২৮ মে ২০১৬, শনিবার, ৫:৪৭

বর্তমান সরকার ক্ষমতার নেশায় নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৫ম ধাপে ২৮ মে অনুষ্ঠিত ৭১৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালট ডাকাতি, বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণ করে প্রতিপক্ষের লোকদের হত্যা করে সরকারী দলের লোকদের বিজয়ী করার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি জনাব হামিদুর রহমান আযাদ আজ ২৮ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,“আজকে ২৮ মে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলির চাইতে সহিংসতা ও ভোট ডাকাতি অনেক বেশী হয়েছে।

আজ ২৮ মে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরুর ২৪ ঘন্টা পূর্বেই নির্বাচনী সহিংসতায় সারা দেশে ৪ জন লোক নিহত হয়েছে। আজ নির্বাচন চলাকালে কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায় বিরোধী দলের প্রার্থী কামাল উদ্দিন নিহত হয়েছে। জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৪ জন লোক নিহত হয়েছে। নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নে নির্বাচনী সংঘর্ষে ১জন নিহত হয়েছে। সারা দেশে মোট ৯ জন নিহত ও আহত হয়েছে শত শত লোক। নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জে ভোট শুরুর পূর্বেই সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা ব্যালট ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছে। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনজন আহত হয়েছে। কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার সাতানি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হওয়াসহ ৫০ জন আহত হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের সকল ভোটকেন্দ্র থেকে বিরোধী দলের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে এবং প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। নারায়নগঞ্জ জেরার আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মেরেছে। ফেনী জেলার দাগন ভূইয়ায় বিনা ভোটে ৫৫ জন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে।

কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলায় কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছে বিরোধী দলের প্রার্থীরা। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে বিরোধী দলের প্রার্থীরা ভোট ডাকাতির অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছে। এভাবে দেখা যায় যে, দেশের কোন ইউনিয়নেই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। সর্বত্রই সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা ভোট ডাকাতি করে সরকারী দলের প্রার্থীদের জিতিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের ভোট ডাকাতিতে সহযোগিতা করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাগণ, বর্তমান সরকার ক্ষমতার নেশায় নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অতীতে কোন নির্বাচনেই এ রকম সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি ও কারচুপি হয়নি।

সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে। এতে স্পষ্টভাবে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, বর্তমান সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা সম্ভব নয়।

যে সব ইউনিয়নের নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, জাল ভোট প্রদান ও ভোট কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেছে সে সব ইউনিয়নের নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”