২৫ জুলাই ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১১:৩৯

ঘণ্টায় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ঠাঁই নেই

২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক ভর্তি ৫৬০ জন * ঢাকার দুই মেয়রকে আরও দায়িত্বশীল হতে বললেন ওবায়দুল কাদের

তিন বছরের ছোট্ট মিশু তাসিন। এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছে। ১৭ জুলাই আইসিডিডিআর,বির ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রক্তের পরীক্ষা করালে স্বাভাবিক রিপোর্ট আসে।

কিন্তু এরপর ২৩ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রক্তের পরীক্ষা করানোর পর প্লেটলেটের পরিমাণ অনেক কম পাওয়ায় ওর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

এতে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন তাসিনের মা-বাবা। ওইদিনই শিশুকে বুকে চেপে ধরে তারা রাজধানীর শিশু হাসপাতাল, ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল, সেন্ট্রাল হাসপাতাল, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটে যান। কিন্তু কোথাও শয্যা ফাঁকা নেই বলে রোগীকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

কথাগুলো বেশ উদ্বেগের সঙ্গে যুগান্তরের কাছে বলছিলেন শিশু তাসিনের মা নাজমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘জ্বরের ঘোরে দুর্বল হয়ে পড়া কোলের শিশুকে নিয়ে শহরের এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটে বেড়িয়েছি। কিন্তু শয্যা খালি না থাকায় কোথাও আমার বাবুটাকে ভর্তি করতে পারিনি।

একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে রাস্তায় বসে পড়ি। পরে রাত ১২টার দিকে পরিচিত একজনের সহযোগিতায় মিরপুরের ডেল্টা হাসপাতালে একটি শয্যা ফাঁকা থাকায় ভর্তি করাই।

শুধু তাসিনের ক্ষেত্রেই নয়, এমন চিত্র বিরাজ করছে রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোয়। ডেঙ্গু পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয়েছে যে, অখ্যাত হাসপাতালগুলোও রোগীতে পরিপূর্ণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালেই এখন ডেঙ্গু রোগীতে সয়লাব।

প্রতিদিন অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তির জন্য এসে ফিরে যাচ্ছে। তবে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে রোগীরা ফিরে না এলেও সেখানে থাকতে হচ্ছে ওয়ার্ডের বাইরে, বারান্দায় বা নামাজের স্থানের মেঝেতে। অন্যদিকে শয্যা খালি না থাকায় অনেক রোগী ফিরিয়ে দিচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো।

জানা গেছে, অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে চলতি মাসের ২৪ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৪২১ জন। শুধু ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬০ জন। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ২৩ জনের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

রাজধানীর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দুই সিটিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিযোগ, আগের থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হলে এডিস মশাবাহিত এই রোগের বিস্তার এতটা ভয়াবহ হতো না। পা

শাপাশি মশা মারার যে ওষুধ দেয়া হয়েছে, সেগুলোও কার্যকর নয়। বিদ্যমান পরিস্থিতি সামাল দিতে ঢাকার দুই মেয়রকে আরও দায়িত্বশীল হতে বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম বড়ুয়া যুগান্তরকে বলেন, ডেঙ্গু রোগী অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।

এতে হাসপাতালে রোগীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পুরুষ ওয়ার্ডে (মেডিসিন) শয্যা আছে মাত্র ৬০টি। কিন্তু সেখানে রোগী ভর্তি আছে ৩৪০ জন। যার মধ্যে ১৩০ জনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।

একই ধরনের তথ্য জানিয়েছে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত রোগীর চাপে মেডিসিন ওয়ার্ডের পাশাপাশি অন্য বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড খালি করে সেখানেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের অবস্থা আরও খারাপ। এখান থেকে রোগী ফেরত দেয়ার কোনো নিয়ম নেই। তাই কোনো রোগী না ফিরিয়ে সব রোগীই ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪০৬ জন রোগী।

এত রোগীকে কীভাবে সেবা দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন যুগান্তরকে বলেন, আমরা কিছু অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া মেঝেতে রেখেও রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করাটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শয্যার বিষয়টি অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ যুগান্তরকে বলেন, সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের নির্দেশনা দেয়া আছে।

চিকিৎসকদের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে কোনো রোগী ফিরিয়ে দেয়ার কথা নয়। তবে বেসরকারি হাসপাতালের বিষয়টি তিনি জেনে জানাবেন।

বর্তমান পরিস্থিতি : স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে চলতি মাসের ২৪ দিনে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৪২১ জন। কেবল ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬০ জন।

অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ২৩ জনের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৮ হাজার ৫৬৫ জন। যাদের মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৯৯ জন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ২ হাজার ৫৮ জন। এ পর্যন্ত এ রোগে মৃত্যু ঘটেছে ৮ জনের। এ পর্যন্ত হাসপাতালে একদিনে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন বুধবার ৫৬০ জন।

এদিকে রাজধানীর পাশাপাশি ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার যুগান্তরকে জানান, এ পর্যন্ত গাজীপুরে ৪২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জন, চট্টগ্রামের অন্যান্য হাসপাতালে ৫৭ জন, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ১৬ জন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৪ জন, যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ৫ জন, বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২ জন এবং বরিশালের অন্যান্য হাসপাতালে ৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অর্থাৎ ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ১৭৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তথ্যের তারতম্য : সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।

যেখানে বিভিন্ন হাসপাতাল ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ২০ এর অধিক। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে জানায়, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সব তথ্য রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে পেয়ে থাকে।

তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ধরনের তথ্য-উপাত্তা বিচার-বিশ্লেষণে আইইডিসিআরকে আরও উদ্যমী হতে হবে। তাছাড়া রোগের প্রদুর্ভাব নিয়ে বছরব্যাপী গবেষণা পরিচালনা করলে এ ধরনের রোগের প্রদুর্ভাবের আগেই ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আখতার বলেন, এটা আইইডিসিআর থেকে আমাদের জানানো হয়। তারা ডিক্লেয়ার করলেই কেবল আমরা বলতে পারি।

তাদের একটি পৃথক ‘ডেথ রিভিউ কমিটি’ রয়েছে, যারা এসব মৃত্যু তদন্ত করে প্রকাশ করে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. রশীদ-ই-মাহবুব বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও মশা নিধনে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। সরকারের উচিত এখন মানুষকে সঠিক তথ্য জানানো।

দুদক : দেশব্যাপী ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পদক্ষেপ গ্রহণে গাফিলতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) অভিযোগ আসে।

সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যাপক হারে বাড়লেও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে না। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি এনফোর্সমেন্ট টিম ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বুধবার অভিযান পরিচালনা করে।

দুদক টিম মশক নিধনে ওষুধ ক্রয় ও প্রয়োগ সংক্রান্ত নথিগুলো খতিয়ে দেখে। পরবর্তী সময়ে সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহযোগে দশটি স্থানে যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়।

এর মধ্যে শিববাড়ি রোড বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের তমা কনস্ট্রাকশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হলের মমতাজ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং শেখ রাসেল টাওয়ারের তমা কনস্ট্রাকশনকে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের নিচে পানি জমিয়ে রেখে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বৃদ্ধি করার কারণে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ওবায়দুল কাদের : ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে ঢাকার দুই মেয়রকে আরও দায়িত্বশীল হতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে, প্রাণহানি ঘটছে। হাসপাতালে নতুন রোগী মানেই হচ্ছে ডেঙ্গু। এটা উদ্বেগের বিষয়, অস্বীকার করার উপায় নেই। এ বিষয়ে দুই মেয়রের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তারা সচেতনতার বিষয়ে ক্যাম্পেইন বিল্ড আপ করছেন, বৈঠক করছেন।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণের মেয়র জানিয়েছেন তাদের কাছে যে ওষুধ আছে তা অনেকটা অকার্যকর। কার্যকর ওষুধ আনার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, তারা যাতে ওষুধ সিলেকশনের ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনকে সাজেশন দেয়। কারণ রং-মেডিসিন দিয়ে তো কোনো কাজ হচ্ছে না।

বিষয়টি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জরুরি ভিত্তিতে দেখতে বলেছি। আমাদের প্রতিবেশী দেশেও নাকি এ ওষুধ আছে। সেখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব আনার ব্যবস্থা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।’

ঢাকার দুই মেয়র আগে থেকে সচেতন হলে পরিস্থিতি মোকাবেলা সম্ভব হতো কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে তাদের কার্যক্রম জোরদার করে দায়িত্বশীল হতে বলেছি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তাদের ভূমিকা আরও দায়িত্বশীল হতে হবে, সেটা আমরা তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।’

এছাড়া বুধবার ডেঙ্গু সংক্রান্ত এক সেমিনারে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়শেনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেছেন, ডেঙ্গু দেশে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানীর বেশির ভাগ পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে মশা মারার জন্য যে কীটনাশক ছেটানো হয়, সেগুলো মোটেও কার্যকর নয়। সেগুলোতে কোনো মশাই মরে না।

এসব কারণেই ডেঙ্গু এতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অথচ সিটি কর্পোরেশন থেকে এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/202931/