১৪ এপ্রিল ২০১৬, বৃহস্পতিবার, ৭:০২

জামায়াত সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব শাহরিয়ার আলমের মন্তব্য সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও বেআইনী

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব শাহরিয়ার আলম গত ১৩ এপ্রিল, বুধবার তার কার্যালয় একদল সাংবাদিকের সঙ্গে বৈঠককালে “জামায়াত পুরোপুরি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা জরুরী। জামায়াতকে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড পালন করতে দেয়া হবে না।” মর্মে যে আপত্তিকর ও অসত্য মন্তব্য করেছেন তার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি জনাব হামিদুর রহমান আযাদ আজ ১৪ এপ্রিল প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাসী একটি বৈধ ও আইনানুগ রাজনৈতিক দল। সন্ত্রাসের সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোন সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব শাহরিয়ার আলম ‘জামায়াতে ইসলামীকে সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসাবে অভিহিত করে ‘জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ করা জরুরী’ বলে যে মন্তব্য করেছেন তা সম্পূর্ণ অসত্য, অন্যায় ও অযৌক্তিক।

জামায়াতে ইসলামী তার জন্মলগ্ন থেকেই সন্ত্রাসী রাজনীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছে। জামায়াত সন্ত্রাসী রাজনীতিকে সব সময়ই ঘৃণা করে থাকে। এদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনেই জামায়াতে ইসলামী বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। একটি বৈধ ও আইনানুগ রাজনৈতিক দল হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সকল রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। কাজেই জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নই আসে না। দেশের একটি বৈধ ও আইনানুগ রাজনৈতিক দল সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এ ধরনের আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করা শুধু অন্যায়ই নয়, বে-আইনীও বটে। এ পর্যন্ত কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ততার কথা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। কাজেই তথ্য প্রমাণ ছাড়া পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এ ধরনের আপত্তিকর মন্তব্য সম্পূর্ণ বেমানান ও অনৈতিক।

তিনি ‘জামায়াতে ইসলামীকে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড পালন করতে দেয়া হবে না’ বলে যে মন্তব্য করেছেন তা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও বেআইনী। দেশের একটি বৈধ রাজনৈতিক দল সম্পর্কে তিনি এ ধরনের গর্হিত মন্তব্য করতে পারেন না।

দেশের জনগণ জানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এ দেশে হত্যা, সন্ত্রাস, গুম, অপহরণ, নারী ধর্ষণ, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, দখলদারী ইত্যাদি অপকর্মের সাথে জড়িত। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলির সন্ত্রাসের কারণে দেশবাসী অতীষ্ঠ। কাজেই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিজেদের সংগঠনের দিকে যদি তাকান তাহলে দেখতে পাবেন যে, আওয়ামী লীগই এদেশের বড় সন্ত্রাসী সংগঠন। সুতরাং জামায়াতে ইসলামীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করে নিজের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার পরিবর্তে নিজেদের সংগঠনকে সামলানোর জন্য আমি তার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে ভিত্তিহীন, অসত্য ও অযৌক্তিক মন্তব্য করে নিজের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব শাহরিয়ার আলমের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”