৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার, ১০:৩৯

চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত

শিক্ষার্থীদের নাস্তিকতাবাদ শিক্ষা দিয়ে মেধা ও নৈতিকতাহীন জাতি তৈরি করার অপকৌশল গ্রহণ করেছে সরকার

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে চরম অপকৌশল শুরু করেছে সরকার। তারা এই দেশের বহু দিনের ইসলামী ইতিহাস ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করে পাঠ্যপুস্তকে হিন্দুত্ববাদী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে চায়। এই দেশের মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের নাস্তিকতাবাদ শিক্ষা দিয়ে একটি মেধা ও নৈতিকতাহীন জাতি তৈরি করার অপকৌশল গ্রহণ করেছে। তাদের এই অপকৌশল এই দেশের মাটিতে সফল হতে দেওয়া যাবে না।”

২ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নবনির্বাচিত আমীর মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ-এর সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা'ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচালক উপাধ্যক্ষ আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, সহকারী সেক্রেটারি (নবনির্বাচিত) কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, সহকারী সেক্রেটারি এফ এম ইউনুছ, সহকারী সেক্রেটারি মোঃ মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালীসহ মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশ একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার জনগণের সরকার নয়। তারা নিজেদেরকে জনগণের সরকার বললেও প্রকৃতপক্ষে এই দেশের জনগণ তাদেরকে সরকার হিসেবে চায় না। তারা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা জনগণের বাক-স্বাধীনতা হরণ করে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে। আজ দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার বলতে কোন কিছু নেই। মৌলিক অধিকার না পেয়ে আজ বহু মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা আজ ভাতের অধিকার, চিকিৎসার অধিকার ও তাদের বাক-স্বাধীনতা ফিরে পেতে চায়। গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়। জনগণের এই অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বর্তমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম মহানগরীকে অতীতের ন্যায় আগামী দিনের সকল আন্দোলন সংগ্রামে প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে।“

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মু. তাহের বলেন, “আমরা যারা সমাজ পরিবর্তনের জন্য কাজ করছি তাদেরকে প্রথমে কুরআন-হাদীসের বাস্তব অনুসারী হতে হবে। আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার ভয় থাকতে হবে। আল্লাহ সকলকে তাকওয়ার সাথে আরও অধিকতর সম্পৃক্ত থাকার তাওফিক দান করুন।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম বলেন, “সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজবুত ঘাঁটি তৈরি করতে হবে। চট্টগ্রাম মহানগরী খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মহানগরী। যেটাকে বা'বুল ইসলাম বলা হয়ে থাকে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, “বাংলাদেশ দ্রুত অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। দায়িত্বশীলদের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। মনের কামনা বাসনাকে নিয়ন্ত্রণ করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য নিজেকে সদাসর্বদা প্রস্তুত রাখতে হবে। কেন্দ্রের যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “যেকোনো গতিশীল আন্দোলনের জন্য নেতৃত্বের পরিবর্তন এবং ধারাবাহিকতা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বাংলাদেশ জামায়াতে বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজে একটি গতিশীল, সুসংহত গণমুখী পরিপূর্ণ একটি সহীহ্ ইসলামী আন্দোলন। নেতৃত্বকে যোগ্যতার সাথে ভূমিকা পালন করতে হবে।”

মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “চট্টগ্রামের এই জমিন ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য একটি উর্বর ময়দান। অসংখ্য সম্ভবনাময় প্রতিভা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চট্টগ্রামের আনাচে কানাচে। আমরা যদি নিজেদের সকল যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে নিজেদের কাজকে বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে চট্টগ্রাম মহানগরী বর্তমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখকে সক্ষম হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর নবনির্বাচিত আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী সকলের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, “গত ৭ জানুয়ারি শতকরা ৯৩ শতাংশ মানুষ জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের উপর আস্থা রেখেছে। সেই আস্থা রক্ষা করে জালেম, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, ইসলামের দুষমনদেরকে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক কর্মসূচি পালন করে তাদের উৎখাতের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।”

উল্লেখ্য মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ খায়রুল বাশার কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য নির্বাচিত হলে সভায় তাকে শপথবাক্য পাঠ করান ভারপ্রাপ্ত আমিরে জামায়াত অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।