স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবেন। যত দিন না হচ্ছেন আমাদানির জন্য ভারতের বিকল্প খুঁজুন সস্তায় এবং মানসম্মত পণ্য। শুধু ঘোষণা দিলেই পণ্য বর্জন হবে না। ভারত এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকার যে ঋণ চুক্তিগুলো হয়েছে একটু খোঁজ খবর নিন। এর অধিকাংশই সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট। অর্থাৎ তারা যে ঋণ দিয়েছে সেই ঋণের অর্থ দিয়ে মূলধন সামগ্রী ও অন্যান্য পণ্য তাদের কাছ থেকেই কিনতে হবে এবং হচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনি বর্জন করবেন কিভাবে? তবে এটা সত্য, আধিপত্যবাদের হাত থেকে রক্ষার জন্য পণ্য বর্জন একটি বড় হাতিয়ার। এই হাতিয়ার এই দেশের মানুষ অতীতে ব্যবহার করেছে বৃটিশদের বিরুদ্ধে। লবণ সত্যাগ্রহের কথা মনে আছে? তার পেছনে নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মী ছিলেন। এখনো দরকার। শুধু ভারতীয় পণ্যের গোবর ও গোমূত্রের ন্যায় অপবিত্র উপাদান দেয়া হয় এই তথ্য দিলে চলবেনা। এনফিল্ড রাইফেলে গুলি ভর্তি করতে গেলে টোকায় কামড় দিতে হতো এবং এই টোকার মধ্যে গরু ও শূকুরের চর্বি আছে যা হিন্দু মুসলমান সিপাহীদের জাত নষ্ট করার জন্য দেয়া হয়েছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় এই তথ্য বিদ্রোহে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও গোবর গোমূত্রের বর্তমান তথ্য কতটুকু ফলপ্রসূ হবে তা গবেষণার বিষয়।

চলমান আন্দোলনকে ফলপ্রসূ করার জন্য দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ আলেম ওলামা অর্থনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে। মুসলিম স্বার্থবিরোধী ভারতীয় কর্মকাণ্ড তাদের অত্যাচার অবিচারের তথ্যগুলো মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে তাদের সহযোগিতা গ্রহণের চেষ্টা করতে পারলে পণ্য বর্জন সফল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভারতীয় পণ্যের বিকল্প দেশীয় উৎপাদন বা আমদানি যে উৎসেরই হোক দেয়ার চেষ্টাও করতে হবে বলে আমার বিশ্বাস।

https://www.dailysangram.info/post/554255