ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক। ছবি: যুগান্তর
৩০ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার, ১১:৩৬

কারাগারে সীমাহীন দুর্নীতি : দুদকের নজরে ৫০ কর্মকর্তা

শীর্ষ তিন কারা কর্মকর্তার অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে * নিজের দেয়া তথ্যেই কারা প্রশাসক কারাগারে * পার্থ থাকেন শাশুড়ির ফ্ল্যাটে, চড়েন বন্ধুর গাড়িতে * পাচারের উদ্দেশ্যে নিজ বাসায় ঘুষের টাকা লুকিয়ে রাখেন ডিআইজি প্রিজন্স

চট্টগ্রাম কারাগারের অনিয়ম-দুর্নীতি খুঁজতে গিয়ে গত ১০ বছরে অবৈধ উপায়ে শীর্ষ পদে কর্মরত কর্মকর্তাদের টাকা আয়ের নানা অভিযোগ বেরিয়ে আসছে। গত বছর অক্টোবরে ঘুষের ৪৭ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হয় ওই কারাগারের জেলার সোহেল রানা।

এতে দুর্নীতির ঘটনা জানাজানির পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত কমিটির মাধ্যমে শুরু হয় সরকারি তদন্ত। একই সঙ্গে দুদক থেকেও পৃথক অনুসন্ধান শুরু হয়। ৯ মাসের যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্তে অন্তত ৫০ জন কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

তথ্যগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সরেজমিন গিয়ে ৩৯ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। এরপর থেকেই এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দুদকের নজরদারিতে রয়েছেন। এদেরই একজন চট্টগ্রাম কারাগারের তৎকালীন ডিআইজি (প্রিজন) ও বর্তমানে সিলেটে কর্মরত পার্থ গোপাল বণিক।

তিনি রোববার ৮০ লাখ টাকাসহ দুদকের হাতে গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে দুদক কার্যালয়ে মামলা হয়। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতি মামলার আসামি হিসেবে পার্থ গোপাল বণিককে সোমবার বিকালে ঢাকার আদালতে পাঠানো হলে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলে পাঠানো হয়।

ফলে খোদ কারা প্রশাসক এখন কারাগারে। ৩৯ পৃষ্ঠার মামলার এজাহারে পার্থ গোপাল বণিকের ২৭-২৮/১, নর্থ রোড, গ্রিন রোডের ডোমিনো প্লানেটা ফ্ল্যাট থেকে জব্দকৃত ৮০ লাখ টাকার হিসাবসহ প্রতিটি টাকার নম্বর তুলে ধরা হয়।

টাকার ইনডেন্ট করতে গিয়ে দুদকের চার সদস্যের টিম কাজ করে রোববার বিকাল ৫টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সারারাত তারা নির্ঘুম কাটান পার্থ গোপাল বণিকের বাসায়। পার্থর স্ত্রীও জানতেন না ঘরে কত টাকা আছে।

দুদক সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত ডিআইজি (প্রিজন) পার্থ গোপল বণিক ছাড়াও অন্তত ৪৯ কর্মকর্তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের অনুসন্ধান চলছে। এই তালিকায় সাবেক এক আইজি (প্রিজন), বরখাস্ত হওয়া চট্টগ্রামের সাবেক জেলার সোহেল রানা, চট্টগ্রামের তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার (বর্তমানে বরিশাল) প্রশান্ত কুমার বণিকসহ ৫০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম রয়েছে।

তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে গোপনে অনুসন্ধান করছে দুদক। অনুসন্ধানকালে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। তাদের ওপর নজরদারি চলছে বলে জানান দুদকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তিনি বলেন, কয়েক কর্মকর্তার বিদেশ গমনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

সরকারি তদন্ত কমিটিও এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিল। দুদক সূত্র বলছে, এবারের অনুসন্ধানে কারা কর্তৃপক্ষের অনেক কর্মকর্তাই ফেঁসে যাবেন। শুধু চট্টগ্রামই নয়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের অন্যান্য কারাগারের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও পর্যায়ক্রমে অনুসন্ধান করে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সোমবার দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় দুদকের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও আলামত (৩০ লাখ টাকা) গায়েব করার চেষ্টার অভিযোগে পার্থ বণিকের স্ত্রীকেও আসামি করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি গর্ভবতী হওয়ায় মানবিক কারণে তাকে আসামি করা হয়নি।

মামলার জামিন শুনানির সময় পার্থর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, তার মক্কেলের বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ সালের আয়কর বর্ষে তিনি হাতে নগদ ৪০ লাখ ৩৩ হাজার ৩৬ টাকা আছে মর্মে আয়কর ফাইলে দেখিয়েছেন।

আর তার মা ও শাশুড়ির এফডিআর ভাঙিয়ে বাকি টাকা তার বাসায় রাখা হয়েছিল একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য। তিনি এক লাখ ৯ হাজার টাকার ওপর ইনকাম ট্যাক্স দিয়েছেন। শুনানির এ পর্যায়ে বিচারক ডিআইজি প্রিজনের বেসিক বেতন কত তা পার্থ গোপাল বণিকের কাছে জানতে চান এবং কোন গ্রেডে নিয়োগ হয়েছে তা জানতে চান।

জবাবে পার্থ গোপাল বণিক বলেন, তার বেসিক বেতন ৪২ হাজার থেকে ৪৩ হাজার টাকা হবে। তিনি পঞ্চম গ্রেডে নিয়োগপ্রাপ্ত। এ সময় তার অপর এক আইনজীবী বলেন, ওই ৪০ লাখ টাকা পার্থ গোপাল বণিকের সাদা টাকা এবং বাকি টাকা তার মা ও শাশুড়ির।

এদিকে দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার বাদী এজাহারে বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কর্মরত থেকে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে বৈধ পারিশ্রমিকের অতিরিক্ত হিসেবে ঘুষ গ্রহণ করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৮০ লাখ টাকা অর্জন করেন পার্থ গোপল বণিক। ওই টাকা তিনি নিজের দখলে নিয়ে অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থের অবস্থান গোপন করে পাচারের উদ্দেশ্যে নিজ আবাসিক বাসার কেবিনেটে লুকিয়ে রাখেন। যা দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা (ঘুষ), ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা (ক্ষমতার অপব্যবহার) ও ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘দুদকের অভিযান চালালে আসামি পার্থ গোপাল বণিক তার নিজের আবাসিক বাসার ড্রইংরুমের দক্ষিণ পাশের বেডরুমের দেয়াল ও সিলিং কেবিনেট থেকে গামছাবন্দি হলুদ গেঞ্জি দিয়ে মোড়ানো ৫০ লাখ টাকা এবং স্কুল ব্যাগ থেকে ৩০ লাখ টাকাসহ মোট ৮০ লাখ টাকা বের করে দেন। পার্থর উপস্থাপনা মোতাবেক ১০০০ টাকার নোট ৫ হাজার ৯০০টি এবং ৫০০ টাকার ৪ হাজার ২০০টি। এই ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।’

মামলায় দুদকের পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-৫) মুহাম্মদ ইউসুফের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ের উপপরিচালক মাহবুবুল আলম ও প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত টিমের মাধ্যমে পার্থ বণিকের বাসায় অভিযান পরিচালনার বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

এদিকে পার্থ গোপল বণিকের ঘুষ দুর্নীতির ৮০ লাখ টাকার সন্ধানের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, পার্থ বণিক নিজেই দুদকের কাছে ঘরে ৮০ লাখ টাকা আছে বলে ফেঁসে যান। দুদক কর্মকর্তাদের জেরার মুখে তিনি একেক সময় একেকরকম তথ্য দিতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ে ৮০ লাখ টাকার কথা স্বীকার করেন। অবৈধ সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগে রোববার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম।

টিমের প্রধান পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ যুগান্তরকে বলেন, চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানার বিরুদ্ধে ৪৭ লাখ টাকা দুর্নীতির ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্তে পার্থ বণিকসহ অনেকের নাম বেরিয়ে আসে। ওই প্রতিবেদনে উঠে আসা কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে অনুসন্ধানপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুদকে পাঠানো হয়।

এর ভিত্তিতে আমরা অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে তিন দিন সরেজমিন কারাগারের ৩৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেই। বন্দিদের সঙ্গে কথা বলি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন ও তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের একটি তালিকা তৈরি করে তাদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করি।

এরই অংশ হিসেবে পার্থ গোপাল বণিককে দুদকে তলব করা হয়। অনুসন্ধানের প্রয়োজনে আমরা পার্থ বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করি। আর তখনই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসতে শুরু করে।

যেভাবে ফাঁসলেন পার্থ বণিক : দুদক সূত্র জানায়, পার্থ বণিকের বাসায় নগদ টাকা আছে, দুদক টিমের কাছে এমন কোনো আগাম তথ্য ছিল না। জিজ্ঞাসাবাদের সময় টিমের সদস্যরা পার্থ বণিককে তার দুর্নীতির বিষয়ে সেট প্রশ্ন করেন। প্রশ্নের জবাবে পার্থ বণিক বলেন, তার আয়কর নথিতে ৪০ লাখ টাকা দেখানো আছে।

কিন্তু ওই টাকার হিসাব দিতে গিয়ে তিনি গোলমাল পাকিয়ে ফেলেন। প্রথমে বলেন, ৪০ লাখ টাকা ব্যাংকের লকারে আছে। তখন দুদক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ওই ব্যাংকে যেতে চান। এ সময় পার্থ বণিক বলেন, আসলে একটু ভুল হয়ে গেছে। ব্যাংকের লকারে আছে আমার স্ত্রীর ৯০ ভরি স্বর্ণ। আর ক্যাশ আছে ৪০ লাখ টাকা।

এ পর্যায়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ওই ক্যাশ ৪০ লাখ টাকা কোথায় আছে? তিনি বলেন, ৩-৪ মাস আগে ওই টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনেছি। কিন্তু ১০ পারসেন্ট লস দিয়ে আবার ভাঙিয়ে ক্যাশ করে ফেলেছি।

তখন তাকে প্রশ্ন করা হয়, ১০ পারসেন্ট লস দিয়ে ‘ইমম্যাচিউর’ সঞ্চয়পত্র ভাঙালেন কেন? তিনি এর উত্তর দিতে পারেননি। পরে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ক্যাশ টাকা আসলে কত আছে আপনার কাছে? ওই টাকা কোথায় আছে?

জবাবে পার্থ বণিক প্রথমে বলেন, আমার বাসায় এখন ৩০ লাখ টাকা আছে। দুদক টিমের একজন জানতে চান আমরা আপনার বাসায় এখন গেলে কি ৩০ লাখ টাকা পাব? তখন পার্থ বণিক বলেন, একটু ভুল বলেছি। বাসায় ৪০ লাখ টাকা আছে। পরে বলেন, না, না ৪৫ লাখ টাকা আছে।

পার্থ বণিক তার বাসায় ৪৫ লাখ টাকা ক্যাশ আছে মর্মে প্রথমে স্বীকার করেন। এ পর্যায়ে দুদক টিমের কর্মকর্তারা তাকে নিয়ে বাসায় যেতে চান। আর এটা শোনার পর পার্থ বণিকের স্বর পাল্টে যায়। তিনি বলেন, আমি এতক্ষণ যা বলেছি আসলে তা নয়। বাসায় আছে ৮০ লাখ টাকা।

পার্থ বণিক এই স্বীকারোক্তি দিয়ে প্যাঁচে পড়ে যান। এরপর তার মুঠোফোনটি জব্দ করেন দুদকের কর্মকর্তারা। তাকে নিয়ে খুব সতর্কতার সঙ্গে তার গ্রিন রোডের বাসায় টাকা উদ্ধার অভিযানে যায় দুদক টিম। তারা পৌঁছায় বিকেল সাড়ে ৪টায়। কিন্তু পার্থ বণিকের স্ত্রী ঘরের দরজা খুলতে চাননি।

তিনি টিভি স্ক্রল দেখে জানতে পারেন, তার স্বামী দুদকের কব্জায় রয়েছে। তাই তার ধারণা ছিল, দুদক এলে তার ঘরের ক্যাশ টাকা বের হয়ে যাবে। তিনি দুদক কর্মকর্তাদের দেড় ঘণ্টা ঘরের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে টাকা লুকানোর কৌশল খোঁজেন। পরে তিনি ঘরের বালিশ-তোশকের নিচে লুকানো ৩০ লাখ টাকা একটা বস্তায় ভরে পাশের বাড়ির ছাদে ছুড়ে ফেলে দিয়ে কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে দেন।

দুদক টিমের প্রধান পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ বলেন, পার্থ বণিকের স্ত্রী জানতেন ঘরে ৩০ লাখ টাকা আছে। তাই তিনি ওই টাকাই লুকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ঘরের কেবিনেটে তার স্বামী আরও ৫০ লাখ টাকা রেখেছেন বা ওই টাকা আছে, তা তিনি জানতেন না। তাই তিনি ওই টাকা সরানোর চেষ্টা করেননি।

৩০ লাখ টাকা পাশের বাড়ির ছাদে ছুড়ে ফেলেছেন- এটা আবার পার্থ বণিক জানতেন না। দুদক পরিচালক যুগান্তরকে বলেন, আমরা ওই ঘরে প্রবেশের পর পার্থ বণিক ৫০ লাখ টাকা বের করে দেন। পরে তিনি তার স্ত্রীকে বলেন, ৩০ লাখ টাকা কোথায়? তার স্ত্রী জবাব দেন কিসের ৩০ লাখ টাকা? তখন পার্থ বণিক বলেন, সঞ্চয়পত্রের ৩০ লাখ টাকা। পার্থ বণিক ও তার স্ত্রীর কথার মধ্যে ব্যাপক গরমিল দেখা দেয়।

দুদকের অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, সিলেট থেকে ঢাকা আসার পথে পার্থ বণিক ঘুষ-দুর্নীতির ৫০ লাখ টাকা নিয়ে আসেন। সেই টাকা তিনি রেখে দুদকে বক্তব্য দিতে আসেন। আসার সময় স্ত্রীকেও বলতে ভুলে গেছেন। তাই দু’জনের বক্তব্য দু’রকম ছিল।

পার্থ বণিক গ্রিন রোডের যে ফ্ল্যাটে থাকেন সেটি তার শাশুড়ির নামে কেনা দেখানো হলেও তিনিই সব টাকা দিয়েছেন বলে জমির মালিক দুদক কর্মকর্তাদের নিশ্চিত করেন। এ ছাড়া নিকেতনে তার মায়ের নামে রয়েছে একটি ফ্ল্যাট।

এর বাইরে তার নামে-বেনামে আর কি পরিমাণ সম্পদ আছে, কোন হিসাবে কত আছে জানার চেষ্টা করছে দুদক। তার বাড়িতে কালো রঙের একটি দামি গাড়ি পাওয়া গেছে। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে পার্থ বণিক জানিয়েছেন, গাড়িটি তার এক বন্ধুর কাছ থেকে উপহার পেয়েছেন।

দুদকের নজরদারিতে যারা : সূত্রমতে, ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক, জেলার সোহেল রানা, সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক ছাড়াও অনুসন্ধানের আওতায় রয়েছেন- অডিট টিমের সদস্য আবু বকর সিদ্দিকী, সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী, ডেপুটি জেলার মুহাম্মদ মুনীর হোসাইন, মো. ফখর উদ্দিন, মো. আতিকুর রহমান, মুহাম্মদ আবদুস সেলিম, হুমায়ন কবির হাওলাদার, মনজুরুল ইসলাম, সৈয়দ জাবেদ হোসেন, সহকারী সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ফার্মাসিস্ট রুহুল আমিন, রামেন্দু মজুমদার পাল, কর্মচারী লায়েস মাজহারুল হক।

এ ছাড়া কারারক্ষী ও অন্যান্য কর্মচারীর মধ্যে রয়েছেন- মো. আবুল খায়ের, নূর আলম, আনোয়ার হোসেন, মিতু চাকমা, শহিদুল মাওলা, শরিফ হোসেন, জুয়েল রানা, আনোয়ার হোসেন, স্বপন মিয়া, মহসিন দফাদার, আনজু মিয়া, লোকমান হাকিম, শিবারন চাকমা, ত্রিভূষণ দেওয়ান, অংচহ্না মারমা, রুহুল আমিন, শাহাদাত হোসেন, শাকিল মিয়া, আবদুল হামিদ, ইকবাল হোসেন, শামীম শাহ, মো. উসমান, মো. বিল্লাল হোসেন, গাজী আবদুল মান্নান, মো. তাজউদ্দিন আহমেদ, আবদুল করিম, মোসলেম উদ্দিন, বেলাল হোসেন, হিসাবরক্ষক এমদাদুল ইসলাম, ক্যান্টিন ম্যানেজার ওলিউল্লাহ, এইচএম শুভন, কাউছার মিয়া, আরিফ হোসেন।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/204772