২০ মার্চ ২০২৩, সোমবার, ৪:২১

ডলার সংকটে ধুঁকছে চিকিৎসা খাত


তীব্র ডলার সংকটের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চিকিৎসার উপকরণ উৎপাদন ও আমদানির ওপর। গত সাত মাস ধরে এসব উপকরণের এলসি খোলা ও আমদানি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ওষুধ আমদানি ও দেশে উৎপাদন কমেছে। এতে আমদানিনির্ভর জীবন রক্ষাকারী ওষুধগুলো বাজারে মিলছে না। এমনকি ক্রনিক ডিজিজ বা ধারাবাহিক রোগের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। জরুরি অস্ত্রোপচার কক্ষে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, হৃৎপিণ্ডের ভাল্ব ও পেসমেকারসহ বিভিন্ন মেডিকেল ডিভাইসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এমনকি রক্ত পরিসঞ্চালনের বিভিন্ন উপকরণও চাহিদা অনুযায়ী আমদানি হচ্ছে না। এতে করে জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা উপকরণের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। অনেক ক্ষেত্রে বেশি দামেও কাঙ্ক্ষিত পণ্য মিলছে না। এর প্রভাবে হাসপাতালগুলোতেও অস্ত্রোপচারের সংখ্যা কমে গেছে। রোগের সঠিক ওষুধ না পেয়ে বিকল্প ওষুধ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এসব কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে স্বল্প ও মধ্য আয়ের রোগী ও তাদের স্বজনদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। অনেকেই যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে রোগের সঙ্গেই দিনাতিপাত করছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদেশি ওষুধ এবং মেডিকেল ডিভাইসের এলসি খোলা কমেছে ৯০ শতাংশ। আমাদানি কমেছে ৯২ শতাংশ। ফলে এসব পণ্যের বাজারে তীব্র সংকট চলছে। ফলে বেড়েছে দাম। হৃৎপিণ্ডে প্রতিস্থাপনের জন্য মাঝারি মানের ভাল্ব আগে ছিল ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকা। এখন তা লাখ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে না। ভালো মানের ভাল্ব ছিল ছয় লাখ টাকা। এখন তা ১৫ লাখ টাকার বেশি দামের পাওয়া যাচ্ছে না। অক্সিজেন কিট আগে ছিল ২২ হাজার টাকা। এখন তা ৫০ হাজার টাকা। এ রকম প্রায় সব ডিভাইসের দামই দুই থেকে চার গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগের বিভিন্ন ধরনের আমদানি করা ইনসুলিন ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে এক হাজার ২০০ টাকা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আইয়ুব হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামাল ও দেশের বাজারে ডলারের দাম বাড়ায় ব্যবসায়ীরা চিকিৎসা উপকরণের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে সেটি বিশ্লেষণ করে দাম বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ডলার ও কাঁচামালের দাম কমলে আবার দাম সমন্বয় করা হবে। একই কারণে আন্তর্জাতিক বাজারেও চিকিৎসা উপকরণের দাম বেড়েছে। সেগুলো আমদানি করার কারণে দেশেও দাম বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি এই সাত মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ওষুধ ও মেডিকেল উপকরণ আমদানির এলসি কমেছে ৯০ শতাংশ। দীর্ঘ সময় ধরে এলসি কম হওয়ায় এসব উপকরণের আমদানিও কমেছে ৯১ শতাংশ। একই সময়ে ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল আমদানির এলসি ২১ শতাংশ ও আমদানি কমেছে সাড়ে ৯ শতাংশ। এ শিল্পের যন্ত্রপাতির এলসি ৪০ শতাংশ ও আমদানি কমেছে ৩১ শতাংশ। এ সময়ে ওষুধ ও মেডিকেল ডিভাইস আমদানির এলসি সাড়ে চার কোটি ডলারের ও আমদানি হয় পাঁচ কোটি ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে এলসি সাড়ে ৫৩ কোটি ডলারের ও আমদানি হয় ৫৫ কোটি ডলারের। এর মধ্যে মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর রক্ত, ওষুধসহ অন্যান্য মেডিকেল উপকরণ, গজ ব্যান্ডেজ ও অপারেশন থিয়েটারের সামগ্রী রয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ উৎপাদনে প্রায় স্বনির্ভর। মোট চাহিদার ৯৫ শতাংশই দেশীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। মাত্র ৫ শতাংশ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ আমদানি করতে হয়। মেডিকেল ডিভাইস বা অস্ত্রোপচারের উপকরণ বা চিকিৎসা সামগ্রীর ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। বাকি ১০ শতাংশ দেশে তৈরি হয়। তার পরও ওই ১০ শতাংশের মধ্যেও অনেক উপকরণ বেসরকারি হাসপাতালগুলো আমদানি করে ব্যবহার করেন। দেশে উৎপাদিত উপকরণ তারা ব্যবহার করেন না।

গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। একই সঙ্গে দেশে ডলার সংকট শুরু হয়। মে মাসে এ সংকট প্রকট হয়। জুলাই থেকে চিকিৎসা উপকরণের এলসি খোলা কমে যায়। বেড়ে যায় দাম। যার প্রভাব এখন গুরুতর আকার ধারণ করেছে।

গত জানুয়ারিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়ে বলা হয়, ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো মেডিকেল ডিভাইস ও জীবনরক্ষাকারী ওষুধ আমদানির এলসি খোলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে বিরত থাকছে। এতে এসব উপকরণের সংকট দেখা দিয়েছে। জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। চিঠিতে এসব উপকরণ আমদানির এলসি খোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। চিঠির অনুলিপি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি ব্যাংকগুলো জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও মেডিকেল ডিভাইস আমদানির এলসি খোলার পরামর্শ দেয়। কিন্তু এখনো পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এসএম শফিউজ্জামান বলেন, ডলার সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকগুলো ওষুধের কাঁচামাল, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও মেডিকেল ডিভাইস আমদানির এলসি খুলছে না। এতে বাজারে এসব পণ্যের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। যারা ডলারের সংস্থান করতে পারছেন তারা কিছু উপকরণ আমদানি করছেন। জোড়াতালি দিয়ে জরুরি পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। সরকার থেকে বলা হচ্ছে আগামী এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১০৭ টাকা হয়েছে। কিন্তু এলসি খুলতে গেলে ১২০ টাকার কম ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। ডলারের দাম বাড়ার কারণেও চিকিৎসাসামগ্রীর দাম বেড়েছে।

এলসি ও আমদানি কমায় কোম্পানিগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচামালের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ফলে চাহিদামতো ওষুধ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কাঁচামাল সংকটে চাহিদামতো সব ওষুধ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বাজারে ওষুধের দাম বাড়ছে। দেশীয় ওষুধের দাম গড়ে ২০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

ওষুধ কোম্পানিগুলোর সূত্র জানায়, আগে এলসি খোলার জন্য ব্যাংকগুলো কোম্পানির পেছনে ঘুরত, এখন কোম্পানিগুলো ঘোরে ব্যাংকের পেছনে। তার পরও এলসি খোলা যাচ্ছে না। শতভাগ চাহিদার বিপরীতে এখন ৪০ শতাংশ এলসি খোলা যাচ্ছে। বাকি ৬০ শতাংশই যাচ্ছে না। যেসব ওষুধ কোম্পানি রপ্তানি করে তারা প্রাপ্ত ডলার দিয়ে এলসি খুলতে পারছে। কিন্তু তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। অনেক ওষুধ কোম্পানির অন্যান্য খাতের রপ্তানি আয় রয়েছে। তারা এলসি খুলতে পারছে সীমিত আকারে। কিন্তু যাদের ডলার আয় নেই তারা কোনো এলসিই খুলতে পারছে না। টাকায় শতভাগ মার্জিন দিয়েও ব্যাংক থেকে ডলার মিলছে না। ফলে যেসব রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সব সময় ওষুধ সেবন করতে হয় ওইসব রোগীরা বিপাকে পড়েছেন। এর মধ্যে ডায়াবেটিস, কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট এসব রোগের যথাযথ ওষুধ চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রোগীকে বিকল্প ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

গড়ে বাজারে ওষুধের সরবরাহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমেছে। আমদানি করা ওষুধের সরবরাহ কমেছে প্রায় ৯৫ শতাংশ। মেডিকেল ডিভাইস মিলছে না বললেই চলে। এ অবস্থায় চিকিৎসাব্যবস্থা বড় ধরনের সংকটে পড়েছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট চিকিৎসকরা।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ড. মীর জালাল উদ্দিন বলেন, হৃদরোগীদের ৭০ শতাংশ দরিদ্র। হৃদরোগ চিকিৎসা সামগ্রীর দাম বাড়ার কারণে রোগীদের কষ্ট হচ্ছে। আগে এ রোগের চিকিৎসা উপকরণের দাম বাড়ানোর আগে চিকিৎসকদের সঙ্গে ওষুধ প্রশাসন আলোচনা করত। কিন্তু এবার দাম বাড়ানোর আগে তাদের কিছুই জানানো হয়নি।

ওষুধ উৎপাদন কোম্পানি ও হাসপাতালগুলো ছাড়াও রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ডকেন্দ্রিক অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা নিয়মিত এলসি খুলে বাণিজ্যিকভাবে মেডিকেল সামগ্রী আমদানি করেন। কিন্তু ডলার সংকটে তারাও এলসি খুলতে পারছেন না। কারণ তারা নিজস্ব উদ্যোগে ডলারের সংস্থান করতে পারছেন না।

৯০ শতাংশ ওষুধের দাম বেড়েছে : রাজধানী ও বিভিন্ন জেলা শহরে ফার্মেসি মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক বছরে ৯০ শতাংশ ওষুধের দাম বেড়েছে। তারা জানান-স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি ১২টি ট্যাবলেটের একপাতা এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেফোটিল প্লাস (৫০০ এমজি) ৫০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা ও মক্সাসিলিন (১০০ মিলি) সিরাপ ৪৭ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। একইভাবে উচ্চ রক্তচাপের প্রতি পিস বিসকোর (২.৫ এমজি) ট্যাবলেট ৬ থেকে ৭ টাকা হয়েছে। এলার্জির প্রতি পিস ফেক্সো (১২০ এমজি) ট্যাবলেট ৮ থেকে ৯ টাকা হয়েছে। শিশুদের নাকের এন্টাজল ০০. ৫% ড্রপ ১১ থেকে ১৯ টাকা ও প্রাপ্তবয়স্কদের নাকের এন্টাজল ০.১% ড্রপ ১১ থেকে ২০ টাকা করা হয়েছে। আমাশয় রোগীদের পেটের সমস্যায় ব্যবহৃত প্রতি পিস প্রোবায়ো ক্যাপসুল ১৪ থেকে ২৫ টাকা হয়েছে। ডায়াবেটিসের প্রতিটি কমপ্রিট (৪০ এমজি) ট্যাবলেট ৭ থেকে ৮ টাকা হয়েছে। কাঁশির তুসকা প্লাস (১০০ মিলি) সিরাপ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা এবং ফেক্সো (৫০ মিলি) সিরাপ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা করা হয়েছে। ক্যালসিয়ামের এক কৌটা নিউরো-বি ট্যাবলেটের দাম ২৭০ থেকে বেড়ে ৩০০ টাকা হয়েছে।
বেক্সিমকোর তৈরি শিশুদের জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত নাপা ড্রপ ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। নাপা সিরাপ (৬০ মিলি) ২০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা করা হয়েছে।

অপসোনিন ফার্মা লিমিটেডের তৈরি উচ্চ রক্তচাপের প্রতি পিস বিসলল-ম্যাক্স (২.৫ এমজি) ৬ থেকে ৮টা হয়েছে। ১৪টির একপাতা বিসলল (৫ এমজি) ট্যাবলেট ১৩০ থেকে ১৬০টা হয়েছে। এছাড়া গ্যাস্ট্রিকের প্রতিটি ফিনিক্স (২০ এমজি) ট্যাবলেট ৫ থেকে ৭ টাকা হয়েছে।

ইনসেপ্টার তৈরি উচ্চ রক্তচাপের প্রতি পিস ওসারটিল (৫০ এমজি) ৮ থেকে ১০ টাকা করা হয়েছে। গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রতি পিস ওমিডন (১০ এমজি) ট্যাবলেট ৩ থেকে ৪ টাকা হয়েছে।

রেনেটার তৈরি এলার্জির প্রতি পিস ফেনাডিন (১২০ এমজি) ট্যাবলেট ৮ থেকে ৯ টাকা করা হয়েছে। এসকেএফের তৈরি শিশুদের জিংক সিরাপ (১০০ মিলি) ৩৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। হামদর্দের তৈরি শিশুদের পেটফাপা ও হজমশক্তির চিকিৎসায় ব্যবহৃত নও-নেহাল সিরাপ ৬০ টাকা ৭৫ টাকা হয়েছে। একমি কোম্পানির তৈরি শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় মোনাস ১০ ট্যাবলেট ১২ টাকা থেকে ১৬ টাকা হয়েছে। রেডিয়েন্ট ফার্মার তৈরি ব্যথা ও গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় ন্যপ্রোসিন প্লাস ২০ এমজি+ ৩৭৫ এমজি ট্যাবলেট ১৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২০ টাকা হয়েছে। এরিস্ট্রোফার্মার তৈরি মাল্টি ভিটামিন ১৫ পিস ট্যাবলেটের কৌটা ১০৫ থেকে বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। ৩০ পিস ট্যাবলেটের একটি মাল্টি ভিটামিনের কৌটা ২১০ থেকে ২৭০ টাকা হয়েছে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ৩০টির একবক্স লিনাগ্লিপ (৫ এমজি) ট্যাবলেটের দাম ৬০০ থেকে ৬৬০ টাকা করা হয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের জন্য ৩০টির এক বক্স রুভাসটিন (৫ এমজি) ট্যাবলেট ৩০০ থেকে ৩৬০ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩০টির এক বক্স রুভাসটিন (১০ এমজি) ট্যাবলেট ৬০০ থেকে ৭২০ টাকা করা হয়েছে। ডায়াবেটিকের চিকিৎসায় ৩০ পিসের একপাতা ওসারটিন (৫০ এমজি) ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিইও) রাব্বুর রেজা যুগান্তরকে বলেন, ওষুধের র’ ম্যাটেরিয়াল, প্যাকেজিং ও বিদ্যুৎ সব কিছুতেই দাম বেড়েছে। এতে কিছু জায়গায় আমাদের সরবরাহ সংকট দেখা দিচ্ছে। ডলারের দাম বাড়ায় টাকার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে। কিন্তু সেভাবে ওষুধের মূল্য সমন্বয় হয়নি। তাই এটাকে দাম বাড়ানো বলা যাবে না, বরং সমন্বয় করা হয়েছে। ডলারের দাম স্বাভাবিক হলে ওষুধের মূল্যও সমন্বয় করা হবে। আমাদের প্রতিশ্রুতিই হলো সবচেয়ে কম দামে ওষুধ সরবরাহ করা।

নাম না প্রকাশের শর্তে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের এক আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক যুগান্তরকে বলেন, এলসি ও আমদানি কমায় কোম্পানিগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচামালের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। চাহিদামতো ওষুধ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে বাজারে ওষুধের দাম বাড়ছে, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে চাহিদামতো সব ওষুধ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশীয় ওষুধের দাম গড়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/656384