১৭ মে ২০২৩, বুধবার, ২:৫৪

আবাসিকে গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় তিতাস

আবাসিকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে তিতাস। দুই চুলার গ্যাসের বিল মাসে ৫১২ এবং এক চুলায় ৩৯০ টাকা বাড়াতে চায় তিতাস গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। এ বিষয়ে গত ২ মে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কাছে (বিইআরসি) প্রস্তাব জমা দিয়েছে কোম্পানিটি। তাদের প্রস্তাব কার্যকর হলে দুই চুলার মাসিক বিল হবে ১৫৯২ টাকা এবং এক চুলায় ১৩৮০ টাকা।

গত বছর জুনে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের দাম বাড়ায় বিইআরসি। এ সময় প্রতি ঘনমিটারের দাম ১৮ টাকা করা হয়। তবে মিটার ছাড়া গ্রাহকদের জন্য মাসে গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে দুই চুলায় ৬০ ঘনমিটার ও এক চুলায় ৫৫ ঘনমিটার ধরা হয়। এতে দুই চুলার মাসিক বিল ১০৮০ ও এক চুলার বিল ৯৯০ টাকা ঘোষণা করা হয়।

বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. নূরুল আমিন বলেন, তিতাসের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য গ্রহণ করেছে কমিশন। বিধি মোতাবেক এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য শুনানি হবে। কমিশন তাদের টেকনিক্যাল টিম দিয়ে যাচাই বাছাই করবে। তারপর সিদ্ধান্ত।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আবাসিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, মূলত কোম্পানিটি নিজেদের দুর্নীতি ও গ্যাস চুরি বৈধ করতে দাম বাড়াতে চায়।

প্রস্তাবে বলা হয়, কমপক্ষে ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোনো সমীক্ষা বা তথ্য বিশ্লেষণ না করেই ঘনমিটারের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। এতে কারিগরি ক্ষতি বেড়েছে এবং সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তিতাস আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ অবস্থায় দাম বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই তাদের।

তিতাস বলছে, রান্নার বাইরে নানা কাজে গ্যাসের অপব্যবহার বেশি হচ্ছে। এতে গত অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত বিলের হিসাব দেখিয়ে জানানো হয় দুই চুলায় প্রতি মাসে গড় ব্যবহার হয়েছে ৯৭ ঘনমিটার। মার্চে এমন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার ৭৪৪। তবে তিতাসের প্রিপেইড গ্রাহকদের কোনো তথ্য তারা চিঠিতে উল্লেখ করেনি।

তিতাসের দাবি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভর্তুকি প্রত্যাহার এবং রাজস্ব ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে চার শ্রেণির ব্যবহারকারীর জন্য গ্যাসের দাম ১৭৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে সরকার। সে সময় আবাসিক, সিএনজি, সার এবং চা বাগানের ব্যবহারকারীদের জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়নি। তিতাসের চিঠিতে পোস্ট পেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে গত অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত বিলের হিসাব দেখানো হয়েছে। এতে দেখা যায়, দুই চুলার মিটারযুক্ত আবাসিক গ্রাহকরা প্রতি মাসে গড়ে ৯৭ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। মার্চে এমন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার ৭৪৪। বর্তমানে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে তিতাসের ২৮ লাখ ৫৭ হাজার আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৫ লাখ ২৫ হাজার মিটারবিহীন ও ৩ লাখ ৩২ হাজার প্রিপেইড মিটারের গ্রাহক।

অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, তার মতে কমিশনের হিসাবেই দেখা যায়, মিটারবিহীন দুই চুলার গ্রাহকের মাসে ৫০ ঘনমিটার এবং এক চুলার গ্রাহকরা মাসে ৪৫ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। বাস্তবে অনেক গ্রাহক সে পরিমাণে গ্যাস ব্যবহার করেন না। তিতাস এই সীমা পরিবর্তনের যে দাবি করেছে তা অযৌক্তিক।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/675415