স্বাস্থ্য বিভাগের সন্দেহ দূর করতে সিদ্দিক হাওলাদার আজ বুধবার সকালে করোনা পরীক্ষার জন্য মাদারীপুরে সদর হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন। এ সময় এই ছবিটি তিনি তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন।
১৮ জুন ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৬:০৩

নমুনা না দিয়েও তিনি করোনা পজিটিভ

মুঠোফোনের খুদে বার্তায় এসেছে তিনি করোনা পজিটিভ। স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনও তাঁকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু সিদ্দিক হাওলাদার নামের এই যুবকের দাবি, তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনাই দেননি। তাহলে তিনি কী করে পজিটিভ হলেন? করোনার এই সময়ে ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুরে।

‘নমুনা না দিয়েও পজিটিভ হওয়া’ সিদ্দিক হাওলাদার (৩০) মাদারীপুর পৌরসভার পাকদী এলাকার ইচাহাক হাওলাদারের ছেলে এবং তিনি একটি পেট্রল পাম্পে কাজ করেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের সন্দেহ দূর করতে সিদ্দিক আজ বুধবার সকালে করোনা পরীক্ষার জন্য মাদারীপুরে সদর হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন এবং একটি সেলফি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেন। ছবি শেয়ার করার কিছুক্ষণ পরেই তিনি একটি ভিডিও বার্তায় ঘটনাটি সবাইকে জানান। সেখানে সিদ্দিক সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আমি করোনা পরীক্ষার নমুনা দিইনি। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। তারপরেও কে বা কারা আমার মুঠোফোন নম্বর দিয়ে করোনা পরীক্ষা করিয়েছে, তা আমি জানি না। এখন প্রশাসনের লোকজন আমাকে খুঁজছে।’

জানতে চাইলে সিদ্দিক প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার আমার মুঠোফোনে কোভিড-১৯ পজিটিভের একটা মেসেজে আসে। মেসেজে আমার নাম সিদ্দিকুর রহমান লেখা। বয়স ৫০ বছর। কিন্তু আমার নাম সিদ্দিক হাওলাদার, বয়স ৩০ বছর। এমন ভুল কী কারণে হলো, তা আমি জানি না। তবে আমার নাম আসায় এলাকার লোকজন আমাকে ও আমার পরিবারকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছেন। স্থানীয়ভাবে চাপের মধ্যে পড়ে গেছিলাম। ভয়ও পেয়ে যাই। পরে আজ সকালে হাসপাতালে গিয়ে এক চিকিৎসককে সব খুলে বলায় তিনি আমাকে নমুনা দিয়ে যেতে বলেন। পরে আমি নমুনা দিয়ে একটি ছবি ও ভিডিও শেয়ার করি।’

সিদ্দিকের বাবা ইচাহাক হাওলাদার বলেন, ‘আমার ছেলে সুস্থ। অকারণে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা নানাভাবে চাপ দিচ্ছেন। এলাকার লোকজন স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনের কাছে বলতেছে, আমার ছেলের করোনা হয়েছে। আমি দাবি করছি, করোনা পরীক্ষার সময় আইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন যেন নেওয়া হয়। এটা করা হলে অন্যের ফোন নম্বর দিয়ে বা অন্য মানুষকে কেউ বিতর্ক-বিড়ম্বনায় ফেলতে পারবেন না।’

জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইকরাম হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। আমি ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁকে নমুনা দিতে বলায় সে আজ নমুনাও দিয়ে যায়। এখানে আমাদের কোনো ভুল নেই। তবে যে বিষয়টি ঘটেছে—ওই এলাকায় সিদ্দিক নামের একজন তথ্য গোপন রেখে ভুল নম্বর দিয়ে চলে গেছেন। তাঁর দেওয়া নম্বরটি একই এলাকার আরেক সিদ্দিকের। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। কারণ, সিদ্দিক নামের ওই এলাকায় একজন পজিটিভ রোগী আছেন। তাঁকে আমরা এখনো শনাক্ত করতে পারিনি।’

ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন থেকে এসব বিষয়ে আরও সতর্ক থাকব। যাঁরা নমুনা দেবেন, তাঁদের সবাইকে আইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন আনতে বলা হয়েছে।’

https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1663391/