২৮ অক্টোবর ২০১৯, সোমবার, ৭:২৪

ধর্মঘটে অচল অবস্থা জাবিতে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছে দুর্নীতির রিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

অপরদিকে ধর্মঘট কর্মসূচি বানচাল করতে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্যের অনুসারী শিক্ষকরা।

এমন অবস্থায় সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এসে বাধার মুখে পড়েন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলনকে সমর্থন করে বলেন, আমি ক্লাস করতে এসেছিলাম। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি যৌক্তিক মনে হওয়ায় আমি ক্লাস না করতে পারলেও দুঃখ নেই।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ আন্দোলনকারীদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি ক্লাস করতে এসে দেখি কয়েকজন গেট আটকিয়ে রেখেছে। স্যার দেরও ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। এটা ঠিক নয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, এভাবে লাগাতার আন্দোলন ও প্রশাসনিক ভবন অবরোধের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন পিছিয়ে পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার সকাল ৯টায় নিজ নিজ বিভাগে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে গেলে সেখানে অনুষদ ভবনের প্রধান ফটকে বাধার সম্মুখীন হন। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনকারীদের বাকবিতণ্ডা চলে। পরে অনুষদ ভবনের শিক্ষকরা গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করলে তাদের সাথেও বাকবিতণ্ডা হয়।

অনুষদ ভবনে ঢুকতে না দেয়ায় ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের শহীদ মিনারের পাদদেশে বসে পরীক্ষা দিতে দেখা যায়৷

এ বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের সভাপতি আরিফা সুলতানা বলেন,পরীক্ষা নিতে ঢুকতে না দেয়ায় আমি শহীদ মিনারে পরীক্ষা নিচ্ছি। আমার লক্ষ্য নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস পরীক্ষা শেষ করা যাতে সেশন জট না হয়। এতে কোনো বাধা আসলে আমি যেভাবেই হোক, ক্লাস পরীক্ষা বজায় রাখবো।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের অধিকার আছে আন্দোলন করার, তেমনি অন্যদেরও অধিকার আছে ক্লাস পরীক্ষা দেয়ার। প্রত্যেকের অধিকার তার নিজের কাছে। এখানে বাধা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ অভিযোগ করে বলেন, 'অধ্যাপক শাহনাওয়াজ, সুফি মোস্তাফিজুর রহমান ও আতিকুর রহমান টিউটোরিয়াল পরীক্ষা দ্বারা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করেছেন। এর মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের সাথে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাড় করানোর চেষ্টা করেছে।

এদিকে আন্দোলনকারীরা নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে 'উপাচার্য অপসারণ মঞ্চ' করে অবস্থান নিয়েছে তারা। অবরোধের কারণে অফিসকক্ষে প্রবেশ করতে পারেননি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। অন্যদিকে সর্বাত্মক অবরোধের কারণে অধিকাংশ বিভাগে পূর্ব নির্ধারিত ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে কার্যত বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।

এমন অবস্থায় উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মিলিত সংগঠন ‘অন্যায়ের বিপক্ষে ও উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর’ চলমান আন্দোলনে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে জানিয়ে আন্দোলনকারীদেরকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন।

https://www.dailyinqilab.com/article/244149/