১৮ মে ২০২০, সোমবার, ৩:১৩

রাজধানীতে যানজট ভোগান্তি

মহাসড়কে মানুষের ভিড়

রাজধানীর সড়কে গণপরিবহন বলতে শুধু বাস ও মিনিবাস নেই। বাকি সব যানবাহনই চলছে। রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, ট্রেম্পু আর প্রাইভেটকারের ভিড়ে মোড়ে মোড়ে যানজট। অন্যদিকে, মহাসড়কেও যানবাহনের ভিড়। ঈদ সামনে রেখে বেড়েই চলছে মানুষের চলাচল। ঢাকার অন্যতম গেটওয়ে মাওয়া, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরচিা ঘাটে এখন ঢাকাগামী ও ঢাকা ছাড়ার ধুম দেখা গেছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলীতে দুপুরে যানজটে আটকে ছিল হাজার হাজার যানবাহন।

রাজধানীতে বেড়েই চলেছে যান চলাচল। গতকাল রোববার দুপুরে ফার্মগেইট, কাওরানবাজার, বাংলামোটর, কাকরাইল, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ এলাকায় যানজট দেখা গেছে। অন্যান্য এলাকায় ছিল যানবাহনের ভিড় ও যানজট। গণপরিবহনের মধ্যে রাজপথে ছিল না শুধু বাস ও মিনিবাস। দেদারছে চলেছে সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা, প্রাইভেটকার, টেম্পু, হিউম্যান হলার ও মোটরসাইকেল। পুরান ঢাকায় মিনি ট্রাক ও পিকাপ ভ্যানে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। কোনে কিছুতেই সামাজিক বা শারিরিক দূরত্ব কোনোটাই মানা হচ্ছে না। রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে চলা বেশকিছু মোটরসাইকেল এখন চুক্তিভিত্তিক চলছে। যেখনে দুজন পাশপাশি বসে যাচ্ছেন।

ইনস্টিটিউট অব গ্লোবাল হেলথের গবেষক ড. লারা গোসচ ২০১৮ সালে তার এক গবেষণায় দেখিয়েছেন গণপরিবহন ব্যবহারকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ফ্লু জাতীয় ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ সময় তার পরামর্শ ছিল, ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে গণপরিবহন ব্যবহারে ‘পিক আওয়ার’ বা সবচেয়ে ব্যস্ত সময়গুলো এড়িয়ে চলা। গতকাল সারাদেশে করোনাভাইরাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ১২৭৩ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। অথচ এই মহাবিপদের কোন চিহ্ন রাজপথে দেখা যায় নি। মহাধুমধাম করেই মানুষ ছুটে চলেছে। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর চোখের সামনে এভাবে অবাধে যান চলাচল নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।

লকডাউনের মধ্যেও গতকাল দুপুরে গাড়ির চাপে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা থেকে আরিচামুখি মহাসড়কে যানজটে আটকে যায় হাজার হাজার যানবাহন। রিকশা থেকে শুরু করে ভ্যান, অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মিনি ট্রাক, পিকাপভ্যান, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে চেপে ঢাকার বাইরে ছুটছে মানুষ। অনেকে আবার পায়ে হেঁটেও চলেছে মাথায় ব্যাগ নিয়ে প্রখর রোদের মধ্যেই। গাবতলী ব্রিজে যানজটে আটকে থাকা একজন ভুক্তভোগি বলেন, হাতে ব্যাগ, মাথায় ব্যাগ নিয়ে শত শত মানুষের ঢাকা ছাড়ার দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে তারা ঈদ করতে বাড়ির পথে রওনা হয়েছে।

ট্রাফিক পুলিশের কন্ট্রোল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গাবতলী থেকে আমিনবাজার হয়ে প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার যানজটে আটকা পড়েছে কয়েক হাজার যানবাহন। ঢাকা জেলা ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে বলে কন্ট্রোল বিভাগ থেকে জানানো হলেও সাভারের আগে কয়েকটি পয়েন্টে কোন ট্রাফিক পুলিশ নেই বলে জানিয়েছেন সেখানকার স্থানীয়রা। মহাসড়কের ডাইভারশন দিয়ে ইউটার্ন নিতে গিয়ে কয়েকটি স্থানে রাস্তা আটকে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে ভুক্তভোগি কয়েকজন জানিয়েছেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রখর রোদে যানজটে আটকা পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার মানুষ।

https://www.dailyinqilab.com/article/292611