গতকাল বৃহস্পতিবার শেরে বাংলা নগর ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার একটি স্টলে পছন্দের পণ্য দেখছেন দর্শক ও ক্রেতারা -সংগ্রাম
১১ জানুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ১১:১৩

মেলায় এখনও দর্শনার্থীর দেখা মেলেনি

ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলা দুই দিন অতিবাহিত হলেও শেষ হয়নি স্টল নির্মাণ কাজ। মেলায় এখনও দর্শনার্থীর দেখা মেলেনি। স্টল মালিকরা এখনও পণ্য সাজাচ্ছেন। বড় প্যাভিলিয়নের মালিকরা ট্রাকে ট্রাকে তাদের পন্য মেলায় নিয়ে আসছেন। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মেলা যেন ভাঙ্গা হাট।

মেলার দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকালে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, কারাপণ্য স্টলের মতো মেলার অনেক স্টল, প্যাভিলিয়ন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের স্টল, প্যাভিলিয়নও এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে।

দেশের বিভিন্ন কারাগারে বিভিন্ন সময় কারাবন্দিদের তৈরি পণ্যের পসরা নিয়ে বাণিজ্য মেলায় বসেছে বাংলাদেশ কারাপণ্য স্টল। বিভিন্ন কারাগার থেকে স্টলে ইতোমধ্যে পণ্য আসতে শুরু করেছে। তবে মেলা ঘুরে দেখা যায়, স্টল নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় সেগুলো দর্শনার্থীদের জন্য প্রর্দশন করা হচ্ছে না। সেখানে কর্মরতরা জানান, পুরোপুরি নির্মাণ কাজ শেষ হতে আরও দুই-একদিন লাগবে।

জানা গেছে,প্রতি বছরই মেলা শুরুর দিকে এ অবস্থা দেখা যায়। এটি নতুন কিছু নয়। এভাবে এক সপ্তাহ কাটিয়ে মেলা শেষের দিকে এসে বেচাকেনা বাড়লে সময় বৃদ্ধি নিয়ে চলে রশি টানাটানি। প্রতি বছরের মত এবারও চলছে ঢিলেতালে মেলার আয়োজন।

দর্শনার্থী এবং স্টল মালিকরা জানিয়েছেন,মেলা যদি শুরুর দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত পুরোদমে চলতো তাহলে মেলার সময় নতুন করে বৃদ্ধির দরকার হতো না। মেলা উদ্বোধন করার পরেও স্টল নির্মান করতে আরও সময় লেগে যায় দশ দিন। এতে করে ক্রেতারা শুরুর দিকে মেলায় আসতে চাননা। শেষে দিকে দর্শনাথী এবং ক্রেতাদের ভিড় বৃদ্ধি পায় মেলায় অংশ নেয়া কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের ওপর ছাড় দিয়ে থাকেন।

বড় প্যাভিলিয়নের মালিকরা বলছেন,একটি প্যাভিলিয়ন নির্মানে অনেক টাকা ব্যয় হয় এবং অনেক সময় লাগে। নির্মান প্রতিষ্ঠানের সাথে মেলার শুরুর আগে নির্মান শেষ করার কথা থাকলেও তারা তা করতে পারে না। এতে করে সময় মত মেলা শুরু হলেও মেলা শুরুর এক সপ্তহ পর্যন্ত কাজ চলে। এতে করে ক্রেতা দর্শনাথীরা শুরুর দিকে মেলায় আসতে চাননা। মেলার শেষের দিকে ভিড় ঠেলেও তারা মেলায় আসেন।

যাদেও নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে তারা বলছেন,আমাদের কোন কাজ নেই। দুই দিন অতিবাহিত হলেও কোন দর্শনার্থী কিংবা ক্রেতার দেখা মেলেনি। আরও কত দিন এ অবস্থা অব্যাহত থাকে জানি না। স্টল মালিকরা প্রতি দিনই লোকসান গুনছে।

কারাপণ্যের পাশেই বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের স্টল নির্মাণের কাজ চলছিল। সেখানে কর্মরতরা জানান, স্টলের কাঠামোই এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। তারপর স্টলে পুকুর তৈরি, সাজসজ্জাসহ অনেক কাজ রয়ে গেছে। পুরো কাজ শেষ করতে এখনও ৫ থেকে ৬ দিন লেগে যেতে পারে।

তবে সরকারের আরেক প্রতিষ্ঠান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে দর্শনার্থীদের ঘুরতে ও পণ্য কিনতে দেখা যায়।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, ছোট আকারের স্টলগুলোর বড় একটা অংশেরই নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে বড় স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোর বড় অংশেরই নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে, দর্শনার্থীরা ঘুরে দেখছে ও পছন্দের পণ্য কিনছে।

এ বছর মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখছে মেলা কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্রাম নেয়ার জন্য বেঞ্চ তৈরির কাজও শেষ হয়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর আয়োজনে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা ৯ জানুয়ারি শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মেলার উদ্বোধন করবেন। শেষ হবে ৮ ফেব্রয়ারি।

প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো এবার অনলাইনে মেলার টিকিট পাওয়া যাবে।

মেলায় প্যাভিলিয়ন, মিনি-প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ৬০৫টি। এর মধ্যে রয়েছে প্যাভিলিয়নের ১১০টি, মিনি-প্যাভিলিয়ন ৮৩টি ও রেস্তোরাঁসহ স্টলের সংখ্যা ৪১২টি।

http://www.dailysangram.com/post/360608