৩ আগস্ট ২০১৯, শনিবার, ৬:২৩

ডেঙ্গু নিয়েও সিন্ডিকেট

১৫০-১৮০ টাকার টেস্টিং কিট বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকায়

ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট নিয়েও চলছে অনৈতিক বাণিজ্য। এর সঙ্গে যুক্ত অসাধু ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট। পরিস্থিতির ভয়াবহতার সুযোগ নিয়ে ওই অসাধু ব্যবসায়ীরা ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি করছেন। ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা মূল্যের কিট বাজারে বিক্রি হচ্ছে এখন ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। বাজারে কিটের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা মিলেমিশে এই সিন্ডিকেট বাণিজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (সংক্রামক ব্যাধি) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা সমকালকে বলেন, কিটের সংকট তৈরি হয়েছিল। তবে সেটি ম্যানেজ করা হয়েছে। সব সরকারি হাসপাতালে আনুপাতিক হারে কিট পাঠানো হয়েছে। নতুন করে কিট আমদানি করা হচ্ছে। দু-একদিনের মধ্যেই সেই কিট এসে পড়বে। তখন আর সংকট থাকবে না।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। প্রতিদিনই রোগী বাড়ছে। রাজধানীকেন্দ্রিক ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশা ধাপে ধাপে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী থেকে গ্রামেও ডেঙ্গু আতঙ্ক। জ্বর হলেই ডেঙ্গুর আশঙ্কা করে হাজার হাজার মানুষ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ছুটছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত না হয়েও ভয়ে এই পরীক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এতে করে ডেঙ্গু পরীক্ষার প্রয়োজনীয় কিটের চাহিদা অধিক হারে বেড়েছে। এই সুযোগ নিয়েছে অসাধু সিন্ডিকেট। ডেঙ্গু পরীক্ষার এই অতি প্রয়োজনীয় ডিভাইসটি নিয়ে তারা বাণিজ্যে নেমেছেন। এনএসওয়ান, আইজিএম ও আইজিজি পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গু শনাক্তকরণে ব্যবহূত একটি কিটের দাম নেওয়া হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আগে এটির মূল্য ছিল ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। দেশের সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালেই এই কিটের সংকট দেখা দিয়েছে। রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলো কোনোভাবে চালিয়ে গেলেও বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে কিটের মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কিট সংকটের কারণে আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা সম্ভব হচ্ছে না বলে আমাদের সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন।

মূল্য বৃদ্ধির কথা স্বীকার করল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান :কিটের মূল্য বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছে এই ডিভাইস উৎপাদন ও আমদানির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো। কিট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওএমজি হেলথ কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মেসবাউল কবির সমকালকে জানান, কিটের চাহিদা এত বেড়ে যাবে, তা আগে কেউ বুঝতে পারেনি। এ কারণে বাড়তি কিট রাখার বিষয়ে কেউ গুরুত্ব দেয়নি। কারণ প্রতি বছর যে পরিমাণ কিট উৎপাদন করা হয়, সেগুলোর প্রায় অর্ধেক থেকে যায়। মেয়াদ শেষে সেগুলো ধ্বংস করে ফেলতে হয়। এতে আমাদের আর্থিক লোকসানের মুখে পড়তে হয়। কিন্তু এবার চাহিদা এত বেশি যে, উৎপাদন করা সব কিট শেষ হয়ে গেছে। আপাতত উৎপাদন বন্ধ আছে। কারণ কিট উৎপাদনের প্রয়োজনীয় রাসায়নিক আমদানি করতে হবে। দু-একদিনের মধ্যেই তা এসে যাবে। চলতি মাসে আমরা ১৫ লাখ কিট উৎপাদন করতে পারব। সরকারকে আমরা ৪০ হাজার কিট সরবরাহ করেছি। এটি সরবরাহ করা না হলে আরও সমস্যার সৃষ্টি হতো বলে তিনি জানালেন।

অতিরিক্ত মূল্যে কিট বিক্রির সত্যতা স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, 'তার কোম্পানি থেকে কিটের মূল্য ২৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটি এখন দ্বিগুণ মূল্যে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও এ বিষয়টি জানিয়ে আমাকে ফোন করা হয়েছে। তাদের বলেছি, আমার কোম্পানি থেকে কিট কিনে যারা হাসপাতালে বিক্রি করছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমার হাতে নেই। আমরা বিভিন্ন ল্যাবে বিক্রি করলে সেখানে কাজ করা কর্মীরা তা চুরি করে অন্যত্র দ্বিগুণ বাড়তি দামে বিক্রি করে দিচ্ছে। তবে আমার কোম্পানি কেউ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ইতিমধ্যে সতর্ক করে দিয়েছি।'

তবে একই কোম্পানির প্রশাসন শাখার কর্মকর্তা মামুন হোসেন বলেন, 'বিদেশ থেকে রাসায়নিক (র-ম্যাটেরিয়ালস) আমদানি করে আমরা আরডিটি কিট দেশেই তৈরি করে থাকি। বর্তমানে সরবরাহ বন্ধ আছে। কোম্পানির মালিক রাসায়নিক দ্রব্যগুলো আমদানির জন্য বিদেশ গেছেন। আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই তিনি দেশে ফিরবেন। এর পরই কারখানায় উৎপাদন কাজ শুরু হবে।' কিটের মূল্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মামুন বলেন, 'প্রত্যেকটির মূল্য ২৭৫ থেকে ২৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক ব্যাধি শাখায় প্রায় ৪০ হাজার আরডিটি কিট সরবরাহ করেছি। এ ছাড়া স্কয়ার, ল্যাবএইড, বারডেমসহ বড় বড় হাসপাতাল আমাদের কোম্পানি থেকে এই কিট ক্রয় করে থাকে। তাদের কাছে মূল্য আরও কম রাখা হয়।' সরবরাহ কম থাকার কারণে কিট বাড়তি মূল্যে বিক্রির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মামুন বলেন, 'তাদের কোম্পানির মালিকের কাছেও এ-সংক্রান্ত অভিযোগ এসেছে। যেসব বিক্রেতা ও সরবরাহকারী তাদের কোম্পানি থেকে কিট ক্রয় করেছেন, তারাই এখন নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় দ্বিগুণ আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি মূল্যে কিট বিক্রি করছেন।' এসব ব্যক্তির ফোন নম্বর কিংবা পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মামুন বলেন, 'মূল্য কে বৃদ্ধি করেছে সুনির্দিষ্টভাবে তা বলতে পারব না। তবে কিটের জন্য আমাদের অফিসে অনেক ভিড় ছিল। রাত ১২টা পর্যন্ত অফিস করতে হয়েছে। শত শত ব্যক্তি কিট ক্রয় করে নিয়ে গেছে।'

হসপিল্যাব নামে কিট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী গোলাম বাকী মাসুদ সমকালকে বলেন, 'এনএসওয়ান কিট একটি মৌসুমি পণ্য। এটি বছরে শুধু বৃষ্টির দুই মাস বিক্রি হয়। গত ৮-১০ বছর আগে থেকে এটি আমদানি করা শুরু হয় এবং আমরাই প্রথম আমদানি করি। বছরে ২০০ থেকে ৩০০ বক্স আমদানি করা হতো। কিন্তু সেগুলোর অর্ধেকও বিক্রি হতো না। এ কারণে ফেলে দিতে হতো। কিন্তু এবার এত চাহিদা বাড়বে, তা কেউ চিন্তা করেনি। তাই কিটের সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে একটি অসাধু মহল কিটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।'

গোলাম বাকী আরও বলেন, 'আইসিডিডিআর,বি, বারডেম, পপুলার, ল্যাবএইডসহ বিভিন্ন হাসপাতালে কিট সরবরাহ করে আসছি। আজ শনিবার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ডেকেছে। সেখানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা কিট আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।'

সিন্ডিকেটে কারা :রমিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বিভিন্ন কোম্পানি ও দোকান থেকে কিট কিনে বেসরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করেন। তিনি বলেন, 'আমদানিকারকদের কাছ থেকে কিট কিনে বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করে থাকি। কিন্তু কিট নিয়ে এখন যা চলছে, তাতে আমি এই পণ্যটি সরবরাহ করা আপাতত বন্ধ রেখেছি। কারণ ১৭০ থেকে ২৩০ টাকা দামের কিট এখন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। সেই কিট হাসপাতাল-ক্লিনিকে কত টাকায় বিক্রি করব? কমপক্ষে ৪৫০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা বিক্রি করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে আমি কিট সরবরাহ বন্ধ রেখেছি।' নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, 'কয়েকদিন আগে আমি কিটের জন্য বিএমএ ভবনে কয়েকটি দোকানে গিয়েছিলাম। কোনো দোকানদারই ১০ থেকে ২০টির বেশি কিট বিক্রি করতে চান না। সেগুলোও এখন আগের তুলনায় দ্বিগুণ মূল্য চান। এরপর ক্রয় মেমো দেবে না। আবার যেসব হাসপাতাল-ক্লিনিকে আগে থেকে কিট সরবরাহ করে আসছি, তারাও বাড়তি মূল্যে এই কিট ক্রয় করতে চায় না। এতে করে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। তাই নিজেকে এই অনৈতিক বাণিজ্য থেকে সরিয়ে রেখেছি।'

বিএমএ ভবনের রি-এজেন্ট বিক্রেতা ও ফারুক স্টোরের স্বত্বাধিকারী ফারুক আহমেদ বলেন, 'বর্তমানে চাহিদা বেশি কিন্তু সরবরাহ কম। এ কারণে দাম একটু বেশি। সবার কাছে কিট নেই। যাদের কাছে এটি আছে, তারা একটু বাড়তি দামে বিক্রি করছে।'

বাড়তি কত মূল্য নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ফারুক আহমেদ আরও বলেন, 'আমার কাছে তো দূরের কথা, বাজারে কারও কাছেই কিট নেই। তবে কিটের বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। চীন, ভারত থেকে আমদানি করা কিটের দাম কম। কিন্তু ইউএসএ, ইউকে, কোরিয়া ও ইউরোপের কোনো দেশ থেকে আমদানি করা কিটের দাম বেশি।'

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবনে ২০ থেকে ৩০টি দোকান মালিক ও আমদানিকারক কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা এই অনৈতিক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। তাদের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা কিট নিয়ে অনৈতিক বাণিজ্যে নেমেছে। অতিরিক্ত দ্বিগুণ দামে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কিট সরবরাহ করছে। নিরুপায় হয়ে ওই সিন্ডিকেটের নির্ধারিত দামেই কিট কিনতে হচ্ছে।

ল্যাবএইড হাসপাতালের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন) সাইফুর রহমান লেলিন সমকালকে বলেন, সারাদেশে ল্যাবএইডের ৩০টি শাখা আছে। প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কিটের প্রয়োজন। কিন্তু ১৫০ টাকার কিট এখন ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। এতে করে তাদের পরীক্ষা ব্যয় অনেক বেড়েছে। লোকসান হলেও তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডেঙ্গুর পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সেন্ট্রাল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. একেএম মোজাহার হোসেন সমকালকে জানান, এনএসওয়ান পরীক্ষার কিট নিয়ে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের যে পরিমাণ মজুদ আছে তা যে কোনো সময় শেষ হয়ে যেতে পারে। প্রতিদিনই ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষ ডেঙ্গু পরীক্ষা করছেন। জ্বর হলেই সবাই এখন এই পরীক্ষাটি করিয়ে নিচ্ছেন। যে ব্যক্তির ডেঙ্গু হয়নি, তিনিও পরীক্ষাটি করানোর কারণে কিট বেশি ব্যবহূত হচ্ছে। ফলে সারাদেশে এই কিটের প্রচুর চাহিদা তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মূল্যে কিট বিক্রি করছে। সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া মূল্যই কিট কেনার পেছনে ব্যয় হচ্ছে। এ কারণে বেসরকারি অনেক হাসপাতাল-ক্লিনিক ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে।

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি রানী চক্রবর্তী সমকালকে বলেন, কিটের সংকট অনেক বেশি। তাদের হাসপাতালে যে পরিমাণ কিট আছে তা নিয়ে আগামী রোববার পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এরপর কিট না এলে রোগীদের পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। অতিরিক্ত মূল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রীতি রানী চক্রবর্তী বলেন, অনেকদিন ধরে একজন সরবরাহকারীর কাছ থেকে তারা কিট ক্রয় করছেন। এ কারণে অন্যদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত একটু কম মূল্যে তারা ক্রয় করতে পারছেন।

সরকারি হাসপাতালেও সংকট :শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ূয়া জানান, তার হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ২০০ করে কিটের প্রয়োজন। মাঝখানে সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর কিছু কিট ক্রয় করা হয়েছে। তবে সেগুলোর দাম আগের তুলনায় বেশি। যে পরিমাণ কিট মজুদ আছে তাতে আরও দুই থেকে তিন দিন চলবে। এরপর আবার ক্রয় করতে হবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন জানান, তাদের কিট মজুদ আছে। এর পরও তারা কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের দেওয়া মূল্য তালিকা এখনও দেখা হয়নি। তবে আগের তুলনায় হয়তো তারা ৪০ থেকে ৫০ টাকা বাড়তি মূল্য দিয়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে কিট আসার পর এই সংকটের সমাধান হবে বলে মনে করেন তিনি।

কিট কী, কেন প্রয়োজন :ডেঙ্গু রোগী শনাক্তকরণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তিনটি পরীক্ষা নির্ধারণ করেছে। এর একটি এনএসওয়ান (ননস্ট্রাকচারাল প্রোটিন-১)। অপর দুটি হলো আইজিএম (ইমিউনোগ্লোবিউলিন্স এম) এবং আইজিজি (ইমিউনোগ্লোবিউলিন্স জি)। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া) ডা. আক্তারুজ্জামান জানান, জ্বর হওয়ার তিন দিনের মধ্যে এনএসওয়ান পরীক্ষা করানো হলে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে তা পজিটিভ আসবে। তবে তিন দিনের বেশি হলে তখন এনএসওয়ান পরীক্ষায় কোনো লাভ হবে না। তখন আইজিএম পরীক্ষা করাতে হবে। সেটিও জ্বর হওয়ার ৬ থেকে ৭ দিনের মধ্যে হতে হবে। এরপর পরীক্ষা করালে পজিটিভ আসবে না। আর আইজিজি পরীক্ষার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি অনেক বছর আগেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে তা জানা যাবে। এই পরীক্ষাগুলোর জন্যই মূলত আরডিটি কিট ব্যবহার করা হয়। রক্ত সংগ্রহ করে এই মেডিকেল ডিভাইসটিতে দিলে সঙ্গে সঙ্গে ফলাফল নিশ্চিত করা যায়।

https://samakal.com/bangladesh/article/1908172/