১৩ অক্টোবর ২০২০, মঙ্গলবার, ১২:২৪

আধ ঘণ্টায় ৫৪ মিলিমিটিার বৃষ্টিতেই ডুবলো ঢাকা

মাত্র আধ ঘণ্টার ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা। গতকাল দুপুরে বৃষ্টিতে ভ্যাপসা গরম কিছুটা কমলেও বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। গতকাল সোমবার সকাল ১১টার দিকে শুরু হওয়া এ বৃষ্টি শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টা পরেও অনেক এলাকায় পানি নামতে দেখা যায়নি। পানি নিষ্কাশনের অধিকাংশ চ্যানেল অকার্যকর হয়ে পড়ায় এমন পরিস্থিতি দেখা দেয় বলে জানান ভ’ক্তভোগীরা। ফলে

প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে নগরীর অলিগলিতে পানি ঢুকে পড়ে। সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ২ নং গেটে দেখা গেছে, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের শুরুর অংশে হাঁটু সমান পানি। এই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে গর্ত দেখা গেছে। এসব গর্তে পড়ে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন বিকল হয়ে যেতে দেখা গেছে। রিকশাচলক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই এই এলাকায় পানি জমে যায়। রিকশা নিয়ে রাজারবাগ থেকে মালিবাগ যাওয়ার পথে পানির নিচের গর্তে পড়ে চাকা ভেঙে যায়। অথচ গত বছর সিটি করপোরেশন এখানে গভীর ড্রেন নির্মাণ করে। কিন্তু সেই ড্রেনও কাজ করছে না।’ দুপুরের দিকেও পানি নামতে দেখা যায়নি
একই চিত্র দেখা গেছে, ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে। এই সড়কটিতেও তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। সড়ক গড়িয়ে পানি ফুটপাতেও চলে আসে। পানির মধ্যে যান চলাচলে তীব্র বেগ পেতে দেখা গেছে। বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর মিরপুর সড়কে তীব্র পানিবদ্ধতা দেখা দেয়।

নগরীর গ্রিন রোডের অবস্থাও ছিল একইরকমের। এই সড়কটিতেও হাঁটুসমান পানি দেখা গেছে। অতি বৃষ্টির কারণে আশপাশের দোকানপাটেও পানি ঢুকে পড়ে। সড়কটিতে তীব্র পানির কারণে যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটে। দুপুরের দিকেও পানি নামতে দেখা যায়নি। সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল আরেফিন বলেন, পানিবদ্ধতা গ্রীন রোডবাসীর জন্য অভিশাপ। কত মেয়র আসলেন গেলেন, অনেক সময় অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু কেউ কোনও কাজ করেননি। বৃষ্টি হলে পানি বাসাবাড়িতে পর্যন্ত চলে আসে। এখন নতুন মেয়রের অফিস এখানে। তিনিও এই এলাকার এমপি ছিলেন। দেখি তিনি আমাদের জন্য কী করেন।’  

মিরপুরের শ্যাওড়াপাড়া এলাকায়ও একই চিত্র দেখা গেছে। সড়কে পানি জমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষকে তীব্র দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। তীব্র যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

বেলা একটার দিকে কথা হয় খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা আবদুল মোমেনের সঙ্গে। তিনি জানান, বাসাবো এলাকার কয়েকটি সড়কে তিনি পানি জমে থাকতে দেখেছেন।

কারওয়ান বাজারে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত কয়েকটি সড়কে পানি জমে ছিল। এখানকার একজন ব্যবসায়ী সেলিমুল বললেন, কারওয়ান বাজারে কয়েকটি সড়কে পানি খুব ধীরে ধীরে নামে। তবে প্রধান সড়কের পানি নেমে গেছে। এই ব্যবসায়ী বলেন, আগে সোনারগাঁওয়ের সামনের সড়কে পানি দীর্ঘসময় জমে থাকত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, নিম্নচাপের কারণে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত আরও দুদিন হতে পারে। তবে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপটি গত ২৪ ঘণ্টায় পায়রা থেকে ১১১ কিলোমিটার ও মোংলা থেকে ৮৬ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে সরে গেছে।

গতকাল সোমবার বৃষ্টিতে রাজধানীর পুরানা পল্টনের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনের সড়কের দৃশ্য -সংগ্রাম