২৬ জানুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, ১০:৪৫

ঢাকা জেলা দক্ষিণ জামায়াতের শিক্ষাশিবির অনুষ্ঠিত

সকলকে কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন গড়তে হবে

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ”দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলমান অন্দোলনকে বেগবান ও গতিশীল করার জন্য প্রত্যেক কর্মীকে শপথ গ্রহণ, নেতৃত্বের গুণাবলী সৃষ্টি ও প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদেরকে যোগ্যতর হিসাবে গড়ে ততুলতে হবে “

২৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা দক্ষিণ আয়োজিত ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জনশক্তি, রুকনপ্রার্থী ও অগ্রসরকর্মীদের এক ভার্চুয়াল শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন । কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা আমীর মাওলানা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি এ বি এম কামাল হোসাইনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার, জেলা নায়েবে আমীর শাহিনুর ইসলামসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মানুষের দুনিয়ার জিন্দিগী খুবই ক্ষণস্থায়ী। এক অনিবার্য বাস্তবতায় একদিন আমাদেরকে পরপারে পাড়ি দিতে হবে। মূলত, দুনিয়া হচ্ছে আখেরাতের শষ্যক্ষেত্র। তাই আমাদেরকে আখেরাতের পাথেয় ও পুঁজি দুনিয়াতেই সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য আমাদেরকে বেশি বেশি নেক আমল করা দরকার। মূলত, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে দুনিয়াতে খলিফা বা প্রতিনিধি হিসাবে প্রেরণ করেছেন। প্রতিনিধির কাজ হলো মালিকের আদেশ-নিষেধ যথাযথভাবে মান্য করা। আর আমাদের দায়িত্বই হলো মানুষকে আল্লাহ তা’য়ালার নিরঙ্কুশ গোলামী করার আহবান এবং সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা। নিজেদের ব্যক্তিগত আমলকে সর্বাঙ্গসুন্দর ও মান নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রত্যেক কর্মীকে রিপোর্ট রেখে দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে বাইয়াত গ্রহণ করা দরকার। যাতে আমরা নিজেদেরকে পরিপূর্ণ মুমিন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। তিনি একটি সফল বিপ্লবের জন্য সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

তিনি আরো বলেন, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। মানবজীবনের এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান ইসলামে দেওয়া হয়নি। তাই আল্লাহর জমীনে আল্লাহর রাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ময়দানে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের গাইড বুক হচ্ছে পবিত্র কালামে হাকীম। তাই আমাদের প্রত্যেককে পবিত্র কুরআনের বিধান অনুযায়ি নিজেদের জীবনকে সাজাতে হবে। এজন্য আমাদের প্রত্যেককে প্রতিদিন বেশি বেশি কুরআন, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করা দরকার। একই সাতে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে প্রতিটি ঘরে ঘরে। তাহলেই ইসলামের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠছে। তিনি জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে সকলের প্রতি আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী হচ্ছে মানুষ গড়ার কারখানা। রুকনরা হচ্ছেন সংগঠনের মূল ভিত্তি। তাই আত্মশুদ্ধি ও নিজেদেরকে ইসলামী বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করতে সকলকে বাইয়াতের আওতায় আসতে হবে। মূলত, বাইয়াত গ্রহণের মাধ্যমে জান্নাতী জিন্দেগী লাভ করা সম্ভব। তিনি রাজনৈতিক সঙ্কটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, দেশ ও জাতি এক গভীর সঙ্কটের মুখে পড়েছে। সরকার দেশকে একদলীয় বাকশালী রাষ্ট্রে পরিণত করছে। তাই এ অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে হলে সাবেক ছাত্র আন্দোলনের জনশক্তিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। জাতি গঠনের আগে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। তাহলেই দেশকে একটি ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব।

মাওলানা আব্দুল জব্বার বলেন, আমাদেরকে পরিপূর্ণ মুসলমান হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। ইবাদাত করতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য। কারণ, আমরা প্রত্যেকেই আল্লাহর পথের সৈনিক। আর আল্লাহর তা’য়ালার সন্তষ্টির মধ্যেই রয়েছে বিশ্বমানবতার ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি। এটিই হচ্ছে মুমিনের প্রকৃত সাফল্য। তিনি দেশে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ইসলামী আন্দোলনে সাবেক বলে কিছু নেই বা আন্দোলন থেকে অবসরও নেওয়া যায় না। তাই ইসলামী আন্দোলনের ভাইদেরকে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ময়দানে সাহসী ভুমিকা পালন করতে হবে। প্রত্যেক কর্মীকে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দ্বীনি আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে হবে। তাহলে আওয়ামী জাহেলিয়াত থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করা সম্ভব।