১০ জুন ২০২০, বুধবার, ১০:১৯

করোনায় মোট আক্রান্তের অর্ধেকই রাজধানীতে

৮৫.৫৪ শতাংশ ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে

করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের প্রায় অর্ধেকই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। অবশিষ্ট আক্রান্তরা ঢাকা বিভাগসহ দেশের অন্যান্য বিভাগে বাস করে। আবার রাজধানীসহ ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের রয়েছে মোট আক্রান্তের ৮৫.৫৪ শতাংশ। বাংলাদেশে ৮ মার্চে প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর থেকে রাজধানী ঢাকাই হয়ে উঠেছে করোনার হটস্পট, এখনো তাই রয়ে গেছে। ভবিষ্যতে করোনা কমে গেলেও হয়তো সবার পরে কমতে পারে ঢাকা শহর থেকে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ তত্ত্ব রোগ নির্ণয় ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) হিসাব মতে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের শুধুমাত্র রাজধানীতেই রয়েছে মোট আক্রান্তের ৪৮.৬৮ শতাংশ। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশে মোট করোনা আক্রান্ত ছিল ৭১ হাজার ৬৭৫ জন। গতকাল পর্যন্ত দেশের ৫৫ ল্যাবে উপসর্গযুক্ত অথবা সন্দেহজনক ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষা করা হয় চার লাখ ২৫ হাজার ৫৯৫টি। আইইডিসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, ৮ জুন পর্যন্ত সারা দেশে করোনা আক্রান্ত ছিল ৬৮ হাজার ৫০৪ জন। সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর এবং করোনায় মৃত্যুর পর গত ৮ জুন পর্যন্ত সারা দেশে করোনা আক্রান্ত ছিল ৪৩ হাজার ৪৬৪ জন। এর মধ্যে রাজধানীতেই ছিল মোট আক্রান্তের ৪৮.৬৪ শতাংশ। অর্থাৎ রাজধানীতে মোট আক্রান্ত ছিল ২১ হাজার ১৪০ জন। এ ছাড়া রাজধানী বাদে ঢাকা বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে মোট আক্রান্ত ছিল ৮ হাজার ৭৬২ জন। এটা মোট আক্রান্তের ২০.১৬ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জুন পর্যন্ত করোনার রোগী ছিল ১৬.৭৪ শতাংশ অর্থাৎ এ বিভাগে মোট আক্রান্ত ছিল ৭ হাজার ২৭৭ জন। রাজধানী শহর, ঢাকা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিভাগেই মোট আক্রান্তের ৩৭ হাজার ১৭৯ জন ছিল। রাজধানী, ঢাকা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে মোট আক্রান্ত ছিল ৮৫.৫৪ শতাংশ।

উল্লিখিত ৩ অঞ্চল ছাড়া অন্য বিভাগগুলোতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ঢাকা বিভাগের একটি জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে কম করোনা আক্রান্ত রয়েছে। যেমন সিলেট বিভাগে রয়েছে এক হাজার ২১৮ জন, রংপুর বিভাগে এক হাজার ১৬৬ জন, খুলনা বিভাগের ৯৪৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে এক হাজার ৩৯১ জন, বরিশাল বিভাগে ৫১৯ জন এবং রাজশাহী বিভাগে এক হাজার ৪২ জন করোনায় আক্রান্ত রয়েছে ৮ জুন পর্যন্ত।

করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা জেলায় এক হাজার ৫৭২ জন, গাজীপুর জেলায় এক হাজার ১৬৯ জন, কিশোরগঞ্জে ৩৮২ জন, মাদরীপুরে ২২৪ জন, মানিকগঞ্জে ১৬৭, নারায়ণগঞ্জে দুই হাজার ৭৫৩ জন, মুন্সীগঞ্জে এক হাজার ২০০ জন, নরসিংদীতে ১৯৫ জন, রাজবাড়ীতে ১০১ জন, ফরিদপুরে ৪৫৪ জন, টাঙ্গাইলে ৫৬ জন, শরীয়তপুরে ১৫৭ জন এবং গোপালগঞ্জে ৩৩২ জন।

চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলাতেই সবচেয়ে বেশি। এখানে অবশ্য চট্টগ্রাম মহানগরীও রয়েছে। এ জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ১৫১ জন, কক্সবাজার জেলায় এক হাজার একজন, কুমিল্লায় এক হাজার ২০৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৯৬ জন, খাগড়াছড়িতে ৪৭ জন, বান্দরবানে ৫১ জন, রাঙ্গামাটিতে ৬৮ জন, লক্ষ্মীপুরে ১৪৪ জন, নোয়াখালীতে ৮৬৫ জন, ফেনীতে ২৯০ জন এবং চাঁদপুরে ২৫৬ জন।

সিলেট বিভাগে সবচেয়ে বেশি সিলেট জেলায়। এখানে সিলেট মহানগরীও রয়েছে। সিলেটে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭৬ জন, এ ছাড়া মৌলভীবাজার জেলায় ১১৬ জন, সুনামগঞ্জে ২৫১ জন, হবিগঞ্জ জেলায় ১৭৫ জন।

রংপুর বিভাগের মধ্যে রংপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত। এ জেলায় করোনা আক্রান্ত রয়েছে ৫৩০ জন, গাইবান্ধায় ৭২ জন, নীলফামারীতে ১৩৮ জন, লালমনিরহাটে ৪৩ জন, কুড়িগ্রামে ৭৫ জন, দিনাজপুরে ১৮২ জন, পঞ্চগড়ে ৫২ জন এবং ঠাকুরগাঁও জেলায় ৭৪ জন।

খুলনা বিভাগের খুলনা জেলাতেই সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত। এ জেলায় আক্রান্ত ২১৫ জন, যশোরে আক্রান্ত ১৭৭ জন, বাগেরহাটে ৬০, নড়াইলে ৩৬ জন, মাগুরায় ৪৬ জন, সাতক্ষীরায় ৫৪ জন, ঝিনাইদহে ৬৪ জন, কুষ্টিয়ায় ১৪২ জন এবং চুয়াডাঙ্গায় ১২০ জন করোনায় আক্রান্ত।

ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে ময়মনসিংহে করোনায় আক্রান্ত ৬৬৪ জন, জামালপুরে ৩২১ জন, নেত্রকোনায় ২৭৯ জন, শেরপুরে ১২৭ জন।

বরিশাল বিভাগেই বাংলাদেশে সবচেয়ে কম করোনা আক্রান্ত রয়েছে। এ বিভাগের মধ্যে আবার সবচেয়ে আক্রান্ত রয়েছে বরিশালে ১৮৫ জন। এ ছাড়া বরগুনায় ৮১ জন, ভোলায় ৮০ জন, পটুয়াখালীতে ৯০ জন, পিরোজপুরে ৪১ জন এবং ঝালকাঠিতে ৪২ জন।

রাজশাহী বিভাগে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে রাজশাহীতে ৮৩ জন, জয়পুরহাটে ১৮৩ জন, পাবনায় ১১৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬৬ জন, বগুড়ায় ২৬৯ জন, নাটোরে ৬৭ জন, নওগায় ২১২ জন, সিরাজগঞ্জে ৪৩ জন।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/507231