নড়িয়া-জাজিরা সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে : নয়া দিগন্ত
২২ জুলাই ২০১৯, সোমবার, ১১:০৯

ঢাকামুখী বন্যার পানি

বন্যার পানি ধেয়ে আসছে দেশের মধ্যাঞ্চলে। রাজধানী ঢাকার আশপাশের নদীগুলো ভরে যেতে শুরু করেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের নদীগুলোর পানি বিভক্ত হয়ে ঢাকার দিকে আসবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড আগাম সতর্কতা জারি করেছে। এদিকে গতকাল দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে বাংলাদেশের উজানে চীনের বন্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতীয় ঢলের সাথে চীনের পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুজ্জামান গতকাল রোববার রাতে নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, চীন বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে। এই কারণে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতিতে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। চীনের পানি বাংলাদেশের নদীতে আসার আগেই এর প্রভাব শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ বন্যা সৃষ্টির মতো কোনো পরিস্থিতি ঘটাতে পারবে না। বর্তমানে ২৮ জেলায় ৪০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন বলে জানা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড অবশ্য আগামী ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা এবং ঢাকার চারপাশের নদী ব্যতীত অন্য সব প্রধান নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে বলে জানিয়েছে। ঢাকার আশপাশের নদীগুলোয় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের উজানে ভারতের প্রদেশগুলোয় আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে ব্রহ্মপুত্র যমুনা এবং সুরমা নদীতে পানি হ্রাস পাবে। অপর দিকে গঙ্গা পদ্মা ও কুশিয়ারা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। টাঙ্গাইল এবং সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বগুড়া, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় একই রকম থাকতে পারে।

আগামী ১০ দিনের পূর্বাভাসে বন্যার সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র যমুনা নদীর পানি আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত কমতে পারে। পরবর্তীতে সামান্য বেড়ে স্থিতিশীল হতে পারে। ব্রহ্মপুত্র যমুনা নদীর অববাহিকায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে আগামী সাত দিন বন্যা পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এসব এলাকায় নদীর পানি কমে আবার সামান্য বাড়তে পারে। কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার নি¤œাঞ্চলে পানি প্রথমে স্থিতিশীল হতে পারে এবং পরে কমতে পারে। আপাতত গঙ্গা নদীর অববাহিকায় গোয়ালন্দ অববাহিকায় বিপদসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই। পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দ, আরিচা, ভাগ্যকূলে পানি আগামী পাঁচ দিনে বিপদসীমার নিচে নেমে যেতে পারে। তবে ঢাকার আশপাশের নদীর পানি এর মধ্যে বৃদ্ধি পেতে পারে। ঢাকার চারপাশের নদীর অববাহিকায় পানি বিপদসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই।

পানি বিশেষজ্ঞ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক ইএনএসও এপ্লিকেশন ক্লাইমেট সেন্টারের প্রধান বিজ্ঞানী রাশেদ চৌধুরী বন্যা বিষয়ে বলেন, ‘বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে আরো বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী ২০ বছর পূর্ববর্তী ২০ বছরের চেয়ে খারাপই যেতে পারে। এই শতাব্দীর শেষ ভাগে পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটবে যদি এখন আমরা যা করছি তা অব্যাহত রাখি।’ ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ জানিয়েছে, কয়েক দিনের ব্যাপক বৃষ্টিতে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ৪০ লাখের বেশি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও পানিবাহিত রোগের ঝুঁকিতে পড়েছে। বন্যা ও ভূমিধসে সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কয়েক লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। ৬৬ হাজারের বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যায় খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে দেখা দিয়েছে। এতে করে খাদ্যসঙ্কটের হুমকি তৈরি হয়েছে। শিশু, প্রসূতি, গর্ভবতী ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়বে।
এ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড পর্যবেক্ষণ করে থাকে এমন সব নদীর ৩৫ পয়েন্টে পানি বেড়েছে। কমেছে ৫৩ পয়েন্টে। পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুনামগঞ্জে সুরমা, শেরপুর-সিলেট জেলার সীমান্তে কুশিয়ারা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস, চাঁদপুরে মেঘনা, কুড়িগ্রামে ধরলা, গাইবান্ধায় ঘাঘট, চকরহিমপুরে করতোয়া, চিলমারী ও নুনখাওয়ায় ব্রহ্মহ্মহ্মপুত্র, ফুলছড়ি, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ ও আরিচায় যমুনা, বাঘাবাড়িতে আত্রাই, এলাশিনে ধলেশ্বরী, জামালপুরে পুরনো ব্রহ্মপুত্র, গোয়ালন্দে, ভাগ্যকুলে ও সুরেশ্বরে পদ্মা নদীতে। এসব নদীতে পানি সর্বোচ্চ ১ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বিপৎসীমার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর গতকাল পর্যন্ত কয়েকটি নদীর পানি কমেছেও। যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, করতোয়া, ধরলা, ঘাঘটে, সুরমা ও কুশিয়ারায় পানি কমেছে। বেড়েছে পদ্মায়, মেঘনায়, পুরনো ব্রহ্মপুত্রে ও তিতাসে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ বৃষ্টির পানি কমে গেছে। বৃষ্টি হ্রাস পেয়েছে। অপর দিকে ফরিদপুর, মাইজদীকোর্ট, রাজশাহী, তাড়াশ, দিনাজপুর, খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটা আরো অব্যাহত থাকবে। তার মানে এসব অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হচ্ছে না। ভারী বর্ষণের প্রবণতাও কমে গেছে। ফলে আগামী কয়েক দিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

শরীয়তপুর সংবাদদাতা জানান, শরীয়তপুরের পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত দুই দিনে এসব নি¤œাঞ্চলের অনেক বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। গতকাল রোববার জোয়ারের সময় সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে ৩টি উপজেলার অনেক ফসলি জমি। ঢাকা-শরীয়তপুর আঞ্চলিক সড়কের উত্তর ডুবুলদিয়া নামক স্থানে নির্মাণাধীন ব্রিজের পাশের বিকল্প সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এই সড়কে জাজিরার কাজীরহাট থেকে মঙ্গলমাঝিরঘাট পর্যন্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

বেড়া (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে। সেই সাথে বেড়া উপজেলার ৫টি গ্রামে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীভাঙনে বসতভিটা, মসজিদ, পোলট্রি ফার্ম, ফসলি জমি ও গাছপালা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষদের নিদ্রাহীন রাত কাটাতে হচ্ছে। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া ভাঙনে শতাধিক বসতভিটাসহ অসংখ্য গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এদিকে চরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলের সাত গ্রামের ৭০০ শতাধিক বানভাসি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাবনা প্রকল্প পরিচালক মো: শহিদুল ইসলাম জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেন।
গাইবান্ধা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যাপরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদীর বাঁধ ভাঙা পানি নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। বন্যাকবলিত এলাকার পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশনের অব্যবস্থা, গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা ও গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা এবং ৪৯টি ইউনিয়নের ৩৮৩টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৩২৮ জন।

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পৌরসভাসহ ১২টি ইউনিয়ন বাঁধ ভাঙা বন্যার পানিতে ভাসছে। বাড়িঘর ছেড়ে বানভাসি মানুষেরা উঁচু এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিলেও গবাদি পশু নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছে। গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কে পানির ¯্রােত তীব্র হওয়ায় ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া হরিরামপুর, রাখালবুরুজ, শিবপুর, নাকাই, তালুককানুপুর, মহিমাগঞ্জ, শালমারা ইউনিয়নের সব সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। ওইসব ইউনিয়নের মানুষ নৌকা অথবা ভেলায় চড়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

শেরপুর সংবাদদাতা জানান, উজান থেকে প্রবল বেগে নেমে আসা ঢলে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শেরপুর সদর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের শেরপুর অংশে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। শেরপুর সদর, শ্রীবরদী ও নকলা উপজেলার আরো ১৫টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৫টি ইউনিয়নের ৬০ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। শেরপুর-জামালপুর সড়কের পোড়ার দোকান এলাকার কজওয়েটি ৬-৭ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় তিন দিন থেকে শেরপুর-ঢাকা এবং উত্তরবঙ্গের সাথে এ পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বগুড়া অফিস ও সারিয়াকান্দি সংবাদদাতা জানান, সারিয়াকান্দিতে চরাঞ্চলের ৯টি ইউনিয়নের প্রায় আট হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম জানান, ৭ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। তার মধ্যে ৩ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমির পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ১ লাখ বেল। উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় ২৪ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া সব ফসলের ক্ষতি প্রায় ৬২ কোটি টাকার। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি না পেলেও অপরিবর্তিত রয়েছে। অপর দিকে সারিয়াকান্দির নিকট বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নারচী, ফুলবাড়ী ও ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। রোববার বেলা ৩টায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার এবং বাঙ্গালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, শেরপুরে বাঙ্গালী ও করতোয়া নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। নদী ভাঙনও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অন্তত ২০টি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। চরম আতঙ্কে দিনরাত যাপন করছেন নদীপাড়ের মানুষ। এ দিকে নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া বাঁধটি গতকাল রোববার পরিদর্শন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মকবুল হোসেন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান।

শিবচর (মাদারীপুর) সংবাদদাতা জানান, শিবচরে পদ্মার পর এবার আড়িয়াল খাঁ নদেও ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে শিবচরের সন্ন্যাসীরচরে অন্তত ২০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সংলগ্ন এলাকার উজানে ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার চরমানাইর এলাকায় ভাঙনের ব্যাপকতা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। সেখানে চরমানাইর চরবন্দরখোলা চন্দ্রখোলা ফাজিল মাদরাসার একটি ভবন আড়িয়াল খাঁ নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনে পড়েছে বহু ঘরবাড়ি, মসজিদ ও স্থাপনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড সীমিত আকারে বালুর বস্তা ফেললেও তা অপ্রতুল। অপর দিকে পদ্মার ভাঙনে উপজেলার বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি, চরজানাজাত ইউনিয়নে ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫০টি ঘরবাড়িসহ কয়েক দিনে দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি, একটি মাদরাসা, কালভার্ট বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে পাঁচটি স্কুল, দুইটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র-কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, হাটবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভাঙনকবলিতরা বসতবাড়ি ফেলে গবাদিপশু নিয়ে নিরাপদ স্থানে ছুটে যাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান বলেন, চরাঞ্চলের বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি, চরজানাজাত ইউনিয়ন বন্যা ও নদী ভাঙনে আক্রান্ত হয়েছে। প্রায় এক হাজার দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/427117