২৯ মার্চ ২০১৬, মঙ্গলবার, ৭:১৫

নারী এবং শিশু নির্যাতনের ঘটনা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ

কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু ধর্ষিতা ও খুন হওয়ার ঘটনা এবং সম্প্রতি পিরোজপুরে একজন কিশোরী কাজের মেয়ে গৃহকর্তা কর্তৃক ধর্ষিতা হওয়া এবং ঢাকায় কণ্ঠশিল্পী কৃষ্ণকলির স্বামী খালেকুর রহমান কর্তৃক ধর্ষিতা হয়ে গৃহকর্মী জান্নাত আক্তার শিল্পী খুন হওয়াসহ শত শত শিশু এবং নারী নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২৯ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিশু ও নারী অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলেছে।

গত ২০ মার্চ কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সোহাগী জাহান তনু টিউশনী করে বাসায় ফেরার পথে ধর্ষিতা হয়ে খুন হয়। ক্যান্টনমেন্টের মত নিরাপদ এলাকার বাসায় ফেরার পথে তনুকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দেশবাসী সংকিত ও ক্ষুব্ধ। সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হলো তনু হত্যার ১ সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতোই বর্তমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান কামাল বললেন, ‘আমরা বড় বড় ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছি, এটাও পারব’। তনু হত্যার ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুনীদেরকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হওয়ায় সাধারণ মানুষ বিশেষ করে স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ রাস্তায় নেমে প্রতিদিনই মানববন্ধন করছে এবং তনুকে হত্যাকারী খুনীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবী করছে। সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কথা বললেও মামলার দৃশ্যমান ও বিশ্বাসযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই।

প্রায় ৪ বছর আগে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি খুন হওয়ার পর তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুনীদের গ্রেফতার করার ঘোষণা দেন। কিন্তু ২৪ ঘন্টা তো দূরে থাক আজ ৪ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সাগর-রুনির ছোট্ট ছেলেটি, তাদের আত্মীয়-স্বজন, দেশবাসী জানতে পারলো না যে, তাদেরকে কারা খুন করেছে। তাই স্বাভাবিক কারণেই তনুর ধর্ষক ও খুনীদের গ্রেফতারে বিলম্ব হওয়ায় তার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, সহপাটীসহ দেশবাসী সকলেই উদ্বিগ্ন যে, তনু হত্যার প্রকৃত খুনীরা আদৌ গ্রেফতার হবে কিনা?

তাই আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। স্বার্থান্বেষী মহল তনু হত্যার ঘটনা যাতে ধামা-চাপা দিতে না পারে, প্রকৃত ধর্ষক ও খুনীরা যাতে আড়াল হতে না পারে, সেজন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করছি।
বাংলাদেশের জনগণ তনু হত্যাসহ অন্যান্য শিশু এবং নারী নির্যাতনকারী খুনীদের আসল চেহারা ও বিচার দেখতে চায়। সংশ্লিষ্ট মহল যদি বাংলাদেশের জনগণকে বোকা মনে করে, এ ধরনের পৈশাচিক ঘটনাগুলোকে ধামাচাপা দিতে চান, তাহলে জনগণ একদিন রুখে দাঁড়াবে এবং এব্যাপার সমূহ দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহণ করতে হবে।

নরপশুদের বিরুদ্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে কুণ্ঠাবোধ করবে না।”