মা ও ছোটভাইয়ের আহাজারি। ছবি: যুগান্তর
৮ অক্টোবর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৩:১৯

কুষ্টিয়ার বাড়িতে শোকের মাতম

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মৃত্যুর ঘটনায় কুষ্টিয়ায় তার নিজ বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মেধাবী ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রোকেয়া খাতুন। সোমবার শহরের পিটিআই রোডে আবরারের বাসাজুড়ে ছিল স্বজনদের আহাজারি।

সপ্তাহখানেক আগে ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে আসেন আবরার ফাহাদ। তবে বাড়িতে এসে পড়ালেখা ঠিকমতো না হওয়ায় আগেভাগেই ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। রোববার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় আবরার। সকালে মা ঘুম থেকে ডেকে তুলে দেন।

এরপর ঢাকায় পৌঁছার আগ পর্যন্ত ফোনে চারবার কথা হয়। হলে পৌঁছে বিকালে মাকে ফোন দিয়ে জানায়। মোবাইল ফোনে এটিই মায়ের সঙ্গে শেষকথা। আর সারা রাত ফোন দিয়েও ছেলের খবর না পেয়ে বিচলিত হয়ে উঠেন মা রোকেয়া। সকালে উঠে খবর পান ছেলে আর বেঁচে নেই।

সোমবার ভোরে ফাহাদের মৃত্যুর খবর কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের বাড়িতে পৌঁছার পর থেকেই বাড়িটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। আকস্মিক এই হৃদয়বিদারক ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের স্বজনরা। সারা দিনই একই পরিবেশ বিরাজ করছিল। সবাই ফাহাদের মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন।

কিছুক্ষণ পরপর ছেলেকে নিয়ে বিলাপ করে কাঁদছেন, আবার মাঝে মাঝে মূর্ছা যাচ্ছেন। জানা গেছে, আবরারের গ্রামের বাড়ি কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে। দুই ভাইয়ের মধ্যে আবরার বড়। ছোট ভাই আবরার ফায়াজ ঢাকা কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাবা বরকতুল্লাহ বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের কর্মকর্তা ছিলেন। মা স্থানীয় সোনামণি কিন্ডারগার্টেনে পড়ান।

আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, আমার ছেলে অত্যন্ত মেধাবী। সে স্কুল ও কলেজে সবসময় প্রথমস্থান লাভ করেছে। সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। সবসময় লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকত। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার এবং মানুষের উপকারে আবরার সবসময় ছিল আগে।

তার স্বপ্ন ছিল- সে বুয়েট থেকে পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাবে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার আবরারকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে, আল্লাহ তাদের বিচার করবেন। যারা আমার কোল খালি করল, তাদের কোল আল্লাহ খালি করবে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন এবং দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

পিটিআই এলাকার বাসিন্দারা জানান, আবরারের পরিবারের সবাই খুবই ভালো। কুষ্টিয়ায় এলে স্থানীয় মসজিদে নামাজ আদায় করত আবরার।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/229407/