ফেরিঘাট। ফাইল ছবি
২৩ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার, ১:১১

লঞ্চ ও ফেরিঘাটে ফি বাড়ানোর সুপারিশ চূড়ান্ত

শুল্ক বাড়ছে অর্ধশতাধিক উপখাতে, নতুন শুল্কারোপ ২৫টির বেশিতে * ঢাকা, বরিশাল, না’গঞ্জ, খুলনাসহ কয়েকটি বন্দরে প্রবেশ ফি ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা হচ্ছে

দেশের অভ্যন্তরীণ লঞ্চ ও ফেরিঘাট ব্যবহারের ওপর পদে পদে ফি বাড়ানোর সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি। এতে ঘাট ব্যবহারে অর্ধশতাধিক উপখাতে ১১ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ফি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

২৫টির বেশি উপখাতে নতুন করে শুল্ক আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে। এ সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে এর প্রভাব পড়বে নৌ ও সড়ক পথের যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের ওপর। এতে যাতায়াত ব্যয় বাড়বে। কোনো আলোচনা ছাড়া শুল্কহার বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লঞ্চ ও কার্গো মালিকেরা।

সুপারিশ অনুযায়ী, ঢাকা নদী বন্দর (সদরঘাট), বরিশাল, চাঁদপুর, খুলনা ও ভোলাসহ কয়েকটি বড় লঞ্চ বন্দরে যাত্রীদের প্রতিবারের প্রবেশ ফি ৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। ফেরিঘাটগুলোতে প্রবেশের ফিও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

ফেরি পারাপারে প্রতিটি বাস ও ট্রাক ৬০ টাকা দিলেও এখন তা বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করা হচ্ছে। আগে কার ও জিপের প্রবেশ ফি ছিল না। এখন এসব যানবাহনকে প্রতিবার প্রবেশের জন্য ৩৫ টাকা গুনতে হবে।

একইভাবে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালে গাড়ি প্রবেশ করলে ‘সড়ক ব্যবহার’ চার্জ পরিশোধ করতে হবে। তবে বন্দর এলাকায় কুলি বা লেবার চার্জ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অন্যান্য স্থাপনা যেমন নদীর তীরভূমি ব্যবহার, নদী থেকে মাটি বা বালু উত্তোলন, ইকোপার্ক প্রবেশ, স্টোরেজ চার্জ, বিভিন্ন নৌপথের টোল ও দোকান ভাড়ার হারও বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

এতে নতুন নতুন উপখাতে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দেশীয় নৌযান ঘাটে অলস বসে থাকার জন্যও ফি পরিশোধ করতে হবে। নৌপথে সোলার প্যানেল বা সমজাতীয় ভাসমান স্থাপনা বসাতে হলেও টাকা দিতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শুল্কহারে লঞ্চ ও কমিটির এ সুপারিশ নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও সচিব অনুমোদন করার পর তা কার্যকর করা হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএর সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে শুল্কহার বাড়ানো ও নতুন নতুন উপখাতে শুল্ক আরোপ করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন লঞ্চ ও কার্গো মালিকেরা। কয়েকজন মালিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, নৌপথে সুযোগ-সুবিধা না বাড়িয়ে ফি বৃদ্ধি ও নতুন শুল্ক আরোপ যৌক্তিক নয়।

বাড়তি শুল্ক আরোপের খক্ষ পড়বে সরাসরি যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের ওপর। সরকার এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করলে আমরা যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব দেব। তারা বলেন, সম্প্রতি যাত্রীপ্রতি কর বাড়িয়েছে সরকার। এমন অবস্থায় বিআইডব্লিউটিএ বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে এ সেক্টর ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

তবে বিআইডব্লিউটিএর রাজস্ব আয় বাড়াতে শুল্কহারে পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ নিজস্ব আয়ে চলতে পারছে না। সরকার অনেক ভর্তুকি দিচ্ছে। এ সংস্থার ব্যয় বাড়ছে। ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনতে শুল্কহার বাড়াতে হচ্ছে।

নতুন শুল্কহারে যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের সক্ষমতা বেড়েছে, মানুষের আয় বেড়েছে। সেই তুলনায় আমরা খুবই সামান্য হারে শুল্ক বাড়াচ্ছি। এছাড়া অক্ষম, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বন্দরে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

শুল্ক বাড়ানোর প্রভাব সরাসরি যাত্রীর ওপর পড়বে বলে মনে করেন লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যা-প) সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইদুর রহমান রিন্টু। তিনি যুগান্তরকে বলেন, নতুন শুল্ক আরোপের প্রভাব পড়বে যাত্রীদের ওপর। এমনিতে এ সেক্টরে মন্দা যাচ্ছে।

যাত্রীপ্রতি কর আরোপ করেছে রাজস্ব বোর্ড। এর ওপর বিআইডব্লিউটিএ নতুন শুল্ক আরোপ করলে পুরো সেক্টর ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। নৌপথে নানা প্রতিবন্ধকতা আছে এগুলো দূর করতে হবে। এগুলো না করে শুল্ক আরোপের সুপারিশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, নতুন শুল্ক আরোপের বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। কোনো আলোচনা ছাড়া নতুন শুল্ক মেনে নেয়া হবে না। তিনি বলেন, সদরঘাট, বরিশালসহ কোথাও লঞ্চ রাখার পর্যাপ্ত স্থান নেই। ভাঙাচোরা পন্টুন জোড়াতালি দিয়ে রাখা হয়েছে। নদীতে নাব্য নেই।

বরিশালের মিয়ারচরে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেজিং করা হলেও সেখানে লঞ্চ চলাচল করতে পারছে না। এত সমস্যা রেখে কেন আমরা বাড়তি শুল্ক দেব? একই ধরনের মত জানিয়েছেন বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল হক।

শুল্কহার পুনর্নির্ধারণ নিয়ে গঠিত নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, শুল্কহারের তফসিল-১ থেকে ৫ এ পরিবর্তন আনতে বিআইডব্লিউটিএ একটি প্রস্তাবনা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল।

ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম-সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি আলোচনা করে সম্প্রতি প্রস্তাবনাটি চূড়ান্ত করেছে। গত সপ্তাহে প্রতিমন্ত্রী ও সচিব দেশের বাইরে সফরে থাকায় তা অনুমোদন পায়নি। তারা দুজন দেশে ফেরায় তা অনুমোদনের জন্য তোলা হয়েছে। অনুমোদন পেলেই চলতি অর্থবছরেই নতুন শুল্কহার কার্যকর করা হতে পারে।

যেসব উপখাতে শুল্কহার বাড়ানোর সুপারিশ : নতুন সুপারিশে বড় পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে নৌবন্দরে প্রবেশ ফি’র ওপর। ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, চাঁদপুর, খুলনা, নরসিংদী, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলার টার্মিনাল ভবনে প্রবেশ ফি ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে; যা শতকরা ১০০ ভাগ।

বর্তমানে এসব টার্মিনাল ভবনে প্রবেশে ৫ টাকা ফি রয়েছে। ভবন নেই বা আধাপাকা টিনশেড রয়েছে এমন টার্মিনাল যেমন- আরিচা, শিমুলিয়া, আশুগঞ্জ, ভৈরব বাজার, দৌলতদিয়া, নগরবাড়ি, টঙ্গী, কক্সবাজার, চরজানাজাত, মেঘনাঘাটসহ অন্যান্য ঘাটের ফি ৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা করার কথা বলা হয়েছে; যা বর্তমানের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। ওয়েসাইড লঞ্চ স্টেশন, টার্মিনাল, জেটিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।

নৌপথ সংরক্ষণ যেমন ড্রেজিং, সিগনাল বাতি স্থাপনসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনায় নৌযান থেকে কঞ্জারভেন্সি চার্জ আদায় করে বিআইডব্লিউটিএ। এ খাতের বিভিন্ন উপখাতে ১১ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেছে কমিটি।

এতে লঞ্চ ও জাহাজ থেকে যাত্রীপ্রতি বছরে ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৫ টাকা, স্পিডবোটে যাত্রীপ্রতি ৪১৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা এবং সকল পণ্যবাহী জাহাজ ও ফিশিং ট্রলার থেকে প্রতি গ্রস টনে ৪৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।

আর বিদেশি পতাকাবাহী মালবাহী জাহাজের ফি ১৭২.৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২১০ টাকা করা হয়েছে। তবে নৌ-প্রটোকলের অধীনে থাকা জাহাজ এর আওতায় আসবে না।

নৌপথে জাহাজ সঠিক পথে চলার দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে বিআইডব্লিউটিএর পাইলটেরা। প্রতি আট ঘণ্টার (প্রতি বিট) জন্য পাইলটেজ ফিস ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে।

ফেরিঘাটে গাড়ি প্রবেশের ফি বেড়েছে ২০ থেকে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত। ফেরি টার্মিনালে বাস, ট্রাক, মিটি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ট্রেলার ও ট্যাক লরি প্রবেশে ৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান ও স্টেশন ওয়াগন প্রবেশে ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা এবং টেম্পোসহ তিন চাকার যানবাহনে ২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া সব নদী বন্দরে বিআইডব্লিউটিএর সড়ক ব্যবহারের ফিও বেড়েছে। বন্দর এলাকায় বোঝাই বাস-ট্রাক প্রবেশে ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফেরিঘাটে শুল্কহার বাড়লে তা যাত্রীদের থেকে আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. আবুল কালাম।

তিনি বলেন, আমরা কিলোমিটার প্রতি সরকার নির্ধারিত হারে ভাড়া আদায় করি। ওই ভাড়া নির্ধারণে ফেরিঘাটের ফিও যুক্ত করা হয়। ফেরিঘাটে নতুন ফি যুক্ত হলে তা যাত্রীপ্রতি সমানহারে ভাগ করে আদায় করা হবে।

নদীর তীরভূমি ব্যবহারের ফিও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মিরকাদিম, টঙ্গী, মেঘনাঘাট ও ঘোড়াশাল এলাকায় প্রতি শতাংশ বাৎসরিক ৩ হাজার ৪৫০ টাকা ও অন্যান্য এলাকায় ১ হাজার ৭২৫ টাকা ফি নির্ধারিত রয়েছে।

নতুন সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে প্রতি মাসে শতাংশপ্রতি ২৮৯ টাকা ও অন্যান্য এলাকায় ১৪৪ টাকা হারে দিতে হবে। নদীর তলদেশ বা তীরভূমি খনন ফি ৭ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। এছাড়া সংস্থাটির বিভিন্ন স্থাপনা, ইকোপার্ক, জাহাজ ও অবকাঠামো ব্যবহারের ফিও বাড়ানো হচ্ছে।

নতুন যেসব উপখাতে ফি আরোপ : অন্তত ২৫টির বেশি উপখাতে নতুন ফি আরোপ করা কথা বলা হয়েছে। এর বেশিরভাগই পণ্যবাহী নৌযান সংশ্লিষ্ট। সুপারিশে বন্দরে অলস বসে থাকলে সেসব নৌযানকে ফি দেয়ার নতুন নিয়ম বেঁধে দেয়া হয়েছে।

এক্ষেত্রে ঢাকা, বরিশাল, চাঁদপুরসহ অন্যান্য বন্দরে যাত্রীবাহী লঞ্চকে ৭ টাকা হারে, ৫০ টন পর্যন্ত মালবাহী জাহাজের ক্ষেত্রে ৬২ টাকা এবং এর বেশি পণ্য পরিবহনকারী জাহাজকে নির্দিষ্ট হারে মুরিং চার্জ দিতে হবে।

বন্দর এলাকায় মাল ওঠানামার জন্য ল্যান্ডিং অ্যান্ড শিপিং চার্জ প্রতি টনে ৩৪.৫০ টাকা, ফেরি টার্মিনালে কার ও জিপপ্রতি ৩৫ টাকা, মোটরসাইকেলে ২০ টাকা ধরা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর উন্নয়নকৃত জমিতে বিদেশি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করলে প্রতি ১৫ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। নদীর উপরিভাগে নিজস্ব ভূমিতে শিল্প-কারখানা বা স্থাপনা নির্মাণের আগে অনাপত্তি নিতে ১০ হাজার টাকা ফি দিতে হবে।

যেসব নৌপথ খনন করে নাব্য ধরে রাখা হয় এমন রুটে নৌযান চালাচলে শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম নৌপথে পণ্যবাহী জাহাজের প্রতি গ্রস টনে ৮ টাকা, গোয়ালন্দ-রূপপুর ৫ টাকা, ঢাকা-বরিশাল ৫ টাকা, ঢাকা-আশুগঞ্জ-ছাতক ৫ টাকা, খুলনা-গোপালগঞ্জ ৫ টাকা, কক্সবাজার-মহেশখালী ৫ টাকা এবং সাভার-মিরপুর রুটে ৫ টাকা হারে ফি দিতে হবে। একইভাবে আরও কয়েকটি উপখাতে নতুন ফি আরোপ করতে যাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/202146