করোনাভাইরাসের টিকা নিতে গতকাল ঠাকুরগাঁওয়ে টিকাকেন্দ্রে ভিড় করে শিক্ষার্থীরা।
১৭ জানুয়ারি ২০২২, সোমবার, ১২:৫৭

সংক্রমণে ডেল্টার দাপট শনাক্ত ৫০০০ ছাড়াল

দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এক দিনে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ২২২ জন। গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ হাজার ৩০৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৭.৮২ শতাংশ। একই সময় মৃত্যু হয়েছে আরো আটজনের। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ২৮ হাজার ১৪৪ জনের।

গতকাল রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, দেশে এখনো করোনায় আক্রান্তদের বেশির ভাগই ডেল্টা ভেরিয়েন্টে হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আর সব শেষ পাঁচ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ২৪ আগস্ট। সে হিসাবে ১৪৫ দিন পর আবারও পাঁচ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হলো।

সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে বলে জানান। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে।

গতকাল দুপুরে দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, অনেকের ধারণা, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে দেশে সংক্রমণ বাড়ছে। কিন্তু এটি বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধরে নিতে হবে, দেশে এখনো ডেল্টার প্রাধান্য বেশি। নতুন করে ঘটছে ওমিক্রনের সংক্রমণ। সারা বিশ্বে যেমন ডেল্টা ভেরিয়েন্টকে সরিয়ে ওমিক্রন জায়গা দখল করেছে, ধীরে ধীরে হয়তো বাংলাদেশেও এমনটি হবে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।

মুখপাত্র বলেন, দেশে এক সপ্তাহে করোনা শনাক্ত বেড়েছে ২২২ শতাংশ। গত বছরের নভেম্বরের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত সংক্রমণ কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। জানুয়ারিতে এসে আগের বছরের চিত্র অনেকটাই বদলে গেছে।

মুখপাত্র আরো বলেন, ‘আমাদের টিকা গ্রহণের হার বাড়াতে হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশে যতসংখ্যক মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছে, ততসংখ্যক টিকা নিচ্ছে না। আগ্রহের জায়গা বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে একজন আরেকজনকে সহযোগিতা করতে হবে।

সবাইকে সতর্ক করে অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ওমিক্রনে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়, ফুসফুস কম আক্রান্ত হয়—এসব ভেবে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। ডেল্টা সংক্রমণের সময় আমরা যতটা সচেতন ছিলাম, যতটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছি, এখনো সেভাবেই চলতে হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া আটজনের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও তিনজন নারী। তাদের মধ্যে ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে দুইজন এবং ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে চারজন, চট্টগ্রামে তিনজন ও সিলেটে একজন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ২৯৩ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হলো ১৫ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৩ জন।

https://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2022/01/17/1111620