৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, রবিবার, ১০:৪৫

উত্তরা পশ্চিম জোনের ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলন অনুষ্ঠিত

জালেম অবশ্যই পদানত হবে এবং মজলুম বিজয়ী হবে ইনশাআল্লাহ

-উপাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুর রব

সরকারের জুলুম-নির্যাতনে জামায়াতের অগ্রযাত্রা বন্ধ হবে না। বরং যতদিন বাংলাদেশ থাকবে এবং এই জনপদে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না হবে ততদিন ইসলামী আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উত্তরা পশ্চিম জোন আয়োজিত এক ভার্চুয়াল ইউনিট সভাপতি ও সেক্রেটারি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য উপাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুর রব এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ও জোন পরিচালক ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর জনাব আব্দুর রহমান মূসা।

জনাব আব্দুর রব বলেন, “ইউনিট সংগঠনই হচ্ছে ইসলামী আন্দোলনের ভিত্তিমূল। মূলত, ইউনিট সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত করা গেলেই মূল আন্দোলন গতিশীল হবে। তাই আমাদের প্রতিটি ইউনিটই হতে হবে মানসম্পন্ন ও ইসলামী আন্দোলনের প্রেরণার বাতিঘর। পবিত্র কালামে হাকীমে মুমিনদেরকে চাষী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এই জমিন হচ্ছে চাষের উপযুক্ত ক্ষেত্র। তাই এই জমিনকে ইসলামী আন্দোলনের অনুকূলে যথাযথভাবে চাষ করে পত্র-পল্লবে সুশোভিত করতে পারলেই আন্দোলনের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। বরং বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে। এজন্য প্রয়োজন ব্যাপক গণসম্পৃক্ততা ও ব্যাপক দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণ। ইউনিটিভূক্ত এলকায় কেউ যাতে দাওয়াতের বাইরে না থাকে সে জন্য ইউনিট দায়িত্বশীলদের যথাযথ ভূমিকা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।” তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ইউনিট সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ সকল স্তরের জনশক্তিকে ময়দানে সর্বোচ্চ ত্যাগের নজরানা পেশ করার আহবান জানান।

তিনি বলেন, “আল্লাহ আমাদেরকে খলিফা বা প্রতিনিধি হিসাবে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। মূলত, আমরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের নিমিত্ত্বে দুনিয়ায় এসেছি। আর জামায়াতে ইসলামী সে দায়িত্ব পালনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। মানুষকে দ্বীনের পথে আহবান করছে। তাই শ্রেণি বিশেষ জামায়াতের সাফল্যে ঈর্শাকাতর হয়ে জামায়াতকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বিরুদ্ধবাদীদের একথা মনে রাখা দরকার, এদেশে জামায়াতের শেকড় অনেক গভীরে। আমাদের সম্পর্ক এদেশের আপামর জনগণের সাথে। তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে ধৈর্য্য ও সাহসিকতার সাথে সম্মূখ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। জালেম অবশ্যই পদানত হবে এবং মজলুম বিজয়ী হবে ইনশাআল্লাহ।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনাব আব্দুর রহমান মূসা বলেন, “ইসলামী আন্দোলনের ওপর জুলুম-নির্যাতন নতুন কিছু নয়। বরং ইতিহাসের ধারাবাহিকতা মাত্র। তাই জালিমের সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা ও জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনকে বেগবান করতে ইউনিট দায়িত্বশীলদের অকূতোভয় ও আপোষহীন ভূমিকা পালন করতে হবে।” তিনি অগণতান্ত্রিক সরকারের পতনের লক্ষ্যে সকলকে দুর্বার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ড. মু. রেজাউল করিম বলেন, “এদেশ কোন বিশেষ গোষ্ঠী বা শ্রেণির নয়। জনগণ কাউকে এই দেশ ইজারা দেয়নি। তাই সাময়িক সঙ্কটে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের হতাশ হলে চলবে না। স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসীবাদী শক্তির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে।” তিনি অগণতান্ত্রিক শক্তির বিপক্ষে জনমত গঠনে ইউনিট দায়িত্বশীল গণসম্পৃক্ততা বাড়ানোর আহবান জানান।

সম্মেলনে দারসুল কুরআন পেশ করেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের উলামা বিভাগের সভাপতি ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান। সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জোনের সহকারি অঞ্চল পরিচালক মাহবুবুল আলম, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মাজহারুল ইসলাম, মতিউর রহমান ও মাহফুজুর রহমান প্রমূখ।