২১ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার, ৪:৪৯

শেষ সময়েও সাড়া নেই হজ নিবন্ধনে

হজ নিবন্ধনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। কিন্তু গতকাল সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত হজযাত্রীর কোটা পূরণ হয়নি। এখনো কোটা খালি রয়েছে সাড়ে ১৪ হাজার। গত ১৬ মার্চ শেষ দফা সময় বাড়ানোর পর গত চার দিনে হজযাত্রী নিবন্ধন হয়েছে মাত্র চার হাজার ৭৪০ জন। ফলে আজ শেষ দিনে কোটা সম্পূর্ণ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ দিকে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার হজে কোনো বয়সসীমা থাকছে না। এমনকি ১২ বছরের কম বয়সীরাও পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হজের নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর চার দফা সময় বাড়ানোর পরও এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা পূরণ হয়নি। এ জন্য সময় আর বাড়ানো হবে না ঘোষণা দিয়েও গত ১৬ মার্চ ফের পাঁচ দিন সময় বাড়াতে বাধ্য হয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। কিন্তু এর পর চার দিনেও কোটা পূর্ণ হয়নি। ফলে আজ শেষ দিনের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে মন্ত্রণালয়কে। হজের সার্ভার সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত মোট এক লাখ ১২ হাজার ৬৬৫ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৭৪৯ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করেছেন এক লাখ দুই হাজার ৯১৬ জন। এখনো কোটা পূরণ হতে বাকি রয়েছে ১৪ হাজার ৫৩৩ জনের। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজারের কোটার মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগেরও কম পূরণ হয়েছে। বাকি রয়েছে এখনো পাঁচ হাজার ২৫১ জনের কোটা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটা বাকি রয়েছে ৯ হাজার ২৮২ জনের।

জানা যায়, গত ১৬ মার্চ সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট এক লাখ সাত হাজার ৯২৫ জন নিবন্ধন করেছিলেন। এর পর গত চার দিনে চার হাজার ৭৪০ জন। অর্থাৎ দিনে এক হাজারের কিছু বেশি হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন। হজযাত্রীর কোটা পূরণ না হওয়ায় প্রাক নিবন্ধন করা যে কাউকে চূড়ান্ত নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে গত বছর ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বের কেউ হজ করতে না পারলেও এবার সব বয়সীরা হজ পালন করতে পারবেন। এমনকি ১২ বছরের নিচের শিশুরাও পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাবে।

নির্ধারিত কোটা পূরণ না হওয়ায় ২১ মার্চ পর্যন্ত চতুর্থ দফা নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোনো অবস্থাতেই নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না। কিন্তু এখনো কোটা পূরণ না হওয়ায় আবারো নিবন্ধনের সময় বাড়াতে হতে পারে মন্ত্রণালয়কে।

সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে সরকারকে চরম মূল্য দিতে হবে : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেছেন, হজ ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ ও মৌলিক ইবাদত। হজ শুধু ইবাদতই নয়, বরং আত্মিক পরিশুদ্ধতার এক অনস্বীকার্য পদ্ধতি। গবেষণায় দেখা গেছে মুসলমানগণ হজের পরে আরো ইতিবাচক এবং সহনশীল হয়ে ওঠে, যা দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে খুবই প্রয়োজন। কিন্তু সরকার এই ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ইবাদতের বিষয়েও সিন্ডিকেট থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে পারেনি। বাংলাদেশ বিমানের অসাধু অতি মুনাফালোভী সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে সরকার। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের বিমানভাড়া বৃদ্ধি করেছে অযৌক্তিকভাবে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান পরিবহন সংস্থা রাষ্ট্রের কথা শোনছে না এমন দেশে বসবাস করছি আমরা। এছাড়া নানা সিন্ডিকেটের বেড়াজালে আটকা পড়েছে মুসলমানদের বায়তুল্লাহ তাওয়াফের সারা জীবনের স্বপ্ন।

গতকাল এক সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, কোনো কারণে বিমান ভাড়া এবং সৌদি আরবের আনুষঙ্গিক ব্যয় বাড়লে তো সেটা ভারত পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের জন্যও বাড়বে। শুধু কি বাংলাদেশের জন্য বেড়েছে? বাংলাদেশে সরকারিভাবে হজে যেতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। আর বেসরকারিভাবে খরচ হবে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার হজের খরচ দেড় লাখ থেকে ২ লাখ ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। অথচ প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে খরচ হবে ২ লাখ টাকার বেশি। হজ সার্ভিসের মতো একটি পবিত্র ইবাদতের ক্ষেত্রেও সরকারেরই এই নোংরামির জবাব জনগণ কঠোরভাবে প্রদান করবে।


https://www.dailynayadiganta.com/first-page/735803