১ জুলাই ২০১৬, শুক্রবার, ৩:৩৩

ঝিনাইদহে ২ শিবির নেতাকে গুলি করে হত্যার নিন্দাঃ নাটক সাজিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে

গত ৩০ জুন দিবাগত রাতে ঝিনাইদহে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২জন নেতাকে আটক অবস্থায় পুলিশের গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করার বর্বর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ ১ জুলাই প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকার পরিকল্পিতভাবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বেছে বেছে নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্যা করে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।

পুলিশ গত ১৬ জুন ঝিনাইদহ পলিটেকনিক কলেজের ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আনিসুর রহমানকে ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা শহীদ আল মাহমুদকে গত ১৩ জুন আটক করার পর থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করার কথা অস্বীকার করতে থাকে। কিন্তু গত ৩০ জুন দিবাগত রাত্রে পুলিশ তাদের নলডাংগা ইউনিয়নের তেতুল বাড়ীয়া গ্রামের উত্তরের মাঠে নিয়ে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে।

তাদের বর্বরভাবে হত্যা করার পর পুলিশ এখন ভিত্তিহীন মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে যে, তারা তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। নিহতদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবার-পরিজন শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। এ ঘটনার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাদা পোশাকে মানুষকে ঘর-বাড়ী, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখে এবং তাদের গ্রেফতার করার কথা অস্বীকার করতে থাকে। যাদের আটক করা হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের উপর দিনের পর দিন অমানসিকভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। জুলুম নির্যাতন চালিয়ে আটক ব্যক্তিদের নিকট থেকে মিথ্যা জবানবন্দী আদায়ে ব্যর্থ হয়ে সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের আইন, সংবিধান ও মৌলিক নাগরিক অধিকার পদদলিত করে তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধের নাটক সাজিয়ে তাদের গুলি করে হত্যা করছে। লক্ষনীয় যে, তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে পূর্ব থেকে আটক নির্দিষ্ট ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউই হতাহত হয় না। এইভাবে নাটক সাজিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে ঝিনাইদহে ইসলামী ছাত্র শিবিরের দু’জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে সরকার ঝিনাইদহ জেলাকে একটি মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। এভাবে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীসহ বিরোধীদলের লোকদের নির্মমভাবে হত্যা করে সরকার দেশকে এক গভীর রাজনৈতিক সংকটের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধের নামে রাজনৈতিক হত্যা বন্ধ করার লক্ষ্যে এ ধরনের হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

এ ধরনের অন্যায়, অমানবিক ও বেআইনী হত্যাকান্ডে জড়িত খুনীদের আজ হোক কাল হোক আইনের আওতায় যথোপযুক্ত শাস্তি ভোগ করতেই হবে।

পুলিশের গুলিতে নিহত আনিসুর রহমান ও শহীদ আল মাহমুদের শাহাদাত কবুল করার জন্য আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে দোয়া করছি, আল্লাহ তাদের এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।”