২৫ জুলাই ২০২০, শনিবার, ৩:২১

করোনায় সুস্থতার সংখ্যা এক লাখ ২০ হাজার ছাড়াল

পরীক্ষা কম, শনাক্তও কম

করোনা দেশে: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু : ৩৫; শনাক্ত : ২,৫৪৮; মোট মৃত্যু : ২,৮৩৬; শনাক্ত : ২,১৮,৬৫৮

দেশে করোনাভাইরাসে আরো ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে দুই হাজার ৫৪৮ জন। ৩৫ জনকে নিয়ে দেশে কোভিড-১৯ রোগে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৮৩৬ জন। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ১৮ হাজার ৬৫৮ জন। বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো এক হাজার ৭৬৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। তাতে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট এক লাখ ২০ হাজার ৯৭৬ জন। গতকাল শুক্রবার অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।

বিশ্বে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা এরই মধ্যে দেড় কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ৩৩ হাজারের বেশি মানুষের। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ৮ মার্চ, তা দুই লাখ পেরিয়ে যায় ১৮ জুলাই। এর মধ্যে ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ। আর ১৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ১৭ জুলাই তা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনে রেকর্ড ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়।

নাসিমা সুলতানা বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন ও নারী সাতজন। আর এ পর্যন্ত মোট দুই হাজার ২৩৬ জন পুরুষ এবং ৫৯৯ জন নারী মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৫ জনের মধ্যে পাঁচজনের বয়স ছিল ৮০ বছরের বেশি। এ ছাড়া চারজনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, আটজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, চারজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। এ পর্যন্ত যে দুই হাজার ৮৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে এক হাজার ২৮৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এ ছাড়া ৮৩০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪০১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১৯১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৮২ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩০ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৮ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের নিচে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের ১১ জন ঢাকা বিভাগের, ছয়জন চট্টগ্রাম বিভাগের, একজন রাজশাহী বিভাগের, ছয়জন খুলনা বিভাগের, তিনজন বরিশাল বিভাগের, চারজন সিলেট বিভাগের এবং চারজন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। মোট মৃতদের মধ্যে এক হাজার ৩৭২ জন ঢাকা বিভাগের, ৭০৭ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১৫৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ১৯৪ জন খুলনা বিভাগের, ১০৯ জন বরিশাল বিভাগের, ১৩৩ জন সিলেট বিভাগের, ১০৪ জন রংপর বিভাগের এবং ৫৮ জন ময়মনসিংহ বিভাগের।

বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৭৭টি ল্যাবে ১২ হাজার ২৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লাখ ৯১ হাজার ৩৪টি। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।

নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭০৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৯৭০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৫৯৯ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ২৬ হাজার ৯৪০ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৯১০ জনকে। তিনি আরো জানান, প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে এক হাজার ৯৬১ জনকে। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে চার লাখ ২১ হাজার ৭৫২ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ২২ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন তিন লাখ ৬২ হাজার ২২২ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৯ হাজার ৫৩০ জন।

বগুড়ায় ৬ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫০

বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে শুক্রবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক, চাল ব্যবসায়ী, নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সরকারি হিসাবে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ জন।

টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ (টিএমসি) ও রফাতউল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ভোর ৪টায় ওই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দীপা রানী সাহা (৬৫) নামে একজন মারা যান। তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা সদরের দক্ষিণ শাহপাড়ার মৃত বিভতি বসু কু-ুর স্ত্রী। বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে শুক্রবার সকাল ৬টায় মনসুর আলী (৬৫) নামের একজন ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের জোড়া ম-লপাড়ায় বাসিন্দা। একই হাসপাতালে করোনাভাইরাসে শুক্রবার সকাল ১০টায় জাহাঙ্গীর আলম (৬৫) নামে ডিপজল পরিবহনের এক টিকিট মাস্টারের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বগুড়া শহরের বাদুরতলার বাসিন্দা। একই দিন সকাল সাড়ে ৭টায় বগুড়ায় করোনাভাইরাসে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নারায়ণ চন্দ্র (৮০) নামে এক অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক মারা যান। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার জিকিড়ার বাসিন্দা।

নতুন শনাক্ত ৫০ জন : বগুড়ায় করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৫০ জন আক্রান্ত, সুস্থ ১৮৪ জন ও সরকারি হিসাবে আরো একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। শুক্রবার বগুড়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে ব্রিফিংয়ে ডা: ফারজানুল ইসলাম এ তথ্য জানান। নতুন ৫০ জনের মধ্যে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় একজন, নন্দীগ্রামে দুইজন, শেরপুরে একজন, শাজাহানপুরে একজন ও বগুড়া সদর উপজেলার ৩৮ জন। বগুড়ায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা চার হাজার ৪২০ জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯১ জন।

এক দিনে রাজশাহীতে সুস্থ হলেন ১৯৬ রোগী

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, এক দিনেই রাজশাহীর ১৯৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন। দ্বিতীয় দফা নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় বৃহস্পতিবার তাদের সুস্থ ঘোষণা করা হয়। গতকাল শুক্রবার দুুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিভাগে মোট সুস্থ হয়েছেন ৪০৭ জন। এর মধ্যে ১৯৬ জনই রাজশাহীর বাসিন্দা। এ ছাড়া এ দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫ জন, নওগাঁর পাঁচজন, বগুড়ার ১৮৪ জন, সিরাজগঞ্জের একজন এবং পাবনার ছয়জন সুস্থ হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিভাগে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৯৬ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৩ জনের বাড়ি রাজশাহী। এ ছাড়া বগুড়ার ৫০ জন, নওগাঁর সাতজন, নাটোরের একজন, জয়পুরহাটের তিনজন, সিরাজগঞ্জের ৩৪ জন এবং পাবনার ১৮ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ দিন বিভাগের বগুড়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে এখন মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৭ জন। এর মধ্যে এ পর্যন্ত বগুড়ায় সর্বোচ্চ ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহীতে ১৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুইজন, নওগাঁয় ১৩, নাটোরে এক, জয়পুরহাটে দুইজন, সিরাজগঞ্জে ১০ জন এবং পাবনায় ৯ জন মারা গেছেন। পুরো বিভাগে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজার ১০৪ জন। রাজশাহীর দুই ল্যাবে বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষায় ১৪৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২৪ জনই রাজশাহীর বাসিন্দা। আক্রান্ত অন্যদের মধ্যে পাবনার ১৯ জন ও চাঁপানবাবগঞ্জের একজন।

কুমেক হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গে পাঁচজনের মৃত্যু

কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে নারীসহ আরো পাঁচজন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সবার মৃত্যু হয়। শুক্রবার কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা: মজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। কুমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, কুমেক হাসপাতালের আইসিইউতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুইজন এবং উপসর্গ নিয়ে তিনজন মারা গেছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইউনুছ আলীর ছেলে আবদুর রশিদ (৫৬) এবং চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার মৃত ইউনুছ পাটোয়ারীর ছেলে আবদুল কাদের (৫০)। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা যান কুমিল্লা সদর উপজেলার সায়েদ আলীর ছেলে আবু তাহের (৭০), কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইউনুছ আলীর ছেলে নূর আহম্মেদ (৬৫) এবং কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার আবুল কাশেমের মেয়ে হনুফা বেগম (৪০)। এ পর্যন্ত এই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২৫৫ জন।

দিনাজপুরে আরো তিনজনের মৃত্যু

দিনাজপুর সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৯ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরো ২৩ জন। গত ২০ জুলাই দিনাজপুর সদর ও পার্বতীপুর উপজেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়। তাদের নমুনা পরীক্ষায় ২৩ জুলাই রাতে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এ ছাড়াও গত রাতে চিরিরবন্দর উপজেলার অপর এক করোনা রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ দিকে গতকাল শুক্রবার নতুন করে জেলায় ৩৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার ২৭ জন, বিরামপুরের তিনজন, বিরলের দুইজন, খানসামার একজন ও পার্বতীপুরের একজন রয়েছেন।

সাতক্ষীরায় করোনায় মুক্তিযোদ্ধার উপসর্গ নিয়ে দুই নারীর মৃত্যু

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক মুক্তিযোদ্ধা ও উপসর্গ নিয়ে দুই নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা আলফাজ উদ্দীন গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় সাড়ে দিকে মারা যান। উপসর্গ নিয়ে মরিয়ম খাতুন নামের এক নারী বৃহস্পতিবার রাতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে এবং লায়লা বেগম নামের অন্য এক বৃদ্ধা রাতে তার নিজ বাড়ি কালিগঞ্জ উপজেলার নলতায় মারা গেছেন। করোনায় মৃত ব্যক্তিরা হলেন- সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নেবাখালী জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত অজিহার রহমানের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা আলফাজ উদ্দীন (৭০), দেবহাটা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের আব্দুল গফফারের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন (৫৫) ও কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা গ্রামের নুরুল হকের স্ত্রী লায়লা বেগম (৬৫)।

চট্টগ্রামে আরো ১৫৭ জনের শরীরে করোনা

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে গত এক দিনে ৮৪২টি নমুনা পরীক্ষা নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৭ জন। এর মধ্যে নগরীর ১০৬ জন ও বিভিন্ন উপজেলার ৫১ জন রয়েছেন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৫২ জন। গতকাল শুক্রবার সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১৬০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৬ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ২৩৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শনাক্ত হন আরো ৩১ জন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬ জন করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ছয়জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়। এ ছাড়া বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৩১টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৯ জন এবং শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ৬০টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট
্টগ্রামের ২১টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো চারজনের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া যায়। চট্টগ্রামে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩ হাজার ৫০৩ জন।

ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ দুইজনের মৃত্যু

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহে শুক্রবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুইজন মৃত্যুবরণ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কালীচরণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ফুটবলার হাফিজুর রহমান (৬২) ও শহরের আপরাপপুর খাঁ পাড়ার সিতাব উদ্দীন (১০৪)। হাফিজুর রহমান ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বয়ড়াতলা গ্রামের মৃত বাবর আলীর ছেলে। তিনি হামদহ এলাকায় বসবাস করতেন। এ নিয়ে ঝিনাইদহ জেলায় সরকারি হিসাবে ১৫ জন এবং বেসরকারি মতে ২০ জনের মৃত্যু হলো। বাকি পাঁচজন ঝিনাইদহে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন বলে জানান ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের করোনা সেলের মুখপাত্র ডা: প্রসেনজিৎ পার্থ বিশ্বাস।

ফকিরহাটে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু

ফকিরহাট (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় গতকাল শুক্রবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাসকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবদুল আজিজ (৬০) মৃত্যুবরণ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: অসিম কুমার সমাদ্দার। এ পর্যন্ত ফকিরহাট উপজেলায় করোনায় মোট সাতজনের মৃত্যু ও ১৩৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন। এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ২৬ জন। এ নিয়ে নোয়াখালী জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ৮৬০ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জন ও সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯৭২ জন। নতুন করে আক্রন্তদের মধ্যে রয়েছে নোয়াখালী সদর উপজেলায় ছয়জন, বেগমগঞ্জে দুইজন, সোনাইমুড়ীতে তিনজন, চাটখিলে দুইজন, সেনবাগে সাতজন ও কোম্পানীগঞ্জে একজন। গতকাল শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার।

জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরে ডিপ্লোমা চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী, এনজিও কর্মকর্তা, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ নতুন করে আরো ১৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১১ জন, সরিষাবাড়ী উপজেলায় একজন, মেলান্দহ উপজেলায় একজন ও বকশীগঞ্জ উপজেলায় একজন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮৬৮ জন। অন্যদিকে সুস্থ হয়েছেন ৬৩৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য জানায় জামালপুর স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে আছেন ১৩ জন ও হোম আইসোলেশনে ২০১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

রামগড়ে ‘গরিবের ডাক্তার’ খ্যাত চিকিৎসকের মৃত্যু

রামগড় (খাগড়াছড়ি) সংবাদদাতা জানান, করোনা আক্রান্ত হয়ে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত চিকিৎসক ডা: মানিক চন্দ্র শীল মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম সার্জিস্কোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বেশ কয়েকদিন ধরে তিনি জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো পাঁচজনকে করোনা মুক্ত ঘোষণা করেছেন বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: জালাল উদ্দিন আহমেদ। নতুন করোনামুক্তরা হলেন- বাজিতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স মাহমুদা আক্তার, সরারচর ইউনিয়নের মিরেরগাঁও গ্রামের দুর্জয় সাহা, এনামুল ইসলাম, হালিমপুর ইউনিয়নের শেখদী গ্রামের মশিউর রহমান ও বাজিতপুর পৌরসভার দক্ষিণ আলেয়াবাদ মহল্লার এ কে এম আহম্মেদ আলী। এ নিয়ে বাজিতপুর উপজেলায় সর্বমোট ১৪৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

চিতলমারী (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটের চিতলমারীতে নতুন করে তিনজন ব্যাংকারসহ আরো চারজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী রয়েছেন। এ নিয়ে চিতলমারীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ জন। তাদের মধ্যে ৩৯ জন সুস্থ হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শরণখোলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় নতুন করে আরো ১১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে শরণখোলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ জনে দাঁড়িয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: তরিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। মোট আক্রান্তের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং সুস্থ হয়েছেন ৩৫ জন।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/517525/