২৬ এপ্রিল ২০১৬, মঙ্গলবার, ১১:১১

প্রধানমন্ত্রীর নির্জলা অসত্য বক্তব্যের প্রতিবাদঃ দেশে কোন হত্যাকাণ্ডের সাথে জামায়াতের কোন সম্পর্ক নেই

কলাবাগানে জোড়া খুনের মতো বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের জন্য জামায়াত-বিএনপিকে অভিযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় গণভবনে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ২৬ এপ্রিল প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে আমি স্পষ্টভাষায় জানাতে চাই যে, কলাবাগানের জোড়া খুনসহ দেশে সংঘটিত কোন হত্যাকাণ্ডের সাথেই জামায়াতে ইসলামীর কোন সম্পর্ক নেই। প্রধানমন্ত্রী জামায়াতের বিরুদ্ধে নির্জলা অসত্য অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। তাই দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য জামায়াতের পরিকল্পিতভাবে গুপ্ত হত্যা চালানোর প্রশ্নই আসে না। গুপ্ত হত্যা চালানো কিংবা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোন সম্পর্ক নেই।

প্রধানমন্ত্রী জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন সেগুলো তার মনগড়া। দেশবাসী সকলেই জানেন যে, দেশে কোন অঘটন ঘটলেই তার জন্য জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অসত্য বক্তব্য দিয়ে সরকারের মন্ত্রীরা পানি ঘোলা করে থাকেন।

ইতোপূর্বেও আওয়ামী লীগের নেতারা জামায়াতের বিরুদ্ধে এ ধরনের কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপন করে পানি ঘোলা করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু তাদের কোন বক্তব্যেরই এখন পর্যন্ত তারা সত্যতা প্রমান করতে পারেননি। তাদের এ বক্তব্যও অসত্য প্রমানিত হবে ইনশাআল্লাহ।

কোন ঘটনা সংঘটিত হলেই সুষ্ঠু তদন্তের পূর্বেই সে জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য দিলে তাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। এতে সন্ত্রাসীরা উৎসাহের সাথে আরো সন্ত্রাস চালাতে থাকে। কাজেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করে অসত্য বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকা দেয়ার হীন উদ্দেশ্যেই সরকার জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের উপর দোষ চাপিয়ে পার পাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এভাবে অসত্য বক্তব্য দিয়ে জনগণকে ধোকা দিয়ে বোকা বানানো যাবে না।

ইতোপূর্বে দেশে ইতালী ও জাপানী নাগরিক হত্যাসহ বহু হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু কোন হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার কারনেই দেশে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। অতিসাম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড: এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়েছেন।

দেশবাসী সকলেই জানেন যে, গুপ্ত হত্যা, সন্ত্রাস, গুম, অপহরণ, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, খুনাখুনি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের বাড়ী-ঘরে হামলা এবং বাড়ী-ঘর ও জমি-জমা দখলের সাথে আওয়ামী লীগের লোকেরাই জড়িত। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরাই দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। কাজেই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলেই দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে দেশবাসী আশা করে।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ উত্থাপন করা থেকে বিরত থেকে কলাবাগানের জোড়াখুনসহ সম্প্রতি সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনানুগ শাস্তি প্রদান করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”