৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, ১১:০৫

গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের বার্ষিক সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত

জ্ঞান অর্জন ও যোগ্যতা অর্জন করে দেশ পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে

-মাওলানা আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে ০৯ ফেব্রুয়ারি জুমাবার ভার্চুয়ালি বার্ষিক সদস্য (রুকন) সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও গাইবান্ধা জেলা আমীর জনাব আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা জহুরুল হক সরকারের পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ.ন.ম শাামসুল ইসলাম, বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, গাইবান্ধা জেলার সাবেক আমীর ডা. আব্দুর রহিম সরকার ও কুড়িগ্রাম জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকী প্রমূখ।

প্রধান মেহমান মাওলানা আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, “আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য নবী-রাসূলগণ যুগে যুগে হেদায়েতের আলো পৌঁছে দিয়েছিলেন। একই আন্দোলন করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমরা শপথের মাধ্যমে নিজেদের জান ও মাল কুরবানি করতে প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা দ্বীন কায়েমকে জীবনোদ্দেশ্য বানিয়েছি। রুকনিয়াতের শপথের আলোকে জীবন গঠন করতে হবে। আমাদের দেশ পরিচালনার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। রাসূল (সা) আমাদের জ্ঞান ও হিকমত শিক্ষা দিয়েছেন। অল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য জ্ঞানগত যোগ্যতা অর্জনের বিকল্প নাই। কুরআন-হাদিস নিয়মিত অধ্যয়ন করতে হবে ও বুঝে পড়তে হবে। কুরআন-হাদিসের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মুখস্ত করতে হবে। ইসলামি সাহিত্য অধ্যয়ন করতে হবে।

প্রধান মেহমান আরও বলেন, বর্তমান যুগের বিষয়গুলো ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে জানতে হবে। সমকালীন অর্থনীতি ও রাজনীতি অবশ্যই জানতে হবে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও দক্ষ এবং সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে। ভারসাম্যপূর্ণ মেজাজের অধিকারী হতে হবে। দায়িত্বশীলের ব্যবহার হবে প্রীতি ও ঔদার্যপূর্ণ। শত্রুকেও কাছে টানার যোগ্যতা থাকতে হবে। অশ্লীল ও অশোভন কথা পরিহার করতে হবে। আমাদেরকে বিদ্রুপ ও গীবত পরিহার করতে হবে। আমরা রিয়াকারী ও অহংকারী হবো না। আমাদেরকে উত্তম দাঈ হতে হবে। পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে মানুষকে দ্বীন বুঝাতে হবে। সংগঠন পরিচালনার জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। কর্মবন্টন সঠিকভাবে করে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হবে। গণভিত্তি রচনায় ভূমিকা পালন করতে হবে। সামাজিক প্রতিষ্ঠান তৈরী করতে হবে। সামাজিক অনুষ্ঠানে শামিল হতে হবে। যুব সমাজের কর্মসংস্থান তৈরীর ব্যবস্থা করতে হবে। এতিমের পাশে দাঁড়াতে হবে। সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে হবে। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। রাসূল (সা) ও তাঁর সাহাবীদের অনুসারী হতে হবে।

আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য একাগ্র চিত্তে ফরজ আদায়ের পাশাপাশি তাহাজ্জুদের নামাজও আদায় করতে হবে। নফল রোযা, সার্বক্ষণিক দোয়া ও যিকির করতে হবে। দুনিয়া একটি সাময়িক জায়গা। আমাদের আসল গন্তব্য আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হবে। সময়ের অপচয় যেনো না হয় সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রত্যেক জনশক্তিকে পরিশ্রম প্রিয় হতে হবে। পরিকল্পিত জীবন-যাপন করতে হবে। যার উপর যে দায়িত্ব আসবে, তাকে সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। দায়িত্ব পালনে ভারসাম্য না থাকলে কাজ এক পেশে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শক্তিশালী ও নির্ভীক পরিবার গঠন করতে হবে। ধৈর্যের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। সর্বোপরি জীবনের কুরবানির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”

বিশেষ মেহমানের বক্তব্যে মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, “বার্ষিক পাঠ্যসূচির আলোকে আমাদের পরিকল্পিত জীবন গঠন করগে হবে। বর্তমান ডামি সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে আপনারা সকলেই অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে।”

বিশেষ মেহমান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেন, “আমাদেরকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। জীবনকে গতিশীল করতে হবে।”