২৩ জানুয়ারি ২০২২, রবিবার, ৫:৩২

অপরিশোধিত তেলের দাম সাত বছরে সর্বোচ্চ

জ্বালানি তেল ও বিটুমিনের দাম বাড়বে

উদ্বেগ বাড়িয়ে বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৮৮ ডলারে উঠেছে। গত সাত বছরে এই দাম সর্বোচ্চ। বেড়েছে অন্যান্য অপরিশোধিত তেলের দামও। এর মধ্যে এক মাসের ব্যবধানে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বাড়ার হার প্রায় ২৩ শতাংশ।

এ অবস্থায় ক্রুড অয়েল থেকে উৎপাদিত ডিজেল, পেট্রল, বিটুমিনসহ অন্য সব জ্বালানির দামে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। শুধু বিটুমিনের দামই দেশের বাজারে ব্যারেলপ্রতি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ার আশঙ্কা করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। কারণ এক বছরের ব্যবধানে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম প্রতি ব্যারেল ৫৫.৯০ থেকে বেড়ে ৮৮ ডলার হয়েছে।

জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, তারা বিশ্ববাজারের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস বলছে, তেলের বাজারে সরবরাহ ঘাটতির পরিমাণ বিস্ময়কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ওপেকের তেল সরবরাহের সক্ষমতাও কমছে। এই বাস্তবতায় জ্বালানি তেলের দাম চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ১০০ ডলার এবং আগামী বছরের শুরুতে ১০৫ ডলারে উঠতে পারে—এমন পূর্বাভাস দিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাকস। সরবরাহ কমার কারণে উন্নত দেশগুলোর তেলের মজুদ ২০০০ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহে ৫.১২ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৮১.৭৬ ডলারে উঠে আসে। দ্বিতীয় সপ্তাহে ৫.৭৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেলের দাম দাঁড়ায় ৮৬.৪৭ ডলার। এক মাস আগে এই তেলের দাম ছিল ৭১.৫৭ ডলার। গত শুক্রবার বিশ্ববাজারে ক্রুড অয়েলের দাম ছিল ৮৭.৮৯ ডলার। মাসের ব্যবধানে দাম বাড়ল ২৩ শতাংশ।

ডাব্লিউটিআই ক্রুড অয়েলের দামও ঊর্ধ্বমুখী। গত শুক্রবার এ তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৮৫.১৪ ডলার।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম কালের কণ্ঠকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ছে। জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ক্রুড অয়েল থেকে বিটুমিন উৎপাদন করা হয়। এখন ক্রুড অয়েলের দাম বাড়ায় বিটুমিন উৎপাদনের খরচও বাড়বে। সে কারণে বিটুমিনের দামও বাড়তে পারে।

বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদও কালের কণ্ঠকে বললেন, ‘বিশ্ববাজারের পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিটুমিন উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ক্রুড অয়েলের দাম বাড়ার বিষয়টি আমরাও পর্যবেক্ষণ করছি। ’ দেশে বছরে সাড়ে পাঁচ লাখ টন বিটুমিনের চাহিদা আছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন সক্ষমতা মাত্র ৬০ থেকে ৭০ হাজার টন। চাহিদার বাকি বিটুমিন আমদানি করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা সময় নিম্নমানের বিটুমিন নিয়ে আসে। এতে দেশের সড়কগুলো বানানোর কয়েক মাস পর ভেঙে যায়।

https://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2022/01/23/1113449