১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার, ১০:৫৯

যশোর পূর্ব সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের বার্ষিক সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত

একমাত্র আল্লাহর আইন দ্বারাই আল্লাহর জমিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার যশোর পূর্ব সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের বার্ষিক সদস্য (রুকন) সম্মেলন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আমীর মাস্টার মোঃ নূরুন্নবীর সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর সিদ্দিকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। বিশেষ মেহমান হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক জনাব মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, অধ্যাপক মুনিরুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রধান অতিথি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “মানবরচিত কোনো মতবাদই দুনিয়াতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। একমাত্র ইনসাফ ও ভারসাম্যপূর্ণ আল্লাহর আইন দ্বারাই আল্লাহর জমিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। আর এজন্য প্রয়োজন আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন। জামায়াতে ইসলামী প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও আমানতদার লোক হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং অনেকখালি সফলও হয়েছে। তার জ্বলন্ত প্রমাণ সাবেক দুই মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও জনাব আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, যারা অত্যন্ত সততা, যোগ্যতা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশে নজির স্থাপন করে গিয়েছেন (আল্লাহ তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন)। জামায়াতের তৈরি করা দক্ষ জনশক্তি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সেক্টরে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। জামায়াত হচ্ছে নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শ মানুষ গড়ার কারখানা। দুনিয়া বাদ দিয়ে আখিরাতে সফল হওয়া সম্ভব নয়। জামায়াতের সকল প্রোগ্রাম দুনিয়া ও আখিরাতমুখী। দুনিয়া চাষ করেই আমাদেরকে আখিরাতের সফলতা অর্জন করতে হবে। আমি দেশবাসীকে দুনিয়ায় কল্যাণ এবং আখিরাতে মুক্তি পেতে জামায়াতের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরও বলেন, ডামি সরকার নানা কূট-কৌশলে আবারো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। ডামি সরকারকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। গণতান্ত্রিক বিশ্ব এখন পর্যন্ত ডামি নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি। ক্ষমতালোভী সরকার নির্লজ্জভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। তারা জনগণের ভোটাধিকারসহ সকল মানবাধিকার কেড়ে নিয়েছে। দেশের অর্থনীতি পঙ্গু করে দিয়েছে। বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচারপতিরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। দেশে চলছে এক ব্যক্তির ফ্যাসিবাদ। ফ্যাসিস্ট সরকারের কুশাসনে দেশের জনগণ অতীষ্ঠ। মানুষকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। জেল-জুলুম ও হামলা-মামলা দিয়ে মানুষের কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে। সরকারের জুলুম-নির্যাতনের সকল মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে জালিম সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে এবং সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

বিশেষ অতিথি জনাব মোবারক হোসাইন বলেন, যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ দ্বীনের দাওয়াত দিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত সমাজব্যবস্থার তীব্র বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু কোনো বাধাই তাঁদেরকে দ্বীনের দাওয়াত থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি। আমাদেরকেও সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দ্বীনের দাওয়াত চালিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদেরকে জান ও মালের কুরবানি পেশ করতে হবে। নিজেদের ঘরকে ইসলামী আন্দোলনের ঊর্বর ক্ষেত্রে পরিণত করতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মাীয়-স্বজনকে ইসলামী আন্দোলনে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। আল্লাহই আমাদের একমাত্র রব। তিনিই আমাদের একমাত্র পালনকর্তা, হুকুমদাতা, বিধানদাতা, রিজিকদাতা। এই কথাগুলো বিশ্বাস করার সাথে সাথে তা বাস্তবায়নে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।