২২ জুলাই ২০১৯, সোমবার, ১০:৩৮

ছেলেধরা সন্দেহে বাড়ছে প্রাণহানি

গুজব না অন্য কিছু

১২ দিনে সারাদেশে গণপিটুনিতে নিহত ১০ আহত ৫০

'পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে'- গোয়েবলসীয় অপপ্রচারও হার মেনেছে সাম্প্রতিক এই গুজবের কাছে। এমন গুজবে বিশ্বাসী উত্তেজিত ও আতঙ্কিত মানুষের গণপিটুনিতে গত ৯ জুলাই থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। প্রাণে বাঁচলেও আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫০ জন। ছেলেধরা- এমন সন্দেহের বশে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন তারা।

ভাইরাসের মতো এই গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। এতে নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্কও তৈরি হয়েছে। প্রিয় সন্তানটি ছেলেধরার খপ্পরে পড়তে পারে- অনেকে সন্ত্রস্ত এই কারণে; কেউ সন্ত্রস্ত ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ভয়ে। গুজবকে কাজে লাগিয়ে স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের ব্যক্তিগত শত্রুদের টার্গেট করতে পারে- এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। অনেকের ধারণা, সুপরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে ও সেটিকে ব্যবহার করে এবং মানুষের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারকে কাজে লাগিয়ে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার অপচেষ্টা থাকা অস্বাভাবিক নয়। কেউ গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইছে কি-না, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সেদিকেও নজর রাখছে।

গতকাল একদিনেই দেশের কয়েকটি জেলায় গণপিটুনিতে আহত হয়েছে ২৪ জন। যাদের কয়েকজন মানসিক প্রতিবন্ধী। গত বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া আদর্শ স্কুলের সামনে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে আহত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে গতকাল রাত সোয়া ৮টায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। গণপিটুনির শিকার কেউ 'ছেলেধরা', এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ।

এমন বাস্তবতায় গতকাল এক বিবৃতিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানিয়েছে, ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনার তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে সংগঠনটি। এর আগে শনিবার পুলিশ সদর দপ্তরও এক বিজ্ঞপ্তিতে সবাইকে সতর্ক করেছে। অনুরোধ করেছে, গুজব শুনে আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গণপিটুনিতে জড়ানো রাষ্ট্রবিরোধী কাজের শামিল। গুজবের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

বিশিষ্টজন যা বলছেন :জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এক শ্রেণির মানুষ অসৎ উদ্দেশ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণকে বিঘ্নিত করতে সরকারের উন্নয়ন বা অগ্রযাত্রাকে বানচালের লক্ষ্যে এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। এদের খুঁজে বের করতে হবে। বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধী সন্দেহে গণপিটুনিতে হত্যা করে আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। কাউকে অপরাধী মনে হলে তাকে ধরে পুলিশে দেওয়া যেতে পারে।

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, সমাজে নৈতিকতার মানদণ্ড নিম্নমুখী। রল্প্রেব্দ রল্প্রেব্দ অসহিষুষ্ণতা ও দুর্নীতি ঢুকে গেছে। সুস্থ চিন্তা করার শক্তিও মানুষের যেন লোপ পাচ্ছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা এখানে জীবনমুখী নয়। আবার বিজ্ঞানমুখী শিক্ষা ব্যবস্থায় এখানে চিকিৎসক ও প্রকৌশলী তৈরিই মুখ্য হয়ে উঠছে। গণপিটুনিতে জড়িয়ে মানুষ যে হিংস্রতার পরিচয় রাখছে, তা কোনো সুস্থ সমাজব্যবস্থার লক্ষণ নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এএসএম আমানুল্লাহ সমকালকে বলেন, গুজবের পেছনে সমাজ এবং রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করে তোলার ষড়যন্ত্র থাকে। সমাজের কোনো একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুজব প্রচার করে। সেটি তারা বাস্তবায়ন করতেও মরিয়া থাকে। তাদের শনাক্ত করতে না পারলে এটা মহামারি আকার ধারণ করবে। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। এজন্য গুজব রটনাকারীদের শক্তভাবে দমন করতে হবে। গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং সেটি এক সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, ছেলেধরা গুজব মানুষকে আতঙ্কিত করে; আবেগকে আক্রান্ত করে। মানুষ যখন আতঙ্কিত হয়, তখন ছোটখাটো ইস্যুতেও সন্দেহ বাড়ে। কারণ মনস্তাত্ত্বিকভাবে সে সন্দেহপ্রবণ হয়ে মনগড়া ধারণায় আক্রান্ত হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে- ছেলেধরা, বাচ্চা ধরার জন্য আসছে, মাথা নিতে আসছে। ব্রিজ তৈরিতে মাথা লাগে- এমন কুসংস্কার থেকে মানুষকে বেরিয়ে আসতে হবে। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে হবে।

ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, যারা গণপিটুনিতে জড়াচ্ছে, তারা ভয়ঙ্কর সামাজিক অপরাধ করছে। দেশের প্রচলিত আইনে তাদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। সভ্য সমাজে এ ধরনের বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না।

পুলিশের ভাষ্য :পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আবার যারা গুজবে বিশ্বাস করে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ফৌজদারি অপরাধে জড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোথাও সন্দেহজনক কিছু দেখলে '৯৯৯'-এ কল দিয়ে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে একজন বাক-প্রতিবন্ধীকে ছেলেধরা সন্দেহে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনায় জড়িত ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গুজবের ব্যাপারে সচেতন করতে জেলার সব এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, গুজবকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে নিজের হাতে আইন তুলে নিতে না পারে, সে লক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। মসজিদ, মন্দিরসহ ধর্মীয় সব উপাসনালয়ে এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে। বিভিন্নম্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সচেতন করতেও কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। যারা ডিশ ব্যবসা করছেন, তাদের মাধ্যমে টিভিতে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

গুজবের সূত্রপাত :পুলিশের সাইবার অপরাধ বিভাগের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত চীনের এক কর্মকর্তা আলোচনার সময় প্রসঙ্গক্রমে বলেছিলেন, 'উই নিড মোর হেড।' এটি বলে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, দ্রুত পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য তাদের আরও জনবল দরকার। কিন্তু গুজব রটনাকারীরা জনবলের পরিবর্তে 'মানুষের মাথা লাগবে' বলে অপপ্রচার চালাতে শুরু করে। অবশ্য এই গুজব যারা প্রথম ছড়িয়েছে, তাদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ ও র‌্যাব এ পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করেছে, তারা মূলত পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব-সংক্রান্ত বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেছে।

সংশ্নিষ্টরা বলছেন, এর আগেও দেশে গুজব ছড়িয়ে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৩ সালের মার্চে যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে 'চাঁদে দেখা গেছে' বলে গুজব ছড়িয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক নৈরাজ্য তৈরি করা হয়েছিল। গুজব ছড়িয়ে রামুর বৌদ্ধমন্দির, নাসিরনগর ও রংপুরে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। 'নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন' চলার সময়ও বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হয়। এসবেরও আগে ২০১১ সালে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

দ্রুত ছড়াচ্ছে গুজব :পুলিশ সদর দপ্তর ও বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্র জানাচ্ছে, ৯ জুলাই থেকে শনিবার পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজধানীর বাড্ডা ও মোহাম্মদপুরে দু'জন, ঢাকার কেরানীগঞ্জে দু'জন, সাভারে একজন, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একজন, নেত্রকোনায় একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, পটুয়াখালীতে একজন ও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে একজন নিহত হয়েছেন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালে সারাদেশে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ৩৯ জন। অন্যদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসেই নিহত হয়েছেন ৩৬ জন। শনিবার একদিনেই ঢাকাসহ সারাদেশে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

ওই দিন সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণ হারান তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। তিনি উত্তর বাড্ডায় স্কুলে ছেলেমেয়ের ভর্তির বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলেন। বাড্ডা থানা পুলিশ তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি মর্গে রাখা হয়। রাতে তার পরিচয় মেলে। তার বাসা মহাখালী এলাকায়। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে। একই সন্দেহে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজিতে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন সিরাজ নামের এক যুবক। মিজমিজিতে সাবেক স্ত্রী শামসুন্নাহারের কাছে তার শিশু সন্তান রয়েছে। শনিবার সেখানে মেয়েকে দেখতে গিয়েছিলেন সিরাজ। এ সময় শামসুন্নাহার ছেলেধরা বলে চিৎকার করে লোকজন জড়ো করেন। গণপিটুনিতে ঘটনাস্থলেই সিরাজের মৃত্যু হয়। তার বাসা সিদ্ধিরগঞ্জের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি বাকপ্রতিবন্ধী ছিলেন। একই দিন সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে রেশমা ওরফে শারমিন নামের এক নারীকে পিটিয়ে আহত করে জনতা।

শনিবার সকালে সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে অজ্ঞাত এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই এলাকায় বাসা ভাড়া খুঁজতে গিয়েছিলেন। পরিচয় না পাওয়ায় লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে। একই দিন সকালে কেরানীগঞ্জের রসুলপুরে দুই যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করে স্থানীয় জনতা। এতে আহত দুই যুবককে পুলিশ উদ্ধার করে। গুরুতর আহত একজন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অজ্ঞাত ওই যুবকের লাশ মর্গে রাখা হয়। একই দিন রাত ১০টার দিকে মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জের দেওড়াছড়া চা বাগানে গণপিটুনিতে এক ব্যক্তি মারা যান।

এর আগে গত ৯ জুলাই রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে ছেলেধরা সন্দেহে রবিউল নামের এক যুবক গণপিটুনিতে নিহত হন। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কাজের সন্ধানে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। গত ১৮ জুলাই নেত্রকোনা পৌরশহরের নিউটাউন পুকুরপাড় এলাকায় ব্যাগে করে এক শিশুর ছিন্ন মাথা নিয়ে দৌড়ে পালানোর সময় রবিন নামের এক যুবক গণপিটুনিতে নিহত হন। ১২ জুলাই পটুয়াখালীর গেরাখালী গ্রামে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন দাদন মিয়া। ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে একইভাবে মৃত্যু হয় এক যুবকের।

গণপিটুনিতে আহত হওয়ার ঘটনাও ক্রমে বাড়ছে। গতকাল ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে লক্ষ্মীপুরে এক নারী, টাঙ্গাইলে এক ব্যক্তি, কুমিল্লায় পৃথক ঘটনায় চারজন, রাজশাহীতে তিনজন, দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে একজন, বগুড়ার আদমদীঘিতে একজন, নওগাঁয় ছয় জেলে, লালমনিরহাটে দু'জন, গোয়ালন্দে এক যুবক, নাটোরে মানসিক প্রতিবন্ধী দুই যুবক, পাবনায় চারজন, কালিহাতীতে একজন আহত হয়েছেন। পাবনার ভাঙ্গুরায় ছেলেধরা সন্দেহে এক গৃহবধূকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। এর আগে শনিবার ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় গণপিটুনিতে আহত হয়েছেন সাতজন। ১১ জুলাই বরিশালের গৌরনদীতে গণপিটুনিতে আহত হন তরিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান। ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গণপিটুনির শিকার হন তিনজন। ৭ জুলাই লক্ষ্মীপুরে একই কারণে গণপিটুনির শিকার হন এক বৃদ্ধ।

আসকের বিবৃতি :আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে- এমন গুজবকে কেন্দ্র করে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করায় জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এতে নাগরিক নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হচ্ছে। আসক আশা করছে, পুলিশ পরিস্থিতি বিবেচনায় সতর্কতা বজায় রাখবে। দ্রুত সংঘটিত ঘটনার তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করবে। জনসচেতনতা তৈরিতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেবে আসক।

https://www.samakal.com/todays-print-edition/tp-first-page/article/19074549/