২৮ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, ৬:২৪

২৭ দিনে ডেঙ্গুতে ৩৪ হাজার ৭২৪ রোগী হাসপাতালে ॥ ১৭৮ জনের প্রাণহানি

মিনিটে মিনিটে ডেঙ্গু রোগী আসছেন হাসপাতালে। হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। জুলাই মাসের ২৭ দিনে ১৭৮ জনের মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৪ হাজার ৭২৪ জনে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৫ জনে। এর মধ্যে নারী ১২৬ জন এবং পুরুষ ৯৯ জন মারা গেছেন। মোট মৃত্যুর মধ্যে ঢাকার বাইরে মারা গেছেন ৪৮ জন এবং রাজধানীতে ১৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৩৬১ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬৫৩ জন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২ হাজার ৩৬১ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১ হাজার ১২২ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ২৩৯ জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন ২ হাজার ৩৬১ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৪৬৭ জনে।
চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে এক জনের মৃত্যু

নতুন আক্রান্ত ৫৭ জন ॥ খুলনায় - ২০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৫ জনে। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে আরও ৫৭ জন। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র বলছে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ৫৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪০৯জনে। এছাড়া শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন। গতকাল বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল ২৬৮জন।

খুমেক হাসপাতালে একদিনে
২০ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি
খুলনা ব্যুরো : খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একদিনে ২০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতালে মোট ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। আর গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২২ জন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) ডাক্তার সুভাষ রঞ্জন হালদার জানান, চলতি বছরে খুলনায় সর্বমোট ২৯৩ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ২০ জন রোগী ভর্তি হয়। বর্তমানে হাসপাতালে ৬৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে খুলনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও পথসভার উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ। বর্ণাঢ্য র‌্যালিটি জেনারেল হাসপাতাল চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে এসে শেষ হয়।

পিকচার প্যালেস মোড়ে অনুষ্ঠিত পথসভায় সিভিল সার্জন বলেন, ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জনিত জ¦র, যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন হতে হবে। এডিস মশার বংশবিস্তাররোধে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। সমাজের সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ডেঙ্গুজ¦র ও এডিস মশা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ডেঙ্গুজ¦র প্রতিরোধে বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ঘরে এবং এর আশেপাশে যে কোন পাত্রে জমে থাকা পানি সপ্তাহে একবার ফেলে দিলে এডিস মশার লার্ভা মরে যায়। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই এ রোগ প্রতিরোধ করা যাবে। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ হলো জ¦র। তাছাড়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির মাথাব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা, শরীরে লালচে দানা হয়ে থাকে। এর যেকোন একটি লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরার্মশ নিতে হবে।

https://dailysangram.info/post/531156