২ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৫:৩১

ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে

রাজধানী ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করেছে। গত তিন দিনে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৮ হাজার ৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন। এর মধ্যে ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হন ৪ হাজার ৫২৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তিন দিন ধরেই ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
ঢাকার বাইরে রোগী বাড়তে থাকায় বড় ধরনের শঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার বাইরের এলাকাগুলো ভাইরাসের জন্য অবারিত ক্ষেত্রে পরিণত হয়ে উঠছে। এতে শঙ্কার দিক হলো, পরের বছর ঢাকার বাইরে আরও রোগী বাড়বে। এবার ডেঙ্গুর যে ধরনে তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, পরের বছর অন্য ধরন দিয়ে আক্রান্ত হবেন। ঢাকার বাইরে তখন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়বে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত তিন দিনে ঢাকার বাইরে রোগী ভর্তি বেশি হলেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বেশি লোক মারা যাচ্ছেন ঢাকাতেই। এ তিন দিনে দেশে মোট ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জনই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গত সোমবার সকাল আটটা থেকে গতকাল সকাল আটটা) দেশে ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৬১।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২ হাজার ৫৮৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ১৩১ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। আর ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হন ১ হাজার ৪৫৩ জন। অবশ্য ৯টি হাসপাতাল সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য না দেওয়ায় প্রতিবেদনে যুক্ত করা যায়নি বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

রাজধানীতে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁর হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৪ জন; যা চলতি বছরে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হয়েছিলেন গত ২৬ জুলাই। সেদিন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন ২৬ জন।

দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী মারা যান গত বছর, ২৮১ জন। এর আগে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। এ ছাড়া ২০২০ সালে ৭ জন ও ২০২১ সালে মারা যান ১০৫ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর দেশে এখন পর্যন্ত মোট ৫৪ হাজার ৪১৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। যে হারে রোগী বাড়ছে, তাতে হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ বাড়বে। চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে। রোগী বাড়লে মৃত্যুও বাড়তে পারে। শত্রু চেনা। মশা নিয়ন্ত্রণ করাই এখন বড় ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে একক কোনো প্রতিষ্ঠান এ কাজ করতে পারবে না, সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

https://www.prothomalo.com/bangladesh/kmph7bl2hm