১৬ জুন ২০২৩, শুক্রবার, ৪:০৫

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানব পাচার প্রতিবেদন

চেষ্টা থাকলেও মান অর্জন হয়নি বাংলাদেশের

মানব পাচার বিষয়ে এবারও বাংলাদেশের কোনো উন্নতি হয়নি। এই ইস্যুতে বর্তমানে বাংলাদেশ টায়ার-২ বা দ্বিতীয় শ্রেণিতে রয়েছে। মানব পাচারে শিকারদের সুরক্ষায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা রয়েছে। তবে ন্যূনতম মান অর্জিত হয়নি। এমন তথ্য উঠে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত ২০২৩ সালের মানব পাচার প্রতিবেদনে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
২০২০ সালে টায়ার-২ ওয়াচ লিস্ট থেকে টায়ার-২তে উন্নীত হয় বাংলাদেশ। এর পর থেকে একই অবস্থানে রয়েছে। টায়ার-২কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, অর্থাৎ পাচারের শিকারদের সুরক্ষায় ন্যূনতম মান অর্জন করতে না পারা।

প্রতিবেদনে মানব পাচার ও সাইবার প্রতারণা অংশে বলা হয়েছে, ক্যাসিনো ও শেল কোম্পানিগুলো অব্যবহৃত হোটেল এবং ব্যবসায়িকভাবে ব্যবহৃত স্থান থেকে কাজ পরিচালনা করে। বিশেষ করে, দূরবর্তী বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, সীমান্ত শহর, জটিল ভৌগোলিক স্থানগুলো তারা ব্যবসার হটস্পট হিসেবে ব্যবহার করে; যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার হয় না এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুব একটা যায় না। করোনার সময় প্রচুর মানুষ বেকার হয়। মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ঘানা, চীন ও তুরস্কের মানব পাচারকারীরা করোনাকে সুযোগ হিসেবে লুফে নেয়। তারা ভুয়া চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের পাচার করে থাকে। অন্যান্য দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি এর শিকার হয়েছে বাংলাদেশিরাও।

এ ছাড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের পাসপোর্ট গায়েব করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে, যেসব শ্রমিক বিদেশে অভিবাসী হিসেবে যান, তাঁরা শ্রম শোষণের শিকার হন। চাকরিদাতারা অনেক সময় শ্রমিকের নথিপত্রও আটকে দেয়। এটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) স্বীকৃত জবরদস্তি শ্রমের একটি সাধারণ উদাহরণ।

উইনরক ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ও ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া এক গবেষণা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যাতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্বলতা মোকাবিলায় সরকারের বিদ্যমান নীতি, পরিকল্পনা ও প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে মানব পাচারবিরোধী নীতিমালাকে সংহত করা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা পাচারের ঝুঁকিতে রয়েছে। রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষকে বাংলাদেশের ভেতরে এবং আশপাশের

বিভিন্ন দেশে যৌনকর্মী হিসেবে পাচার করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য আনুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকা পাচারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এ ছাড়া পতিতালয়গুলোতে সবার বয়স জাল নথি বানিয়ে ১৮ বছর দেখানো হয়। সেখানে ১০ বছরের মেয়ে শিশুও মিলছে। একটি সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩০ হাজার মেয়েকে বাংলাদেশে শোষণের শিকার হতে হয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাংলাদেশে ২০ হাজার মেয়ে শিশু পতিতালয়ে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করছে।

https://samakal.com/bangladesh/article/2306178443